কৃষি

কদুর বাম্পার ফলন

নিজস্ব প্রতিবেদক: পাবনায় চলতি মৌসুমে আগাম শীতের সবজি কদুর বাম্পার ফলন হয়েছে। চলতি মৌসুমে জেলায় ১৬১০ হেক্টর জমিতে কদুর আবাদ করেছে চাষিরা। এবার ভালো দাম পেয়ে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। মধ্যস্বত্বভোগীদের এড়িয়ে সরাসরি ক্ষেত থেকে পাইকাররা কদু সংগ্রহ করায় ভালো দাম পাচ্ছেন চাষিরা। অনুকূল আবহাওয়ায় চলতি মৌসুমে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছে কৃষি বিভাগ।

চাষিরা জানায়, লকডাউনে ক্রেতা, পরিবহন সংকটে ক্ষেতেই নষ্ট হয়েছে যতেœ বোনা সবজি। লোকসানের ধকল না কাটতেই অতি বৃষ্টিতে আবারও ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা। সে দুঃসময় কদুর ভালো ফলন ও দাম পেয়ে হাসি ফুটেছে তাদের মুখে। তবে বাজার ইজারাদের হুমকি ধামকি আর নানা প্রতিবন্ধকতায় তাদের মুখের হাসি ম্লান হতে বসেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সদর উপজেলার দিকশাইল, কালিকাপুর, আটমাইল, ঈশ^রদী উপজেলার ছিলিমপুর, বক্তারপুর, মুলাডুলি, আটঘড়িয়ার খিদিরপুরসহ জেলার অধিকাংশ সবজি প্রধান গ্রামগুলোর মাঠে মাঠে ছেয়ে গেছে সবুজ কচি কদু আর সাদা ফুল। ক্ষেত থেকে কদু উত্তোলন আর গাছের পরিচর্যায় এখন ব্যস্ত সময় কাটছে চাষিদের।

মির্জাপুর গ্রামের কদু চাষি আনিসুর রহমান জানান, ক্ষেত থেকে কদু হাট কিংবা আড়তে নিতে বাড়ে পরিবহণ ব্যয়, টানা হেঁচড়ায় নষ্টও হয়। তাই পাইকারদের রাজি করিয়ে ক্ষেত থেকেই সরাসরি কদু বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছেন চাষিরা। সতেজ ও পছন্দমতো পণ্য পেয়ে খুশি পাইকাররাও। তিনি জানান, বাজারে কদু নিয়ে গেলে ইজারাদাররা প্রতিটি কদুর জন্য কৃষকের কাছ থেকে পাঁচ টাকা আবার পাইকারের কাছ থেকেও পাঁচ টাকা করে আদায় করে। ফাউ হিসেবে কদু কেড়ে নেয়। আবার বাজার পর্যন্ত নিতে ভ্যান ভাড়া, সময় নষ্ট হয়। তাদের পুরো দিনটাই নষ্ট হয়। কিন্তু ক্ষেত থেকে সবজি নেওয়ায় আমাদের বাড়তি কোনো খরচ নেই, দ্রুত সবজি বিক্রি করে আবার ক্ষেতের পরিচর্যা বা অন্য কাজ করতে পারি। গাজিপুর থেকে আসা পাইকার মাসুদ রানা জানান, কৃষকের অনুরোধে মাসখানেক ধরে তারা গ্রামের ভেতরে এসে কৃষকের কাছ থেকে সবজি নিচ্ছেন। এতে তাদেরও সুবিধা, সতেজ সবজি কম খরচে পাই। কিন্তু বাজার ইজারাদাররা ক্ষেত থেকে সবজি না কেনার জন্য শাসিয়ে গেছে। গত সপ্তাহে ট্রাকের ড্রাইভার ও হেলপারকে মারধোরও করেছে। বিষয়টির সমাধান না হলে তাদের এ এলাকা থেকে সবজি নেওয়াই কঠিন হয়ে পড়ছে। ইজারাদের এমন অসৎ তৎপরতার বিষয়ে কৃষি বিভাগ ও জেলা প্রশাসনে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী চাষিরা।

Back to top button