ইসলাম

বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালে মদ, জুয়া, হাউজি খেলা নিষিদ্ধ করেছিলেন- মাহবুব উল আলম হানিফ

Image result for আলেম ওলামা
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, অনেক সময় মানুষ দুর্নীতি করে, ক্ষমতায় থাকলে ছোটখাটো দুর্নীতি করে। কিন্তু তাই বলে একজন প্রধানমন্ত্রী এতিমের টাকা মেরে খাবেন!

আজ শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এক সমাবেশে আওয়ামী লীগের এই নেতা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামি পার্টি ‘গণতন্ত্র রক্ষা, সন্ত্রাস ও জঙ্গি দমনে আলেম-ওলামা’ শীর্ষক এই সমাবেশের আয়োজন করে।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দুর্নীতির মামলা প্রসঙ্গে হানিফ বলেন, যারা ধর্মের কথা বলে বিভ্রান্ত ছড়িয়ে ক্ষমতায় গিয়েছিল, তারা কিন্তু ইসলামের জন্য কাজ করেনি। দুর্নীতির জন্য খালেদা জিয়া আদালতের কাঠগড়ায়। তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি অনেক সময় মানুষ করে, ক্ষমতায় থাকলে অনেক ছোটখাটো দুর্নীতি করে। কিন্তু একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এতিমের টাকা মেরে খাবেন! আমরা যে এতিমকে বাঁচাতে আর্থিক সহায়তা দিই, সেই এতিমের টাকা মেরে আজকে খালেদা জিয়া ক্ষমতায়। এই মামলায় দোষী হলে শাস্তি ভোগ করতেই হবে। আইন সবার জন্য সমান। আইন অনুযায়ী বিচার হবেই। দোষী হলে শাস্তি পাবেন, নির্দোষ হলে খালাস পাবেন। আইন কারও জন্য আলাদা নয়।’

হানিফ বলেন, ইসলাম ধর্মের জন্য এই দেশে সবচেয়ে বেশি কাজ করেছে আওয়ামী লীগ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইসলাম ধর্ম রক্ষার জন্য সবচেয়ে বেশি কাজ করেছেন এবং এরপর তাঁর কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাজ করেছেন। ক্ষমতায় থাকার সময় ইসলামের জন্য আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালে মদ, জুয়া, হাউজি খেলা নিষিদ্ধ করেছিলেন। তবলিগের জন্য টঙ্গীতে জায়গা দিয়েছিলেন, কাকরাইলের মসজিদের জায়গা, ইসলামিক ফাউন্ডেশন করেছিলেন ১৯৭৪ সালে। এরপরে অনেকেই রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল, তারা আর কেউ কাজ করেনি। তারপরে কাজ করেছেন শেখ হাসিনা। তিনি সারা দেশে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অফিস করেছেন, কওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতি দিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে। এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচন কারও জন্য বাধাগ্রস্ত হবে না। কে নির্বাচনে আসবে বা আসবে না, তাদের ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ব্যাপার। এ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে আলোর পথে নিয়ে যেতে হবে।

২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে বিএনপি ৫ জানুয়ারি ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে। এদিকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দিনটি ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। বিএনপির পক্ষ থেকে চাওয়া ছিল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে সে অনুমতি পায়নি। তবে নিজেদের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হিসেবে দাবি করা ইসলামি রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামি পার্টিকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ৫ জানুয়ারি দিবসটি সাম্প্রতিক কালে বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিবস হিসেবে অধিষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারিতে যে জাতীয় নির্বাচন হয়, তা কেন্দ্র করে অনেক তর্ক-বিতর্ক, অনেক কথা বাংলাদেশে হয়েছে। এই নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি। যেকোনো রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক অধিকার আছে নির্বাচনে অংশ নেওয়া বা না নেওয়ার। তিনি বলেন, উচ্চ আদালতে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হয়েছিল। ফলে জামায়াত নির্বাচনে অংশ নেওয়ার মতো তাদের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছিল। যেহেতু জামায়াত অংশ নিতে পারবে না, সে কারণেই দশম জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি।

হানিফ বলেন, এ দেশে জামায়াত ইসলাম ও বিএনপি একই জায়গা থেকে সৃষ্টি। সেটা হচ্ছে পাকিস্তান। জামায়াত ইসলাম এখনো পাকিস্তানের নির্দেশেই পরিচালিত হয়ে আসছে। বিএনপি একইভাবে পাকিস্তানের দ্বারা পরিচালিত।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি না দেওয়া প্রসঙ্গে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ইউনাইটেড ইসলামি পার্টি এক মাস আগে এখানে সমাবেশ করার অনুমোদন নিয়ে রেখেছে, সেখানে আবার পাল্টা সমাবেশ করার জন্য চিঠি দিয়ে বিএনপি বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করেছিলেন।

সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ইসলামের জন্য, ওলামাদের জন্য বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ যে কাজ করেছে, অতীতে এই কাজ কেউ করেনি। তাই সামনে নির্বাচন, নির্বাচনের বছর। নির্বাচন আসলে বিএনপি–জামায়াত মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালায়। আপনাদের অনুরোধ জানাব, কারা ইসলামের জন্য কাজ করছে তা তুলে ধরবেন।

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামি পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মাওলানা মো. ইসমাইল হোসাইন। আওয়ামী লীগের সহসম্পাদক এম এ করিম, যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. সিরাজুল ইসলাম মোল্লা প্রমুখ বক্তব্য দেন।

Back to top button