রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিলের দাবি সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির
রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রকল্প দ্রুত বাতিলের দাবি জানিয়েছে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি। আন্তর্জাতিক পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতামত উল্লেখ করে তারা বলেছেন, এটি করলে ধীরে ধীরে সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাবে। পরিবেশের ভারসাম্যহীনতার কারণে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলাও করতে পারবে না।
‘রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিষয়ে দশটি বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচার ও বিজ্ঞানভিত্তিক জবাব’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন। সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির এ আয়োজনে অংশ নেন পরিবেশবিদ ও মানবাধিকারকর্মীসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
বক্তারা বলেন, রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরোধিতায় তাদের বক্তব্যের বিভ্রান্তিমূলক জবাব দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তারা বলেন, আন্তর্জাতিক পরিবেশ বিজ্ঞানীরাও ওই প্রকল্পের বিরোধিতা করেছেন।
তেল গ্যাস বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহম্মদ জানান, ইআইএ কনসালটেশনের উপস্থিত সবাই রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থগিত রেখে নতুনভাবে স্বাধীন বিশেষজ্ঞ ও প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে ইআই করানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু সরকার তা না শুনে এক সপ্তাহের মাথায় চুক্তি করে।
‘জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশ যে বড় ধরণের হুমকির মুখে পড়বে এবং পড়ছে, তা সর্বজন স্বীকৃত। সেই জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবেলার জন্য বাংলাদেশের মানুষের সবচেয়ে বড় আশ্রয় এই সুন্দরবন,’ বলেন আনু মুহম্মদ।
‘‘পয়সা খরচ করে ঋণগ্রস্ত হয়ে জনমতের বিরুদ্ধে গিয়ে মানুষের প্রতিরোধকে দমন-পীড়ন করে সরকার সুন্দরবন ধ্বংস করবে – এটা তো হতে পারে না কখনো।’’
সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এডভোকেট সুলতানা কামাল।
তিনি বলেন, একাধিকবার সরকারের ডাকে তারা সরকারের সঙ্গে বসে কথা বলেছেন। ‘আমাদের দুঃখজনক অভিজ্ঞতা হচ্ছে, আমরা যতবারই বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য-উপাত্ত পেয়ে তাদের সামনে উপস্থাপন করেছি, তাদের অবস্থানগত সুবিধা যেহেতু রয়েছে, শেষ কথাটি তাদের।’
হতাশা প্রকাশ করে সুলতানা কামাল বলেন, ‘সেই ৫৯টি প্রশ্নের উত্তর কী এলো তার কিছুই তো বলা হয়নি আমাদের। এবং এখন পর্যন্ত যে বিষয়গুলো নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলছি, সেগুলোর কোনো সদুত্তরই কিন্তু আমাদের কাছে সেভাবে আসেনি।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত সরকার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত যুক্তির চেয়ে বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক যুক্তিকে প্রাধান্য দিচ্ছে। রামপালে পরিবেশ বজায় রেখে উন্নয়নমূলক উদ্যোগ নেয়ার বিষয়ে নিরপেক্ষ সমীক্ষারও দাবি জানিয়েছে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি।