অর্থ-বাণিজ্য

সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে রেকর্ড, সীমা বেঁধে দিতে চায় বাংলাদেশ ব্যাংক

Image result for বাংলাদেশ ব্যাঙ্ক

সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙ্গেছে। বিদায়ী ২০১৬-১৭ অর্থবছর শেষে ৫২ হাজার ৩২৭ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭ হাজার ৩২৭ কোটি টাকা বেশি। ব্যাংকে আমানতের সুদ হার ৫ শতাংশের নিচে নেমে আসায় সঞ্চয়পত্র বিনিয়োগের দিকে ঝুঁকছে মানুষ। এর ফলে সরকারের ব্যয় বাড়বে এমন আশঙ্কা থেকে সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে সীমা বেঁধে দেওয়া হতে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে।

জাতীয় সঞ্চয়পত্র অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত (২০১৬-১৭) অর্থবছরের মে শেষে সঞ্চয়পত্রে নিট বিনিয়োগ এসেছিল ৪৬ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা। যেখানে তার আগের অর্থবছরের পুরো সময়ে নিট বিনিয়োগ ছিল ৩৩ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা।২০১৬-১৭ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে ১৯ হাজার ৬১০ কোটি টাকা গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে সরকার। পরে সংশোধিত বাজেটে তা বাড়িয়ে ৪৫ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, অচিরেই সঞ্চয়সুদ হার বিদ্যমান বাজার সুদহারের সঙ্গে সামঞ্জস্য করা হতে পারে।

দেশের ৫৭টি তফসিলি ব্যাংকের মধ্যে ২৫টির আমানতের সুদহার বর্তমানে ৫ শতাংশের নিচে। আমানতের সুদহার কমে যাওয়ায় উদ্বেগজনক হারে সঞ্চয়পত্র বিক্রি বাড়ছে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ।

তিনি চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, আমানতের সুদহার কমে যাওয়ায় মানুষ সঞ্চয়পত্রের দিকে ঝুঁকছেন। ফলে সরকারের ঋণ গ্রহণের অতীতের সব রেকর্ডকে অতিক্রম করেছে। তবে এটি সরকারের ব্যয় বাড়াবে। কারণ জনগণকে অতিরিক্ত সুদ দিয়ে সঞ্চয়পত্র কিনতে হচ্ছে।

খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, বিনিয়োগকারীরা ব্যাংকে আমানত না রেখে সঞ্চয়পত্র কিনছে। আবার ব্যাংকগুলোর ঋণ প্রবাহ বাড়ছে। এর ফলে ব্যাংকিং খাতে তারল্য সংকট দেখা দিতে পারে।

বিনিয়োগসঞ্চয়পত্র বিক্রির লাগাম টানা হতে পারে এমন ঈঙ্গিত দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরও।গত ২৬ জুলাই নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে গভর্নর বলেছিলেন, জাতীয় সঞ্চয় স্কীমের সঞ্চয়পত্রগুলোর বাজার সুদহারের সঙ্গে সংগতিহীন উচ্চ মুনাফা হার সরকারের জন্য অতিরিক্ত ব্যয়ভার সৃষ্টি করবে। তাই সঞ্চয়পত্রের সুদ হার একটি বিধিবদ্ধ ও যৌক্তিক হারের মধ্যে আনার প্রচেষ্টা চলছে।

সঞ্চয়পত্র মধ্যম আয়ের লোকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, সঞ্চয়পত্র বিক্রির ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সীমা বেঁধে দেওয়া যেতে পারে। অথবা আউটলেটগুলোতে ক্রেতার জাতীয় পরিচয়পত্রের সংযুক্তি থাকতে পারে। যাতে ১ জনে অধিক কিনছেন কি না তা সনাক্ত করা সম্ভব হয়।

বর্তমানে চার ধরণের সঞ্চয়পত্র রয়েছে। এসব সঞ্চয়পত্রে সর্বনিম্ন সাড়ে ৯ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ১১ শতাংশ সুদ দেওয়া হয়। অন্যদিকে ব্যাংকে আমানতে মেয়াদ ভেদে ৪ থেকে ৭ শতাংশ পর্যন্ত সুদ পাওয়া যায়।

Back to top button