রাজনীতি

মহাসড়কে টোল আদায়ের সিদ্ধান্ত জনস্বার্থবিরোধী -ন্যাপ

নিজস্ব প্রতিবেদক: মহাসড়কে টোল আদায়ের সরকারি সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ গণবিরোধী ও জনস্বার্থ পরিপন্থী বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (বাংলাদেশ ন্যাপ) চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেছেন, মহাসড়ক থেকে টোল আদায় করা হলে তা যাত্রীদের পকেট থেকেই দিতে হবে। জনগণের পকেট কাটার এমন সিদ্ধান্ত থেকে ফিরে আসা উচিত সরকারের। বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় এসব কথা বলেন।

তারা বলেন, গত মঙ্গলবার একনেকের সভায় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, দেশের মহাসড়ক থেকে টোল আদায় করতে। জনস্বার্থে সরকারের এ সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকা উচিত। জনগণের পকেট কাটার এমন সিদ্ধান্ত থেকে সরকার সরে আসবেন বলে প্রত্যাশা করি। সরকারকে মনে রাখতে হবে, মহাসড়ক থেকে টোল আদায় করা হলে তা যাত্রীদের পকেট থেকেই দিতে হবে, যানজটের তীব্রতা বাড়বে, নষ্ট হবে সময়।

সড়কে টোল আদায় করা হলে বাসভাড়া আরও বাড়বে মন্তব্য করে নেতৃদ্বয় বলেন, এমনিতে বাস ভাড়া অনেক বেশি। সরকার নির্ধারিত ভাড়া পরিবহন মালিকরা নেন না। তারা অনেক বেশি টাকা নেন। এখন টোলের টাকাও যাত্রীদের কাছ থেকে উঠানো হবে। এই টোলের ফলে যাত্রীদের অর্থ অপচয় হবে, সময় অপচয় হবে। ফলে যাত্রীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। টোল থেকে আদায় হওয়া অর্থ কত অংশ সরকারি কোষাগারে জমা পড়বে, সেটা নিয়েও জনমনে সন্দেহ রয়েছে।

তারা বলেন, দেশের বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে আদৌ কোনো মহাসড়ক নেই। মহাসড়ক’ বলতে যা বোঝায় বা যে সুযোগ-সুবিধাগুলো থাকা উচিত, তা বাংলাদেশে নেই। কোনো যানবাহন যদি মহাসড়কের সুবিধা না পায়, তাহলে তার জন্য টোল দেবে কেন? আর দিলেও তা হতে হবে অযৌক্তিক। মহাসড়কে যানবাহন চলার নির্দিষ্ট গতি রয়েছে। যে সড়কে উচ্চগতিতে এবং নিরবচ্ছিন্নভাবে যানবাহন চলতে পারবে। ধীরগতির যান চলাচল থাকবে নিয়ন্ত্রিত। চাইলেই যে কোনো যানবাহন সেখানে প্রবেশ করতে পারবে না। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ এবং সার্বক্ষণিক নজরদারিও মহাসড়কে নিশ্চিত করতে হয়।

নেতৃদ্বয় আরও বলেন, সরকার নিজেরা টাকা উঠালে সেখানে দুর্নীতির কারণে নয়-ছয় হয়। আবার ইজারা দিলে খাতিরের লোকজনকে নামমাত্র মূল্যে দেয়া হয়। ফলে সরকারি কোষাগারে খুব বেশি টাকা জমা পড়ে না।

তারা বলেন, দুঃখজনক হলেও বলতে হচ্ছে, আমাদের দেশের সড়ক-মহাসড়কগুলো যথাযথভাবে নির্মাণ করা হয় না। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়। এতে ঘোষিত ও নির্ধারিত সময়ের আগেই সড়ক মহাসড়কগুলো নষ্ট হয়ে যায়। প্রয়োজন হয় মেরামতের। সড়ক-মহাসড়ক নির্মাণে ব্যয়ও আমাদের দেশে অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি। এক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নেই বললেই চলে। ফলে এ খাতের তথাকথিত ব্যয়ের বেশিরভাগেই লুটপাট হয়ে যায়। শুধু নির্মাণের ক্ষেত্রেই নয়, রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা লক্ষ্য করা যায়।

নেতৃদ্বয় বলেন, সড়ক-মহাসড়ক ব্যবস্থাপনা বলতে যা বোঝায়, তা অনুপস্থিত। এ কারণে যানজট, দুর্ঘটনা, থ্রি হুইলার ও অযান্ত্রিক যানবাহনের চলাচল, চাঁদাবাজি, নিরাপত্তাহীনতা, টোল প্লাজায় অনিয়ম-দুর্নীতি সহজেই প্রত্যক্ষ করা যায়। সড়ক-মহাসড়ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে যে ধরনের সুযোগ-সুবিধা ও অধিকার মানুষের থাকার কথা, তার দুঃখজনক ঘাটতি বিদ্যমান। এমতাবস্থায়, টোল আদায় শুরুর আগেই সড়ক-মহাসড়ক চলাচল উপযোগী, মসৃণ, দুর্ভোগমুক্ত, নিরাপদ করতে হবে।

Back to top button