শেয়ারবাজার

পুঁজিবাজারে সুবাতাসের আশা

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত, সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির ইতিবাচক ধারা, ব্যাংকের সুদের হার কম থাকা এবং ডিসেম্বরের ক্লোজিংয়ের চাপটা শেষ ও বিনিয়োগসীমা শিথিল হওয়ায় বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের সুবাতাসের আশা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

তারা মনে করছেন, সবমিলিয়ে দেশে পুঁজিবাজারের জন্য একটি আদর্শ অবস্থা বিরাজ করছে। এ কারণে মঙ্গলবার ‘ঘুরে দাঁড়িয়েছে’ পুঁজিবাজার। আর এ ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকবে।

নতুন বছরের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়; বাড়ে সূচক। অন্য বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) বাড়ে লেনদেন ও সূচক।

সপ্তাহের চতুর্থ দিনও দেশের দুই পুঁজিবাজারেই সূচক এবং লেনদেন বেড়েছে।

ডিএসইর সাবেক সভাপতি শাকিল রিজভী মনে করছেন, গতবছর কোম্পানিগুলোর ভালো মুনাফা হওয়া, নতুন বছরে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা শিথিল হওয়া ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার ইঙ্গিতে পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে এবং নতুন কোনো খারাপ খবর না আসলে তা অব্যাহত থাকতে পারে।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দুই রাজনৈতিক দল একদিনে সভা করল, কোনো গণ্ডগোল হয়নি- এটাকে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার একটি সংকেত হিসেবে নিয়েছে বিনিয়োগকারীরা ।”

৫ জানুয়ারি মঙ্গলবার দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউ সংলগ্ন সড়কে সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ; আর নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করে বিএনপি। এই দুই সমাবেশ ঘিরে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

কোম্পানিগুলোর ভালো মুনাফা করার প্রসঙ্গ তুলে শাকিল রিজভী বলেন, “কোম্পানিগুলো ভালো মুনাফা করেছে, ভালো ডিভিডেন্ড দিয়েছে, পুঁজিবাজারে কোম্পানির শেয়ারের দাম কম আছে, আর কোনো খারাপ খবর না আসলে পুঁজিবাজার ভালো করার কথা।”

ব্যাংকগুলোর পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ক্ষমতা বাড়ার কারণেও লেনদেন এবং সূচক বাড়ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

দেশের পুঁজিবাজারে ব্যাংকিং খাতকে সবচেয়ে বড় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ধরা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, চলতি বছরের শুরু থেকে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগসীমা হিসাবের ক্ষেত্রে সহযোগী কোম্পানির (মার্চেন্ট ব্যাংক/ব্রোকারেজ হাউজ) মূলধন আর ধরা হবে না।

এ সিদ্ধান্তের ফলে বিনিয়োগসীমার ভেতরে থেকেই ব্যাংকিং খাত থেকে পুঁজিবাজারে নতুন করে বিনিয়োগ আসার পথ তৈরি হয়েছে।

ফিনিক্স সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কাদির চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ডিসেম্বরের ক্লোজিংয়ের চাপটা শেষ হয়েছে; এটাও বাজারের জন্য ইতিবাচক।”

সাধারণত ডিসেম্বরের শেষ দিকে ব্যাংকগুলোর দিক থেকে শেয়ার বিক্রির চাপ থাকে। কারণ বছর শেষের নিরীক্ষিত প্রতিবেদন তৈরি করতে যেসব শেয়ারে ব্যাংকের মুনাফা আছে সেসব শেয়ার বিক্রি করে দেয়। এজন্য শেয়ারের বিক্রি বাড়লেও দাম কমে যায়।

পুঁজিবাজরের পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মিজানুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ইতিবাচক, ব্যাংকের সুদ হার কম- সবমিলিয়ে পুঁজিবাজারের জন্য একটি আদর্শ অবস্থা আছে বর্তমানে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button