স্বাস্থ্য

মদ্যপানে বাংলাদেশে মৃত্যুহার বাড়ছে

Image result for মদ

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে, বাংলাদেশে মদ সেবনের কারণে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়ে ২০১৬ সালেই মারা গেছে দু’হাজারেরও বেশি মানুষ।

এছাড়া ক্যান্সার ও মদ্যপানের পর ড্রাইভিংয়ের সময় দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে আরও অন্তত এক হাজার মানুষের।

সব মিলিয়ে ওই বছর মদ্যপান জনিত কারণে মৃত্যুর সংখ্যা তিন হাজারেরও বেশি।

সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির মদ বিক্রি ও সেবনের বিষয়ে আইনের কড়াকড়ি থাকলেও পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা নেই।

তবে ঢাকায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, অবৈধ মদ বিক্রি কিংবা সেবনের বিরুদ্ধে তারা তাদের সাধ্যমত ব্যবস্থা নিয়ে থাকেন।

বাংলাদেশে অবাধে মদ বিক্রি কিংবা সেবন সম্ভব?

কর্মকর্তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী দেশটিতে সরকারের অনুমোদিত কিছু ওয়্যার হাউজ, লাইসেন্স কৃত পানশালা ছাড়াও তারকা হোটেলগুলো থেকে মদ ক্রয় করে থাকেন অনেকে।

ওয়্যার হাউজগুলোত থেকে তারা বিদেশী মদ তুলনামূলক সস্তায় সংগ্রহ করেন। এর বাইরে দেশী মদও পাওয়া যায়।

এছাড়াও অঞ্চলভিত্তিক কিছু মদের নাম শোনা যায়, যার মধ্যে রয়েছে তাড়ি, বাংলা মদ, চু, দোচোয়ানি।

আর ঢাকা ও চট্টগ্রামের অনুমোদিত পানশালায় বিদেশী মদের সাথে দেশী কোম্পানির মদও পাওয়া যায়।

তবে প্রায়শই মদের নামে স্পিরিট সেবনে মৃত্যুর খবর আসে গণমাধ্যমে। বিশেষ করে চোলাই মদ সেবনেও অনেক মৃত্যু বা দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়।

মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলছেন, “মাঠ পর্যায়ে মাদক প্রতিরোধে পর্যাপ্ত জনবল আমাদের নেই। তাই পুলিশের ওপরই নির্ভর করতে হয়”।

প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পর্কে তথ্য

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য:

  • বিশ্বব্যাপী মদ সেবনের ক্ষতিকর প্রভাবে মারা যায় ত্রিশ লাখ মানুষ।
  • এর ক্ষতিকর প্রভাবে দুশো ধরনের রোগ ও ইনজুরিতে আক্রান্ত হয় মানুষ।
  • ২০ থেকে ৩৯ বছর বয়সী যারা মারা যায় তাদের মধ্যে সাড়ে ১৩ভাগই মদ্যপানজনিত কারণে মারা যায়।
  • মদ সেবনের প্রতিক্রিয়ায় মানসিক ও আচরণগত সমস্যা দেখা দেয় অনেকের মধ্যে।

বাংলাদেশ সম্পর্কে পাওয়া তথ্য

বাংলাদেশে ১৫ বছরের বেশি বয়সীদের শূন্য দশমিক আট শতাংশ মানুষ মদ পান করে। এর মধ্যে পুরুষের সংখ্যাই সিংহভাগ।

দেশটিতে মদ্যপানের কারণে যেসব রোগ বা সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি তার মধ্যে রয়েছে লিভার সিরোসিস ও ক্যান্সার।

যদিও বাংলাদেশে মদের বিষয়ে বেশ কড়াকড়ি আইন আছে।

বিয়ার, ওয়াইন, হুইস্কি কিংবা ভদকার মতো মদের ওপর উচ্চ হারে শুল্কের বিধানও আছে।

চাইলেই যেখানে সেখানে মদ বিক্রি করা যায়না এমনকি মদ সেবনেও বিধিনিষেধ আছে। তবে মনিটরিংয়ের জন্য কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেই।

কর্মকর্তারা বলছেন, দেশজুড়ে বিদেশী মদের ক্ষেত্রে কিছুটা কড়াকড়ি সম্ভব হলেও দেশীয় ভাবে বিভিন্ন জায়গায় তৈরি মদ প্রতিরোধে কিছুটা শিথিলতা রয়েছে।

যদিও এর কারণ সম্পর্কে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজী হননি।

আর যারা মদ সেবন করেন তাদের কারও কারও লাইসেন্স থাকলেও অনেকেরই মদ কেনার কোনো অনুমতি নেই।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর মাঝে মধ্য বিভিন্ন ক্লাব ও পানশালায় অভিযান চালিয়ে মদ বাজেয়াপ্ত করছে-এমন খবর মাঝে মধ্যেই প্রকাশিত হয় গণমাধ্যমে।

Back to top button