অর্থ-বাণিজ্য

‘বৈদেশিক ঋণের নজরদারি প্রয়োজন

Image result for ঋণ
বক্তব্য রাখছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসানগত পাঁচ বছরে দেশে বেসরকারি খাতে স্বল্পমেয়াদি বৈদেশিক ঋণ ব্যাপকভাবে বেড়েছে। ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি খাতে এ ধরনের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬১৬ কোটি ডলার। যা আগামী দিনে বাংলাদেশের বৈদেশিক লেনদেনে ঝুঁকি তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ব্যাংকিং খাতের বিশেষজ্ঞরা। তারা জানান বিদেশ থেকে আনা এসব অর্থের অপব্যবহারও হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে বড় ধরনের সমস্যার মধ্যে পড়তে পারে দেশ। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে একটি নীতিমালার আওতায় এ ধরনের ঋণের নজরদারি করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) বাংলাদেশ ইনিস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) অডিটোরিয়ামে ‘প্রসপেক্টস অ্যান্ড চ্যালেঞ্জ অব শর্ট টার্ম ফরেন কারেন্সি ফিন্যান্সিং অব ব্যাংকস’ শীর্ষক কর্মশালায় এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধূরী।
বিআইবিএমের অধ্যাপক ড. শাহ মো. আহসান হাবীবের নেতৃত্বে ৬ সদস্যের একটি টিম গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেসরকারি খাতে ২০১২ সালে স্বল্পমেয়াদি বিদেশি ঋণের পরিমাণ ছিল সাড়ে ২৩ কোটি ডলার। ২০১৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৮ কোটি ডলারে। সর্বশেষ হিসেবে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬১৬ কোটি ডলার। বর্তমানে এ ধরনের ঋণের প্রবৃদ্ধির হার ৩১ শতাংশের বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান বলেন, ‘দেশের মধ্যে যখন উচ্চ সুদহার ছিল। তখন বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণ নেওয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। সেই সময়ে স্থানীয় ব্যাংকগুলোর সুদের হার ছিল ১৭ শতাংশ। এখন তা ১০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। বর্তমানে বিদেশি ঋণের সঙ্গে দেশীয় ব্যাংকগুলোর ঋণের সুদ হারের তেমন কোনও পার্থক্য নেই।’

তিনি বলেন, ‘দেশের তুলনায় বিদেশি ঋণের সুদহার তুলনামূলক সস্তা হলেও সীমাহীন ঋণের অনুমোদন দেওয়া হবে না। কেননা পূর্ব এশিয়ার একাধিক দেশ বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণ নিয়ে বিপাকে পড়েছে। এজন্য বিষয়টি নিয়ে ভাববার প্রয়োজন রয়েছে।’

বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধূরী বলেন, ‘স্বল্পমেয়াদি বৈদেশিক ঋণের ভালো দিকের পাশাপাশি বেশ কিছু ঝুঁকিও রয়েছে। অবসর ব্যাংকিংয়ের সোর্সেস অব ফান্ডের ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংককে সবসময় মনিটরিং করা উচিত। প্রত্যেকটি ব্যাংকের ফরেন কারেন্সির দায় বেড়ে যাচ্ছে। যদিও বর্তমান অবস্থান এখনও সংকট পর্যায়ে পৌঁছায়নি।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক ইয়াছিন আলি বলেন, ‘মালয়েশিয়া স্বল্পমেয়াদী বিদেশি ঋণ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।’

কর্মশালায় আরও বক্তব্য রাখেন বিআইবিএমের অনুষদ সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ বারিকুল্লাহ, ইসলামী ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাহবুব উল আলম, ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর আহমেদ শাহিন প্রমুখ।

Back to top button