জাতীয়

গরুর গোস্ত আমদানি হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে খামারিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : গরুর গোস্ত আমদানি হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ মানুষ, উৎপাদনকারী, খামারি ও শিল্পসংশ্লিষ্টরা। তাই সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে হিমায়িত গরুর গোস্ত আমদানি বন্ধের দাবি জানিয়েছেন দেশীয় গোস্ত উৎপাদনকারীরা। সোমবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- এনিমেল হেলথ কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আহকাব) সভাপতি ডা. এম নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ভেটেরিনারি অ্যাসোসিয়েশনের (বিভিএ) মহাসচিব ড. মো হাবিবুর রহমান মোল্লা, বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্সের (বিডিএফএ) সেক্রেটারি শাহ ইমরান, বেঙ্গল মিটের হেড অব কমার্শিয়াল অ্যান্ড এক্সপোর্ট সাইদুল হক ভূইয়া প্রমুখ। মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএলআরআইয়ের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. শরীফ আহমেদ চৌধুরী।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিদেশ থেকে অবাধে হিমায়িত গরুর গোস্ত আমদানি করলে দেশীয় উদ্যোক্তা ও প্রান্তিক খামারিরা চরমভাবে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। এর ফলে বিশাল যুবসমাজ তথা উদ্যোক্তারা বেকার হয়ে পড়বে। যার প্রভাব ব্যাপকভাবে গ্রামীণ অর্থনীতি, সামাজিক নিরাপত্তা, খাদ্য নিরাপত্তা ও কৃষিখাতে পড়বে। এমতাবস্থায় দেশের স্বার্থে বিদেশ থেকে আমদানি প্রক্রিয়া বন্ধ করতে সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়।

এক পরিসখ্যান তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জনপ্রতি দৈনিক ১২০ গ্রাম গোস্তের চাহিদা হিসেবে বার্ষিক মোট চাহিদা ৭২ দশমিক ৯৭ লাখ মেট্রিক টন। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগি থেকে গোস্ত উৎপাদিত হয়েছে ৭৫ দশমিক ১৪ লাখ মেট্রিক টন। অর্থাৎ ২ দশমিক ১৭ লাখ মেট্রিক টন উদ্বৃত্ত হয়েছে। এর মধ্যে গরু-ছাগলের গোস্ত উৎপাদনের ৫৫ শতাংশ।

তারা বলেন, দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে বিদেশ থেকে হিমায়িত গরুর গোস্ত আমদানি-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা বর্তমান সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দেশীয় খামারি, উৎপাদনকারী ও সংশ্লিষ্টরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শুধু তাই নয় পরিবেশ ও কৃষিতে এর প্রভাব পড়বে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, ডেইরি ও ক্যাটল শিল্প বাংলাদেশের একটি মৌলিক শিল্প। মৌলিক শিল্পে বিদেশি আমদানি নির্ভরতা গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত রয়েছে গ্রামবাংলার কোটি পরিবার ও খামারিদের জীবন-জীবিকা।

বর্তমানে ডেইরি ও ক্যাটল শিল্প বিকশিত হতে শুরু করেছে। অনেক শিক্ষিত যুবক ও নারী এ শিল্পে আত্মনিয়োগ করেছেন। যার ফলে গেল কোরবানির সময় দেশীয় গবাদিপশুর মাধ্যমে সম্পূর্ণ সম্ভব হয়েছে। বর্তমান অবস্থা বহাল থাকলে আগামীতে গরুর গোস্ত বিদেশেও রফতানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, যেখানে বেঙ্গল মিট গোস্ত রফতানি করে সেখানে আমদানি কেন? এটি হলে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ মানুষ, খামারি ও শিল্প সংশ্লিষ্টরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। একই সঙ্গে গোখাদ্যের আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের দাবি করা হয়।

Back to top button