সামাজিক গণমাধ্যম

সামাজিক মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কোটা বাতিল বক্তব্যের কিছু প্রতিক্রিয়া

বাংলাদেশে বেশ কয়েকদিনের ছাত্র বিক্ষোভের মুখে সব ধরণের কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

তবে বলেছেন ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেবে তার সরকার।

ইতোমধ্যেই আন্দোলনকারী প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী গেজেট প্রকাশ পর্যন্ত তাদের আন্দোলন স্থগিত ঘোষণা করেছে।

যদিও আন্দোলনকারীদের দাবি ছিলো বিদ্যমান কোটা কমিয়ে দশ শতাংশে নিয়ে আসা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী একেবারেই বাতিলের ঘোষণা দিলে তার পক্ষে বিপক্ষে বিতর্ক জমে উঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

বিবিসি বাংলার ফেসবুক পাতা থেকে নেয়া তেমন কিছু মন্তব্য নিচে দেয়া হলো–

ফাইজা খান লিখেছেন একদল বলবেন কোটা বাতিল হোক, আর একদল বলবেন কোটা সংস্কার করা হোক,আর একদল বলবেন কোটা বাতিল হবে না **** এই মর্মে আমি বলতে চাই তাহলে প্রধানমন্ত্রীর এখন কি সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত ??? যদি বিষয় টা এমনই বহুমুখী হয় তাহলে সেটা বারবার আলোচনা করে একটা সমঝোতায় আসা উচিত ছিলো… !!!

রায়হান সি রানা: কোটা সম্পূর্ণ বাতিল করলে তা সংবিধানের ২৮(৪), ২৯(৩)(ক) অনুচ্ছেদের সাথে সাংঘর্ষিক হবে। ফলে সুপ্রিমকোর্ট এ রিটে বর্তমান কোটা ব্যবস্থা ফিরে আসবে। আমরা ১০% কোটা রাখার পক্ষে। পরেরদিনই হাইকোর্টে রিট হবে। হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দেবেন। এরপর আর আন্দোলন করার কিছু থাকবে না। আদালতের ওপর তো কথা বলা যায় না।

শফিকুর রহমান: ৮ আনা চাইতে ১৬ আনা দিচ্ছেন। এ যেন মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি। বিশাল খটকার গন্ধ পাচ্ছি।

সৈকত এ রহমান: মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কথায় কি পরিষ্কার হইতে পারছেন যে, কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হইলো!!! উনার পুরো বক্তব্য শুনে আমি এই মেসেজ পাইলাম না… উনি আন্দোলনকারীদের বদনাম করলেন এবং রাগ হয়ে বললেন সংস্কার কি তাহলে কোটাই থাকবেনা। যারা আন্দোলনের নামে ভিসির বাসায় আক্রমণ চালিয়েছে তাদেরকে ছাড়া হবেনা। অর্থাৎ তিনি হামলার জন্য আন্দোলনকারীদের দোষারোপ করলেন। এই উছিলা তুলে ছাত্রদেরকে হুমকি দিলেন। তিনি যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ভিসি সংহতি জানিয়েছেন সেইসব শিক্ষকদের কঠিন ভাষায় সমালোচনা করলেন!! নারীরা আন্দোলনে শরীক হওয়ায় বললেন, তাদের কোটাও বাতিল করে দিবো!

কোটা সম্পূর্ণ বাতিল করলে তা সংবিধানের ২৮(৪), ২৯(৩)(ক) অনুচ্ছেদের সাথে সাংঘর্ষিক হবে। ফলে সুপ্রিমকোর্ট এ রিটে বর্তমান কোটা ব্যবস্থা ফিরে আসবে। পরেরদিনই হাইকোর্টে রিট হবে। হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দেবেন। এরপর আর আন্দোলন করার কিছু থাকবে না। আদালতের ওপর তো কথা বলা যায় না।

সুতরাং আমরা কোটা সংস্কার চাই,কোটা বাতিল নয়। বিলোপ নয়,সংস্কার চাই! গুজব নয়,গেজেট চাই।

