বগুড়ায় কাউনের বাম্পার ফলন
বগুড়ার সারিয়াকান্দি ও সোনাতলায় চলতি মৌসুমে কাউনের বাম্পার ফলন হয়েছে। কাউনের দাম ভাল হওয়ায় চাষিরা লাভের মুখ দেখছে। উৎপাদিত কাউনের ক্রয়-বিক্রয়কে কেন্দ্র করে উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের আনাগোনায় সরগরম হয়ে উঠেছে। কাউন থেকে তৈরী হয় পায়েশ, পোলাও, ভুনা খিচুড়ি, মলা ও বিস্কুটসহ অনেক মজাদার খাবার। বেকারিগুলোতে কাউনের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানিয়েছে, জেলার দুই উপজেলায় কাউন চাষ হয়ে থাকে। খরচ কম হওয়ায় এ অঞ্চলের চাষীরা কাউন চাষে আগ্রহী হচ্ছে। ১৬৩২ হেক্টর জমিতে কাউন চাষ হয়ে থাকে। এর মধ্যে সোনাতলায় মাত্র ৩২ হেক্টর এবং বাকী ১৬ শ হেক্টর জমি সারিয়াকান্দির চরাঞ্চল।
সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, সারিয়াকান্দিতে গত বছর ১ হাজার ৫৮০ হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও এবছর তা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বছর ১ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে কাউনের চাষ হয়েছে। অগ্রহায়ন থেকে মাঘ মাস পর্যন্ত বীজ বপন করা হয় এবং বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ মাসে কাউন কাটা ও মাড়াই করা হয়। চরাঞ্চলের উর্বর পলি জমিতে কাউনের বীজ বপনের পর থেকেই গাছ বেড়ে উঠতে থাকে। বীজ বপন করার পর হতে কাউন কাটা-মাড়াই পর্যন্ত অনুকূল আবহাওয়া থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতি বিঘা জমি থেকে ৬/৭ মন কাউন উৎপন্ন হতো। এবার বাম্পার ফলন হওয়ায় বিঘা প্রতি ৮/১০ মন কাউন পাওয়া যাচ্ছে। উৎপাদিত কাউন চাষিরা ১২ শ’ থেকে ১৬শ’ টাকা মণ দরে বাজারে বিক্রি করছে। চরের কোন কোন কৃষক এককভাবে ৮/১০বিঘা পর্যন্ত জমিতে কাউনের চাষ করেন।
উপজেলার চালুয়াবাড়ী চরের কৃষক মালেক হোসেন, পান্তাপাড়া চরের বাছেদ মিয়া, বুদে প্রামানিক জানান, জমিতে চাষ, বীজ বপন নীরানি থেকে শুরু করে বিক্রয় পর্যন্ত এবার প্রতি বিঘা জমিতে ২ হাজার ৫ শ’ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহাদুজ্জামান বলেন, জমিতে বন্যার কারনে পলি ও কাউনের শীষে কোন রোগ-বালাই পোকা মাকড় না ধরায় বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলন বৃদ্ধির জন্য কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করা হয়। যমুনা ও বাঙালী নদীর চরাঞ্চলে বাম্পার ফলন হওয়ায় কাউন চাষীদের মুখে হাসি ফুটেছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বগুড়ার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদুর রহমান জানান, চরাঞ্চলের জমিগুলোতে অন্য কোন ফসল না হলেও কাউনের বাম্পার ফলন হয়ে থাকে। এ কারণে যমুনা নদীর চরাঞ্চলের চাষীরা এবার ১৬ শ’ হেক্টর জমিতে কাউন চাষ করেছে। খরচ কম হওয়ায় বিগত বছরের চেয়ে চাষের জমি বেড়েছে। এছাড়া জেলার সোনাতলা উপজেলার স্বল্প সংখ্যক জমিতে কাউনের চাষ হয়ে থাকে বলে তিনি জানান।