ভ্রমণ

কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল

Image result for কক্সবাজার

টানা ৯দিনের ছুটিতে ভ্রমণ পিয়াসু পর্যটকদের বেড়ানো যেন শেষ হচ্ছে না। গতকাল শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হলেও এটি ছিল টানা ৯দিন ছুটির শেষ দিন। কালও বিকেলে কক্সাবজার সমুদ্র সৈকত ছিল নানা শ্রেণী, পেশা ও বয়সের পর্যটকে ভরপুর। অনেকেই বিস্তীর্ণ সৈকতের মুক্ত নির্মল বাতাসে ঘুরে বেড়ানো ছাড়াও বৈশাখের খরতাপ থেকে রেহাই পেতে সাগরের নুনা পানিতে গোসল করে যেন গরমের জ্বালা মিঠাচ্ছিল। দীর্ঘ ছুটিতে ব্যাপক পর্যটক আগমনে চাঙ্গা হয়েছে কক্সাবজারের অর্থনীতি। অফ সিজনের সংকট কেটেছে হোটেল মালিক ও পর্যটন ব্যবসায়ীদের।

পর্যটন শহর ছাড়াও কক্সবাজারের বিভিন্ন বিনোদন ষ্পট গুলোতে গতকাল পর্যন্ত দেখা গেছে পর্যটকদের পদচারণা। সাধারণত মার্চের মধ্যে পর্যটন মৌসুম শেষ হলেও এবার এপ্রিল মাসের শেষের দিকে এবং মে’র শুরুতে দীর্ঘ ছুটিটি হাত ছাড়া করেননি ভ্রমণ পিয়াসুরা। এই সুযোগটি অতীতে কোন সময় হয়নি। তাই শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও চাকরীজীবীদের জন্য এটি ছিল বেড়ানোর সুবর্ণ সুযোগ। পর্যটন সংশ্লিষ্টদের মতে এই দীর্ঘ ছুটিতে কক্সবাজার এসেছেন দুই লক্ষাধিক পর্যটক। এতে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারসহ সরগরম হয়ে উঠে অপূর্ব সুন্দর স্বপ্নীল দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ সড়ক, হিমছড়ি, ইনানী, টেকনাফের সেন্টমার্টিন, রামু-মহেশখালী ও কুতুবদিয়ার বিনোদন কেন্দ্রগুলো।

কক্সবাজারের হোটেল মোটেল জোনে খবর নিয়ে জানাগেছে, বিগত দীর্ঘ ছুটিতের তারাকা হোটেল থেকে শুরু করে সাধারণ কোন হোটেলেও রোম খালি ছিলনা। জানাগেছে, কেউ কেউ মাসাধিক কাল আগেই হোটেল বুক্ড করেছেন। কোন কোন হোটেলে নয়/দশ দিনের জন্য আবার কোন কোন হোটেলে ৫/৭ দিনের বুকিং এর কথা জানিয়েছেন অনেক হোটেল কর্তৃপক্ষ। সব মিলিয়ে এই ছুটিতে পর্যটন শহর কক্সবাজারের বিনোদন ষ্পট গুলোতে লক্ষাধিক পর্যটকের আগমন ঘটতে পারে বলে আশা করছিলেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু তাদের ধারণাকে পেছনে রেখে আশাতীতভাবে পর্যটক এসেছেন কক্সবাজারে।

এমনিতেই রোহিঙ্গাদের কারণে দেশী বিদেশী হাজার হাজার এনজিও কর্মীরা মাসের পর মাস বুকড করে রেখেছেন তারাকা হোটেল ও মাঝারী ধরণের হোটেল গুলোর অধিকাংশ কক্ষ। এর উপর দীর্ঘ ছুটিতে ব্যাপক পর্যকের সাথে ভিআইপিদের আগমনে হোটেল গুলোতে রোম সংকট দেখা দিয়েছিল কক্সবাজারে। অতীতে কোন সময় এরকম হয়নি বলেও জানান কয়েকটি হোটেলের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। বর্তমানে তিন সহ¯্রাধিক বিদেশী এনজিও কর্মী অবস্থান করছেন কক্সবাজারে।

দেখা গেছে, এই পর্যটকদের সামাল দেয়ার জন্য আন্তরিক ও সতর্ক দায়িত্ব পালন করেছেন, টুরিষ্ট পুলিশসহ কক্সবাজারের প্রশাসন। একইভাবে সেবা দিয়েছেন বিভিন্ন পর্যটন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ীরা। কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশের এডিশনাল এসপি রায়হান কাজেমী বলেন, কক্সবাজারের হোটেল মোটেল গুলোতে কোথাও জায়গা ছিলনা। এই ছুটিতে দু’লাখ পর্যটক আসতে পারে বলে তিনি আগেই বলেছেন। তিনি আরো বলেন, কক্সবাজার সৈকত, দরিয়া নগর, হিমছড়ি, ইনানী ও টেকনাফ সৈকতসহ সেন্টমার্টিনেও টুরিষ্ট পুলিশের সতর্ক অবস্থান ছিল। তবে এত লোকের আগমনেও তেমন কোন দূর্গটনা ঘটেনি বলে তিনি জানান। এদিকে টানা লম্বা ছুটিতে পর্যটক নির্ভর কক্সবাজারের ঝিমিয়ে পড়া ব্যবসা বাণিজ্যে ছিল চাঙ্গাভাব। সংশ্লিষ্টদের মতে বিগত লম্বা ছুটিতে কক্সবাজারের অর্থনীতিতে টার্ণওভার হয়েছে শত কোটি টাকারও বেশী টাকা। এতে করে অফ সিজনের দুঃচিন্তা কেটেছে পর্যটন ব্যবসায়ী ও হোটেল মালিকদের।

Back to top button