সাদ্দাম হোসেন: আমরা কোটা পদ্ধতি বাতিল হোক এটা চাইনি, চেয়েছি সংস্কার। যেখানে ৫৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০শতাংশের মধ্যে আনতে হবে। কোটা পদ্ধতি বাতিল ঘোষণা করে নতুন খেলা শুরু করলো সরকার। তাছাড়া কোটা পদ্ধতি বাতিল করার সিদ্ধান্ত সরাসরি সংবিধান পরিপন্থী, এবং এর ফলে প্রতিবন্ধীরা রাষ্ট্রের কাছে বঞ্চিত হয়ে থাকবে। তাই কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত বাতিল করে দেয়া হোক।

সোলায়মান মজুমদার: পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সরকার আর্থিক সহযোগিতা করতে পারে । কোটা দিয়ে নয় । যেমন সরকার তাদের লেখাপড়ার খরচ বহন করে,উচ্চ শিক্ষার সুযোগ করে দিয়ে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে পারে । তারাও যেন মেধার প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারে ।সংসদ থেকেও নারী কোটা বিলুপ্ত করতে হবে । কারণ সংরক্ষিত কোটার সদস্যরা সংসদের সম্মান নষ্ট করছে তারা দেখে দেখেও বাংলায় কথা বলতে পারেনা । নুন্যতম সংসদ সদস্যরা যেন মাষ্টার ডিগ্রি পাশ হয় ।

মো: সাহাদাত: : ভাল করে যদি ভাষণটা শুনেন, বুঝবেন উনি আন্দোলন কারীদের দোষারোপ করেছেন, .. পুলিশের গুলিতে শত শত আহত ছাত্রদের প্রতি বিন্দুমাত্র অনুশোচনা করেনি, 😰প্রযুক্তিগুলো নাকি ওনাদের সৃষ্টি(ওনার ইঙ্গিত) What a joke

মাহমুদুল হাসান: নিছক ভাঁওতাবাজি। সত্যিকারের আন্তরিকতা থাকলে এতক্ষণে দশ শতাংশ কোটা রেখে প্রজ্ঞাপন জারি হয়ে যেত। মাত্র কিছুদিন আগে অর্থনীতির মহা গুরুত্বপূর্ণ সিআরআর মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পরিবর্তন করে নির্দেশ জারি করা হয়েছে, এমনকি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতামত পর্যন্ত নেয়া হয়নাই। কাজেই সদিচ্ছা যদি থাকতই তাইলে এমন হুদাই ভাওতাভাজি করা হতনা। যা হইছে তাতে আসলে খারাপই হইছে।

আতাউল্লাহ সম্রাট: যারা যুদ্ধ করে দেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে তাদের কে আমরা জাতীর শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসেবে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি। কিন্তু তাদের সন্তানদের সেই শ্রদ্ধার জায়গা নিজ যোগ্যতায় অর্জন করতে হবে। ৪৭ বছর পর তাদের দয়া করুণার মাধ্যমে কোটা পদ্ধতি তে সুবিধা নেওয়ার কোন মানে হয় না। একটু দেরিতে হলেও রাষ্ট্র বাধ্য হয়েছে এই কোটা সিস্টেম বাতিলের জন্য।

মো. আমিনুর রহমান: আমি মনে করি এটা একটা নতুন কৌশল। আর সেজন্যই প্রধানমন্ত্রী পরিষ্কার করে বলেননি।

মোহাম্মদ আজমল হোসেন: ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দ্রুত সিদ্ধান্তের জন্য। কিন্তু আমার অনুরোধ হলো মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য দশ শতাংশ কোটা রাখা হোক। কিন্তু আপনার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।

এম আজিম উদ্দিন: : কোটা পদ্ধতি শিক্ষার্থীরা সংস্কার চেয়েছে বাতিল নয়! কোটা সম্পূর্ণ বাতিল করলে তা সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক হবে। যার ফলে সুপ্রিমকোর্টে একটি রিটের মাধ্যমে আবার কোটা ব্যবস্থা ফিরে আসবে। এরপর হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের কারণে আন্দোলনও করতে পারবে না আর কোটা পদ্ধতি বাতিলও হবে না।

