আন্তর্জাতিক

পাকিস্তানজুড়ে হামলার হুমকি টিটিপির

নিউজ ডেস্ক: পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে করা একটি ‘যুদ্ধবিরতি’র চুক্তি থেকে সরে এসেছে দেশটির নিষিদ্ধ ঘোষিত বিদ্রোহী গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালিবান (টিটিপি)। শুধু তাই নয়, দেশজুড়ে হামলার হুমকি দিয়েছে গোষ্ঠী।

দেশটির সংবাদমাধ্যম ডনের এক প্রতিবেদন মতে, চলতি বছরের জুনে সরকারের সঙ্গে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয় টিটিপি। ছয় মাস পর সোমবার (২৮ নভেম্বর) সেই চুক্তি থেকে আসার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে গোষ্ঠীটি। সেই সঙ্গে দেশজুড়ে আঘাত হানার জন্য যোদ্ধাদের প্রতি নির্দেশ দেয়।

ডনের প্রতিবেদন মতে, এদিন এক বিবৃতিতে গোষ্ঠীটির পক্ষ থেকে নিজ যোদ্ধাদের প্রতি নির্দেশ দিয়ে বলা হয়েছে, ‘যেহেতু বিভিন্ন এলাকায় আমাদের মোজাহিদিনদের বিরুদ্ধে সেনা অভিযান চলছে। সুতরাং দেশজুড়ে যেখানে খুশি হামলা চালানো তোমাদের দায়িত্ব।’

বিবৃতির মতে, সম্প্রতি খাইবার পাখতুনখোয়ার বান্নু শহরের লাক্কি মারওয়াত জেলায় সেনাবাহিনীর ধারাবাহিক হামলার পর এ সিদ্ধান্ত নেয় জঙ্গিগোষ্ঠীটি।

গোষ্ঠীটি আরও বলেছে, তারা বারবার পাকিস্তানের জনগণকে সতর্ক করেছে এবং ‘আলোচনা প্রক্রিয়া যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেজন্য তাদের (গোষ্ঠীটির) পক্ষ থেকে ধৈর্য্য প্রদর্শন করা হয়েছে। কিন্তু পাক সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো থামেনি এবং হামলা অব্যাহত রেখেছে। এখন আমাদের পাল্টা হামলা শুরু হবে দেশজুড়ে।’

গোষ্ঠীটির এমন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে পাক সরকার ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তেহরিক-ই-তালিবান একাধিক বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সমন্বয়ে ২০০৭ সালে গঠিত হয়। খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বিস্তীর্ণ অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে এ বিদ্রোহীরা।

২০১৪ সালে পেশোয়ারের একটি স্কুলে হামলা চালিয়ে শতাধিক শিক্ষার্থীকে হত্যা করে তারা। এরপর একাধিক অভিযান চালিয়েও তাদের বাগে আনতে পারেনি পাক সেনা।
ডনের প্রতিবেদন মতে, গত বছর অক্টোবর সরকার ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে শান্তি আলোচনা শুরু হয়। কিন্তু ডিসেম্বরের পর সেই আলাপ আর এগোয়নি। এরপর চলতি বছরের মে মাসে ফের আলোচনা শুরু হয়। জুন মাসে উভয় পক্ষ একটা ‘যুদ্ধবিরতি’তে সম্মত হয়। কিন্তু সেপ্টেম্বর থেকেই টিটিপির হামলা আবারও বাড়তে শুরু করে।
এরপর অক্টোবরে পাক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়, সরকার ও টিটিপির এক বছরের বেশি সময় ধরে চলমান শান্তি আলোচনায় অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। যা গোষ্ঠীটির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে। শেষ পর্যন্ত ‘যুদ্ধবিরতি’র অবসান ও এর জন্য সরকারকে দায়ী করে বিবৃতি দিয়ে যোদ্ধাদের হামলার নির্দেশ দিলো।

Back to top button