পুকুর ভরাট, খাল ভরাট বা নদী ভরাট থেকে সকলকে বিরত থাকতে হবে : প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা বলেছে, বাংলাদেশের ৮৭ শতাংশ মানুষ সুপেয় পানির আওতায় এসেছে। শতভাগ মানুষ যাতে সুপেয় পানি পায় সে লক্ষ্যে কাজ চলছে।
“… বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি কীভাবে আরো বেশি করে ধরে রাখা যায়, তার পরিকল্পনা নিতে হবে।”
প্রধানমন্ত্রী বলেছে, “মিষ্টি পানির অভাব রয়েছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। কিন্তু আমাদের সৌভাগ্য যে, বাংলাদেশে সেই সমস্যাটা নাই। আমরা নদীমাতৃক দেশ, পানির কিন্তু অভাব নেই।”
তারপরও পরিবেশ ও প্রকৃতিকে রক্ষা করে পানির সুব্যবস্থা করার লক্ষ্য নিয়েই সরকার এগোচ্ছে বলে জানায় তিনি।
শেখ হাসিনা বলেছে, দিনে দিনে পানির জায়গাগুলো সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে। নগরায়ন ও আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে সঙ্গে প্রকৃতির ক্ষতির বিষয়টা বিবেচনা করতে হবে।
“আমাদের দেশের এতগুলি নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর- সেগুলি কিন্তু সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। কারণ উন্নয়নের নামে আমরা দেখি সবার আগে পুকুর ভরাট, খাল ভরাট বা নদী ভরাট- এই কাজগুলি থেকে সকলকে বিরত থাকতে হবে।”
বাংলাদেশে প্রায় ৭০০ নদী থাকার তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেছে, “সারা বাংলাদেশে এত নদী। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক যে এ নদীগুলির ধারণক্ষমতা কমে গেছে। নদীর তলদেশগুলি আস্তে আস্তে উঁচু হয়ে যাচ্ছে।
“আমি সবসময় মনে করি, ড্রেজিং করে, নাব্যতা বাড়িয়ে, বর্ষাকালের পানি যতোটা বেশি আমরা সংরক্ষণ করতে পারবো তত বেশি আমাদের দেশের জন্য উপকার হবে।”
তার সরকারের সময় খননের মাধ্যমে নদ-নদীর গতিপথ ও নাব্যতা পুনরুদ্ধার করাসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা জানায়, ৮২৫টি প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রায় ৬৪ লাখ হেক্টর এলাকা বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ সুবিধার আওতায় আনা হয়েছে। এর ফলে বছর ১ কোটি মেট্রিক টন বেশি খাদ্য শস্য উৎপাদিত হচ্ছে। সারাদেশে নদী তীরবর্তী একহাজার ৩০ বর্গকিলোমিটার ভূমি পুনরুদ্ধার হয়েছে।
আন্তঃদেশীয় নদীর পানি ব্যবস্থাপনার প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেছে, “ভারতের সাথে একটা সমস্যা ছিল। ৫৪টা নদী ভারত থেকে এসেছে। এই নদীগুলি নিয়ে ভারতের সঙ্গে যথেষ্ঠ আলোচনা চলছে।”
প্রকৃতির সাথে মিলিয়ে ফসল উৎপাদন ও খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছে, “প্রকৃতির সাথে বসবাস করতে হবে। প্রতিনিয়ত নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। তার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।”
অনুষ্ঠানে পানি সম্পদ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম ও ভারপ্রাপ্ত সচিব কবির বিন আনোয়ার বক্তব্য দেয়।