আনোয়ারুল ইসলাম লিটন: আমি মনে করি যারা প্রকৃত ভাবে তখন মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলো, তাদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ভালবাসা শত ভাগ রয়েছে। এখন স্বাধীনতার এতোটি বছর পর পর্যন্ত তাদের সন্তানদের পড়ালেখা করিয়ে সু-নাগরিক বানানোর যথেষ্ট সুযোগ পেয়েছিলো, তাই এই মহত্বে তাদেরকে সরকারী ভাতা প্রদান করার মাধ্যমে সীমাবদ্ধ রাখা হউক, অনেক বিষয় বিবেচনা করে সরকারী চাকুরীতে কোটা সুযোগ দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে আমার মনে হয় না।

আব্দুল্লাহ আল মামুন: আগামী প্রজন্মের উচিত সরকারের ভর্তুকি ছাড়া নিজের বাপের টাকায় পড়া লেখা করা। অপরের টাকায় পড়লে সম্মানহানি হতে পারে…..আর এই উদ্বৃত্ত টাকা সরকার প্রতিবন্ধী, উপজাতি ও অন্যান্য অগ্রসরমানদের কাজে ব্যাবহার করতে পারে, যাতে তারা কিছুটা অগ্রসর হয়।

ইকবাল হোসেন: এইটা আন্দোলন কে স্তিমিত বা দমানোর জন্য এক ধরনের কৌশলী বক্তব্য। আন্দোলনকারীরা কিন্তু কোটা বাতিল চায় নাই। বরং সংস্কার চেয়েছে।। উনি হুট করে ক্ষোভ এর বশবর্তী হয়ে এই ধরনের কথা বলে দিলেন।। আর আমরা খুব সহজে মেনে নিব সেটা কিন্তু খুব সহজে আন্দোলনকারীরা মানবেনা.. রাগ বা মেজাজ গরম এর মাথায় তালাক দিলে যে হয় না সেটা বুঝেন তো…??

মেহেদি হাসান: সময়পোযোগী সিদ্ধান্ত। বাতিল চাই, সংস্কার না।

সাইফুল সোহাগ: কোটা ব্যবস্থার সংস্কারের পরিবর্তে সম্পূর্ণ বাতিল করা একটা রাজনৈতিক চাল ছাড়া আর কিছুই নয়। এই সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক বিধায়, অচিরেই বিচার বিভাগের হস্তক্ষেপ অবধারিত। রিট হবে, স্টে হবে। অতঃপর বাতিল হবে। পুনরায় আগের অবস্থায় ফেরত যাবে। চালাক রাজনীতিকরা বলবেন, “আদালতের রায়/আদেশ সবার শিরোধার্য।”

শামীম আহমেদ : আমরা সংস্কার চেয়েছিলাম। যেহেতু প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, অনগ্রসরদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করবেন, আর কোটা উঠিয়ে দিবেন। তাই আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, তার কথা মেনে নেওয়া উচিত আমাদের। কারণ, আলাদা কোনো ব্যবস্থা যদি সংস্কারের উদ্দেশ্য পূরণ করে তাহলে কোটা বাতিল মেনে নেওয়া যায়।

মজিবুল ইসলাম: এই খানে কোটা সংস্কার চাওয়া হয়েছে বাতিল না!

কোটা সংস্কারের দাবিগুলো কী ছিল?

কোটা সংস্কারে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ দফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। ‘বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র সংরক্ষণ পরিষদ’এর ব্যানারে যে পাঁচটি বিষয়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন চলছে সেগুলো হল –

কোটা-ব্যবস্থা ১০ শতাংশে নামিয়ে আনা (আন্দোলনকারীরা বলছেন ৫৬% কোটার মধ্যে ৩০ শতাংশই মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দ। সেটিকে ১০% এ নামিয়ে অঅনতে হবে)

কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধাতালিকা থেকে শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া

সরকারি চাকরিতে সবার জন্য অভিন্ন বয়স-সীমা- ( মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের ক্ষেত্রে চাকরীর বয়স-সীমা ৩২ কিন্তু সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য ৩০। সেখানে অভিন্ন বয়স-সীমার দাবি আন্দোলনরতদের।)

কোটায় কোনও ধরনের বিশেষ পরীক্ষা নেয়া, যাবে না ( কিছু ক্ষেত্রে সাধারণ শিক্ষার্থীরা চাকরি আবেদনই করতে পারেন না কেবল কোটায় অন্তর্ভুক্তরা পারে)

চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় একাধিকবার কোটার সুবিধা ব্যবহার করা যাবে না।

Back to top button