এবি ব্যাংকের ১৬৫ কোটি টাকা পাচারের মামলায় ব্যাংকটির সাবেক চেয়ারম্যান এম ওয়াহিদুল হক ও কর্মকর্তা আবু হেনা মোস্তফা কামালকে নিম্ন আদালতের দেওয়া জামিন কেন বাতিল করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে হাই কোর্ট।
সেইসঙ্গে তারা যাতে বিদেশে যেতে না পারেন, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া ওই মামলার নথি হাই কোর্টে পাঠাতে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাই কোর্ট বেঞ্চ বুধবার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেয়।
আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইউসুফ মাহমুদ মোর্শেদ।
পরে খুরশীদ আলম খান সাংবাদিকদের বলেন, গত ২৫ জানুয়ারি দুদক ওয়াহিদুল হক ও মোস্তফা কামালকে গ্রেপ্তার করার পর ঢাকার হাকিম আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করে। এ বিষয়ে সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে হাই কোর্ট রুল দিয়েছে।
বিষয়টি আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী আদেশের জন্য রেখেছে হাই কোর্ট।
এবি ব্যাংকের ১৬৫ কোটি টাকা বিনিয়োগের নামে বিদেশে পাচারের অভিযোগে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান গত ২৫ জানুয়ারি মতিঝিল থানায় আটজনের বিরুদ্ধে মুদ্রা পাচার আইনের একটি মামলা করেন।
ওই দিন বিকালেই রমনার মৎস্যভবন এলাকা থেকে ওয়াহিদুল হক, আবু হেনা মোস্তফা কামালের সঙ্গে এবি ব্যাংকের গ্রাহক ব্যবসায়ী সাইফুল হককে গ্রেপ্তার করে দুদক।
মামলার বাকি আসামিরা হলেন- এবি ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামীম আহমেদ চৌধুরী ও মো. ফজলুর রহমান, হেড অব অফশোর ব্যাংকিং ইউনিটের (ওবিইউ) মোহাম্মদ লোকমান, হেড অব করপোরেট ব্যাংকিং মোহাম্মদ মাহফুজ উল ইসলাম এবং জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. নুরুল আজিম।
গ্রেপ্তারের পর মামলার তিন আসামিকে সেদিন ঢাকার হাকিম আদালতে হাজির করে ১০ দিন করে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চান মতিঝিল থানার এস আই গোলাম রাব্বানী। অন্যদিকে তিন আসামির পক্ষে জামিনের আবেদন করেন তাদের আইনজীবীরা।
শুনানি শেষে মহানগর হাকিম আবু সাইদ সাইফুলকে তিন দিনের রিমান্ডে পাঠিয়ে ওয়াহিদুল ও মোস্তফা কামালকে ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় জামিন দেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণার মাধ্যমে ভুয়া অফশোর কোম্পানিতে বিনিয়োগের নামে ১৬৫ কোটি টাকা এবি ব্যাংকের চট্টগ্রাম ইপিজেড শাখা থেকে দুবাইয়ে পাচার করে এবং পরে তা আত্মসাৎ করে। ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে অর্থ পাচারের ওই ঘটনা ঘটে।
আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০, ১০৯ এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা ও মুদ্রা পাচার আইনের ৪(২) ও ৪(৩) ধারার অভিযোগ আনা হয়েছে এ মামলায়।