নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
পুলিশ সদস্যদের যাকে সন্দেহ হচ্ছে তাকে ডোপটেস্ট (মাদকাসক্তি পরীক্ষা) করানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা ইতিমধ্যে ১০০ জনকে শনাক্ত ও অন্তত ৩০ জনকে ডোপ গ্রহণজনিত কারণে বরখাস্ত করেছি।
রোববার বিকালে ডিএমপি হেডকোয়াটার্সে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটির সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
ক্র্যাব সভাপতি মিজান মালিক ও সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন আরিফের নেতৃত্বে শুভেচ্ছা বিনিময় সভায় মোহা. শফিকুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমি কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর পুলিশ লাইনে যাই। সেখানে কিছু পুলিশ সদস্যের মাদক সম্পৃক্ততার বিষয়ে জানতে পারি। আমি পুলিশের কল্যাণসভাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মাদকের কুফল তুলে ধরে বক্তব্য দেই। পুলিশ সদস্যদের মাদক পরিহারের আহ্বান জানাই।
তিনি বলেন, আমার ৫৭টি বিভাগের উপ-কমিশনারদের সম্পৃক্ত করে আমরা তাদের চিকিৎসার নিশ্চয়তা দেওয়াসহ মাদক সম্পৃক্তদের ফিরে আসার আহ্বান জানাই। কিন্তু এতে কেউ সাড়া দেয়নি। পরবর্তীতে আমরা আমাদের গোয়েন্দা ইউনিটের মাধ্যমে খোঁজ খবর নিয়ে যাদেরকে সন্দেহ হচ্ছে তাদেরকে ডোপ টেস্ট করাতে বলি। এতে কয়েকেজন এসআইসহ শতাধিক পুলিশ সদস্যের মাদক সম্পৃক্তা পাওয়া যায়।
ডোপ টেস্ট কার্যক্রম আরও জোরদার ও আগামীতেও অব্যাহত থাকবে জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমাদের গোয়েন্দা ইউনিট এটি নিয়ে কাজ করছে। তবে ডিএমপিতে ঢালাওভাবে ডোপটেস্ট করা হচ্ছে না।
কমিশনার বলেন, আমাদের পরিকল্পনা ছিল ক্রাইম ভিক্টিমের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো। কারণ পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তি অপরাধের শিকার হয়ে প্রাণ হারালে তার পরিবার নিদারুণ অসহায় হয়ে পড়ে। তাদের কোনো উপায় থাকে না। তাই আমার পরিকল্পনা ছিল ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ গাড়ি থেকে যে জরিমানা আদায় করে তার অন্তত ৩০ শতাংশ ক্রাইম ভিক্টিম পরিবারের জন্য বরাদ্দ করা। যাতে পুলিশ মানবিকভাবে পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াতে পারে।
তিনি বলেন, আমার পরিকল্পনা ছিল এবারের পুলিশ সপ্তাহে আমি এই বিষয়টি তুলে ধরবো। কিন্তু পুলিশ সপ্তাহ না হওয়ায় বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কাছে বলা হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের পরিকল্পনা তুলে ধরে অর্থ বরাদ্দ চাইবো।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, থানায় আর্থিক লেনদেনের বিরুদ্ধে আমরা সবাইকে সতর্ক করছি। থানায় মামলা বা জিডি করার পর পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বাদীর কাছে জানতে চাওয়া হয় যে, ডিজি বা মামলার তদন্তে থানায় কোনো অর্থ দিতে হয়েছে কিনা এবং তিনি যে বিষয়ে অভিযোগ বা জিডি করতে চেয়েছেন ওই বিষয়ে করতে পেরেছেন কিনা। ৯৫ শতাংশ বাদী আমাদেরকে জানিয়েছেন যে, থানায় মামলা বা জিডি করতে কোনো ধরনের হয়রানি বা টাকা-পয়সা দিতে হয়নি।
মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, ডিএমপি ৩৪ হাজার পুলিশের বিশাল বাহিনী। এদের সবাই সৎ আমি সেটা বলবো না। আমি বলবো আমাদের উপ-কমিশনারদের কেউই আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে জড়িত নয়। আমরা থানায় বা ডিএমপির কোনো সদস্যের অনৈতিক লেনদেনের যেকোনো তথ্য পাওয়া মাত্রই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছি। যতবড় প্রভাবশালী ব্যক্তিই তদবির করুক না কেন ডিএমপির কোনো সদস্য অন্যায় করলে তাদেরকে ছাড় দেওয়া হবে না।
কমিশনার বলেন, ক্র্যাবের যেকোনো শুভ ও কল্যাণকর কাজে ডিএমপি সবসময় পাশে থাকবে। ডিএমপির কোনো সদস্য সাংবাদিকদের সঙ্গে ইচ্ছাকৃত অন্যায় আচরণ করলে তাদের রেহাই দেওয়া হবে না।