স্বাস্থ্য

শীতের সঙ্গে বেড়েছে অসুখ-বিসুখ, ভিড় হাসপাতালে

নিজস্ব প্রতিবেদক: শীতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের তাপমাত্রা কমেছে। কোনো কোনো অঞ্চলে শুরু হয়েছে শৈত্যপ্রবাহ। বাড়ছে ঠান্ডা, শ্বাসকষ্ট, অ্যালার্জি, চর্মরোগসহ শীতকালীন নানা ধরনের রোগ। ফলে হাসপাতালে ভিড় বেড়েছে রোগীদের।

মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) মেডিসিন বহির্বিভাগে গিয়ে রোগীদের ভিড় দেখা যায়। ৪টি রুমে একাধিক ডাক্তার দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন।
রোগী ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শীতে আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে সাধারণত যেসব রোগ দেখা দেয়, সেসব রোগীই তুলনামূলকভাবে বেশি। ঠান্ডা, কাশি, শ্বাসকষ্টের রোগীর সংখ্যা শীতের কারণে বেড়েছে দ্বিগুণ। শীতের কারণে সকাল ৮টার দিকে রোগীর সংখ্যা কম হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ডাক্তারের রুমের সামনে দীর্ঘ লাইন। কোনো চেয়ার ফাঁকা নেই। অনেকে আবার দাঁড়িয়ে রয়েছেন। এখানে চিকিৎসার জন্য ফেনীর সাঁড়াশিয়া থেকে এসেছেন ৬৩ বছর বয়সী আবুল বাশার।

এই বৃদ্ধের সমস্যার কথা জানতে চাইলে বলেন, কয়েকদিন ধরে কাশি হচ্ছে। রাতে ঘুমাইতে পারি না। নাক দিয়েও পানি পড়ে। এ কারণে ডাক্তারের কাছে এসেছি, দেখি তারা কী বলেন।

ঠা-াজনিত সমস্যায় দীর্ঘদিন ধরে ভুগছেন একজন। শীত আসলেই সমস্যাটা তার বেড়ে যায়। ডাক্তার দেখানো ছাড়া উপায় থাকে না। সমস্যার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, পানিতে হাত দিলেই ঠান্ডা লেগে যায়। তার ওপর এখন শীতও বেড়ে গেছে। তাই গত কয়েকদিন ধরে ঠান্ডাটা একটু বেশি লেগেছে। আর কমছে না। ওষুধ খেলাম, ভালো হয়নি। এজন্য এখানে ভালো ডাক্তার দেখাতে আসলাম।

শীতের মৌসুমে ঠান্ডাজনিত সমস্যায় ভোগেন প্রায় সব বয়সী মানুষই। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আগে এ ধরনের সমস্যা নিয়ে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ জন রোগী আসলেও এখন সেটা বেড়ে হয়েছে ১২০ থেকে ১৫০ জনের মতো।

বহির্বিভাগের সামনে কথা হয় নরসিংদীর রায়পুরা থেকে আসা ১৭ বছর বয়সী তৌফিকুল ইসলামের সঙ্গে। একই অবস্থা তারও। নিজের সমস্যার কথা বলতে গিয়ে বলেন, ফার্মেসি থেকে ওষুধ খেয়েছি। কিন্তু ঠান্ডা ভালো হয়নি। তাই এখানে আসলাম ভালো ডাক্তার দেখাতে। নাক দিয়ে পানি পড়ে, শুকনো কাশিও হয়।

শীতজনিত রোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে বহির্বিভাগের একজন মেডিকেল অফিসার বলেন, শীতের কারণে নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, এজমার রোগী বেড়ে গেছে। আবহাওয়ার পরিবর্তন, বায়ু দূষণসহ অসচেতনার ফলেইেএসব রোগ বেড়ে যায়।

এ ধরনের রোগের এড়িয়ে চলার পরামর্শ হিসেবে তিনি বলেন, প্রথমতো সচেতনতা দরকার। এছাড়া প্রাচীন যে পদ্ধতি যেমন গরম চা, আদা এসব খাওয়াও বেশ ভালো। সেইসঙ্গে ধূমপান না করা, মাস্ক পরাসহ ঠান্ডা লাগতে পারে এমন কিছু এড়িয়ে চললে এ ধরনের রোগী হ্রাস পাবে।

Back to top button