আন্তর্জাতিক

‘ব্যার্থ’ মিসাইল কিনতে যাচ্ছে ভারতীয় সেনাবাহিনী!

আন্তার্জাতিক ডেস্ক: ইসরাইলের রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিরক্ষা ফার্ম রাফায়েলের কাছ থেকে ২৪০টি স্পাইক ট্যাঙ্ক-বিধ্বংসী গাইডেড মিসাইল (এটিজিএম) এবং ১২টি লঞ্চার কিনতে যাচ্ছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। মজার ব্যপার হলো- সেনাবাহিনী যে স্পাইক মিসাইল সিস্টেম কিনতে যাচ্ছে, সেগুলো আগে পরীক্ষার সময় ব্যর্থ হয়েছে এবং সে কারণে চুক্তিটি একবার বাতিলও করা হয়েছিল।

সেনাবাহিনীর এই ক্রয়ের সিদ্ধান্তে এখন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভ্রু-কুঞ্চিত হয়েছে। ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রথম যে ৮০০০ স্পাইক এটিজিএম কেনার চুক্তি করেছিল, সেটি বাতিল হয়ে গিয়েছিল, কারণ পরীক্ষার সময় মিসাইলগুলো কিছু মাপকাঠিতে উৎরাতে পারেনি। দুই বছর কড়া দর কষাকষির পর, গত বছরের জানুয়ারিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় চুক্তিটি বাতিল করে। ঠিক এর এক সপ্তাহের মাথায় নয়াদিল্লী সফরে আসেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু।

২০০৬ সালে নিজেদের চাহিদার ঘাটতি পূরণের জন্য এবং পুরনো মিলান-২টি এবং কোনকুর্স মিসাইলগুলো বদলে ফেলার জন্য চতুর্থ প্রজন্মের এই ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী গাইডেড মিসাইল কেনার প্রক্রিয়া শুরু করে ভারতীয় সেনাবাহিনী।

কিন্তু এখন ‘জরুরি ক্রয়’ হিসেবে স্পাইক মিসাইল কিনতে যাচ্ছে সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর ভাইস চিফের যে আর্থিক ক্ষমতা রয়েছে, সেটিকে ব্যবহার করে এই ক্রয় প্রক্রিয়া এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা হচ্ছে। ২০১৮ সালের নভেম্বরে সরকার তিন বাহিনীর ভাইস চিফের আর্থিক ক্ষমতা বাড়িয়ে ১০০ কোটি রুপি থেকে ৫০০ কোটি রুপি করা হয়। এই ক্ষমতার অধীনে যে সব ক্রয় হবে, সেগুলোর জন্য ডিফেন্স অ্যাকুইজিশান কাউন্সিলের অনুমোদনের প্রয়োজন নেই। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বাধীন এই কাউন্সিলই বড় ধরনের প্রতিরক্ষা ক্রয়ের অনুমোদন দিয়ে থাকে।

আনুষ্ঠানিক একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, “হ্যাঁ, সেনাবাহিনী তাদের ঘাটতি পূরণের জন্য স্পাইক ট্যাঙ্ক-বিধ্বংসী গাইডেড মিসাইল কিনতে যাচ্ছে”। সূত্র উল্লেখ করেছে যে, বেশ কয়েক বছর ধরে সেনাবাহিনী তাদের ট্যাঙ্ক-বিধ্বংসী মিসাইলের চাহিদার কথা বলে আসছে। “এই চাহিদা এখনও রয়েছে এবং সময়ের সাথে সাথে এই ঘাটতিটা আরও বেশি অনুভূত হচ্ছে”।

তবে যে স্পাইক মিসাইল কেনার চুক্তি বাতিল করা হয়েছিল, কেন সেটা আবার কেনা হচ্ছে, এ ধরনের প্রশ্নের জবাবে সেনা সদরদপ্তর থেকে কোন মন্তব্য করা হয়নি।

২০১৪ সালে তৎকালিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী অরুন জেটলির সভাপতিত্বে ডিফেন্স অ্যাকুইজিশান কাউন্সিল ৮০০০ স্পাইক মিসাইল কেনার বিষয়টি অনুমোদন দিয়েছিল। একই সাথে ৩০০টি লঞ্চার এবং ইসরাইল থেকে ভারতে প্রযুক্তি হস্তান্তরের বিষয়টিও এ চুক্তির অংশ ছিল।

অভ্যন্তরীণ সূত্রগুলো দাবি করেছিল যে, মিসাইলে যে সেন্সর রয়েছে যেটা কার্যকর প্রমাণিত হয়নি এবং ভারতীয় মরুভূমিকে পরিচালিত পরীক্ষায় সেগুলো টার্গেটে আঘাত করতে পারেনি। এছাড়াও মিসাইলগুলো পোখরানে পরিচালিত পরীক্ষাতেও উৎরাতে পারেনি।

Back to top button