অর্থ-বাণিজ্যজাতীয়

অপ্রদর্শিত অর্থ সাদা করা যাবে -অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে নতুন করে ঘোষণা দেননি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তবে আয়কর অধ্যাদেশের ১৯ ধারা অনুযায়ী, এনবিআরের কয়েকটি শর্ত মেনে এবং নির্দিষ্ট পরিমাণ কর ও জরিমানা দিয়ে কালো টাকা বা অপ্রদর্শিত অর্থ সাদা করা যাবে। এই নিয়ম সব সময়ের জন্যই প্রযোজ্য।

এ প্রসঙ্গে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ বলেন, বিশ্বের সব দেশেই অপ্রদর্শিত অর্থ সাদা করার আইন আছে। বাংলাদেশেও এ আইন আছে। সেই আইনের শর্ত মেনে জরিমানা ও কর দিয়ে টাকা সাদা করতে হয়। এই সুযোগ যে কেউ নিতে পারে। মাঝেমধ্যে বাজেটে এর বাইরে বিশেষ সুযোগ দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়। চলতি অর্থবছরের বাজেটেও এই সুবিধা দেওয়া হয়েছিল। তবে এ ধরনের সুযোগ দেওয়া হলে বিভিন্ন মহল থেকে সমালোচনা হয়। যারা নিয়মিত কর দেন তারাও কর দিতে অনুৎসাহিত হন।

এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান আরও বলেন, যখনই বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়, তখনই তিনটি বিশেষ সুযোগ পান কালো টাকার মালিকরা। প্রথমত, কোনও জরিমানা দিতে হয় না। দ্বিতীয়ত, কম আয়কর দিয়েই টাকা সাদা করা যায়। গতবার মাত্র ১০ শতাংশ কর দিয়ে টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তৃতীয়ত- অপ্রদর্শিত অর্থ নিয়ে সরকারের কোনও সংস্থা পরে আর কোনও প্রশ্ন করে না।

তিনি উল্লেখ করেন, এবার যেহেতু বাজেটে এ নিয়ে কোনও কথা হয়নি, সেহেতু কালো টাকার মালিকরা তিনটি সুবিধা এবার পাবেন না। অর্থাৎ আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত যে কেউ তিনটি সুবিধাসহ অপ্রদর্শিত অর্থ সাদা করতে পারবেন।

এদিকে আয়কর অধ্যাদেশের ১৯ ধারা অনুযায়ী এলাকাভেদে নির্দিষ্ট পরিমাণ কর দিয়ে ফ্ল্যাট কিনে কালো টাকা সাদা করা যাবে। তবে অপ্রকাশিত আয়ের মাধ্যমে এলাকা এবং সম্পত্তির অবস্থানের ওপর নির্ভর করে নির্দিষ্ট পরিমাণ কর প্রদানের মাধ্যমে বাড়ি, জমি, ভবন বা ফ্ল্যাট কেনার যে সুযোগ, তা বিদ্যমান থাকবে। কিন্তু সরকারি সংস্থা তহবিলের উৎস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে পারবে। এক্ষেত্রে এনবিআর শর্ত অনুযায়ী, অপরাধ কার্যক্রমের মাধ্যমে এবং অবৈধ উৎস থেকে অর্জিত অর্থ সাদা করা যাবে না। শিল্পখাতে কালো টাকা সাদা করার সুযোগও থাকছে।

প্রসঙ্গত, গতবছর অর্থমন্ত্রী বাজেটে ঢালাওভাবে টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ায় তীব্র সমালোচনা হয়েছিল। যে কারণে এসব সুযোগ আগামীতে থাকছে কিনা এ বিষয়ে আরও ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত দেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। অর্থমন্ত্রী বলেন, এর পক্ষে-বিপক্ষে নানা অভিমত রয়েছে। কেউ বলছেন, এ সুযোগ থাকা উচিত নয়, আবার কেউ বলছেন সুযোগ রাখা উচিত। তাই এ মুহূর্তে কিছু বলছি না। আরও কিছু দিন ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত দেবো, এ সুযোগ রাখা হবে কী হবে না।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আমার কাছে সব তথ্য আসেনি। অপ্রদর্শিত অর্থ মূলধারায় ফিরিয়ে আনার যে সুযোগ আমরা দিয়েছিলাম, সেই সুযোগ কতজন নিলো, সে সম্পর্কে আমার কাছে শতভাগ তথ্য এসে পৌঁছায়নি।

উল্লেখ্য, উৎস সম্পর্কে কোনও জিজ্ঞাসা ছাড়াই চলতি অর্থবছরে সরকার কালো টাকা সাদা করার যে সুযোগ দিয়েছিল, ২০২১-২২ অর্থবছরে সেটা থাকছে কিনা সে সম্পর্কে বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী কিছুই বলেননি।

Back to top button