জাতীয়

ভাঙা হচ্ছে শতাধিক স্কুল ভবন

বরগুনা সংবাদাদাতা: বরগুনায় প্রায় শতাধিক পুরনো স্কুল ভবন ভেঙে ফেলার কাজ শুরু হয়েছে।

বরগুনা শহরের চরকলোনি এলাকার সরকারি হামিদিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেখা গেছে, নিলামে বিক্রি হওয়া দুটি ভবন ভাঙার কাজ চলছে। পাঠদানের বিকল্প কোনো ভবনও নেই এখানে। ছোট্ট একটি টিনের ঘর থাকলেও সেখানে পাঠদানের কোনো ব্যবস্থা নেই। স্কুলের শুধু পঞ্চম শ্রেণিতেই ৭৮ এবং সব মিলিয়ে ৩৪৫ শিক্ষার্থী রয়েছে বলে জানান স্কুল কর্তৃপক্ষ।
এ বিদ্যালয়ের মতো শুধু বরগুনা সদরে আরও ১০ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরনো ভবন নিলামে দেওয়া হয়েছে কয়েকদিন আগে। নিলাম কিনেই শুরু হয়েছে ভবন ভাঙার কাজ। এছাড়া আমতলীতে ৩৭, তালতলীতে ১৪, পাথরঘাটায় ১৭, বামনায় চার এবং বেতাগী উপজেলায় চার স্কুল ভবনের কাজ চলছে। তবে এসব ভবনের নতুন করে নির্মাণ কাজ কবে শুরু হবে, তা শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কেউ জানেন না।

চরকলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট সেলিনা হোসেন জানান, নতুন ভবন নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে প্রায় এক বছর আগে। অথচ পুরনো ভবন নিলামে দেওয়া হয়েছে মাত্র সাত-আট দিন আগে। এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে বহুবার যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়বে বিদ্যালয়ের তিন শতাধিক শিক্ষার্থী।

সংশ্লিষ্ট শিক্ষা কর্মকর্তা, বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটি এবং শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নতুন করে ভবন নির্মাণে কত সময় লাগবে এবং নতুন ভবন ওঠর আগ পর্যন্ত কীভাবে পাঠদান দেয়া হবে সে বিষয়ে এখনও সুনির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা তারা পাননি।

জেলার অন্যান্য উপজেলার সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলায় কমপক্ষে ৩০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নেই। ক্ষুদ্র মেরামতের জন্য বরাদ্দকৃত টাকা দিয়ে এসব বিদ্যালয়ে বিকল্প টিনশেড ঘর করা হয়েছে। তবে তাও প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এসব বিদ্যালয়ে কীভাবে পাঠদান করা হবে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা এখনও তারা পাননি।
বরগুনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এম এম মিজানুর রহমান জানান, সব স্কুল পরিদর্শন করা হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, প্রধান শিক্ষক এবং বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে নিয়মিত সভা করা হচ্ছে। তবে পাঠদানের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো নির্দেশনা পাননি বলে জানান তিনি।

বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান জানান, এসব সমস্যা নিয়ে ইতোমধ্যে একাধিকবার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সভা করা হয়েছে। বিকল্প শেল্টার নির্মাণ করে শিক্ষার্থীদের যাতে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঠদানে করা যায় সে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম বলেন, জানামতে নির্মাণাধীন স্কুলগুলোর জন্য বিকল্প ব্যবস্থা রেখেই কাজ করা হচ্ছে। এরপরে যদি কোথাও বিকল্প ব্যবস্থা না থাকে তাহলে ক্লাশ নেয়ার জন্য টিনসেড ঘর নির্মাণ করে দেয়া হবে।

Back to top button