জাতীয়রাজনীতি

পিঠা-পুলি খাবার অনুষ্ঠানে যাবার আগ্রহ নাই: ঐক্যফ্রন্ট নেতা

নিউজ ডেস্ক:সংলাপ হবে নাকি চা-চক্র, এ নিয়ে এক ধরনের ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল নির্বাচনের পরে। কারণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী আবারো সংলাপে বসবেন।

পরে তিনি সে বক্তব্য অস্বীকার করে বলেন যে প্রধানমন্ত্রী সবাইকে নিমন্ত্রণ জানাবেন। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামকে উদ্ধৃত করে সংবাদ মাধ্যমে খবর বেরিয়েছিল যে প্রধানমন্ত্রী সংলাপ করবেন।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে শুভেচ্ছা বিনিময় এবং চা-চক্রের দাওয়াত দেয়া হয়েছে।

শনিবার সন্ধ্যায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অফিসে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের নামে আলাদা-আলাদা দাওয়াত কার্ড পাঠানো হয়। কিন্তু ঐক্যফ্রন্ট এবং গণফোরামের অন্যতম নেতা সুব্রত চৌধুরী এ নিমন্ত্রণে যাবার কোন আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

তিনি বলেন, ‘এ ধরণের শুভেচ্ছা বিনিময় বা পিঠা-পুলি খাবার অনুষ্ঠানে আমার যাবার কোন আগ্রহ নাই। কারণ গত নির্বাচনে অনেক আস্থা রেখে অংশগ্রহণ করেছিলাম। কিন্তু মাঠে যখন যাই তখন মনে হয়েছে যে নির্বাচনে অংশগ্রহণ যেন অপরাধ হয়ে গেছে।… আমি ছয়বার আক্রান্ত হয়েছি, জনগণ প্রতারিত হয়েছে। ৩০ তারিখের ভোটে ২৯ তারিখে বাক্স ভরে ফেলেছে।’
বিএনপিসহ ঐক্যফ্রন্টের বিভিন্ন শরীক দলের নেতারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর চা-চক্রের নিমন্ত্রণে যাবার কোন সম্ভাবনা নেই। যদিও জোটগতভাবে সে সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো জানানো হয়নি

ঐক্যফ্রন্ট ছাড়াও বিভিন্ন বামপন্থী দলগুলোকেও চা-চক্রে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে।
কিন্তু তাদের প্রতিক্রিয়াও নেতিবাচক। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলামকে সেলিমকে জিজ্ঞেস করেছিলাম তিনি এ নিমন্ত্রণে সাড়া দেবেন কিনা?

উত্তরে তিনি জানান, ‘মাত্র একমাসও হয় নাই যে আমাদের এখানে একটা রাত্রিকালীন অভিযানের ভেতর দিয়ে ভুয়া ভোটের মাধ্যমে একটা ভুয়া ইলেকশন হয়েছে। সেটার ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী শপথ নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। মানুষের ভেতরে তীব্র ক্ষোভ এবং যন্ত্রণা। কোটি-কোটি মানুষ ভোট দিতে পারে নাই। এ রকম একটা পরিস্থিতিতে শুভেচ্ছামূলক চা-চক্র খুব উপযুক্ত নয়।’
রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণী পেশার ব্যক্তিদের গণভবনের চা-চক্রে আমন্ত্রণ জানানো হবে বলে জানা যাচ্ছে।
গত দশ বছরে বিভিন্ন সময় প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে ইফতারের দাওয়াতসহ নানা উপলক্ষে চা-চক্রের আয়োজন করা হয়েছে যেখানে মূলত আওয়ামী লীগ-পন্থীদের সমাবেশই দেখা গেছে।
তবে এবারের আয়োজনকে অতীতের আয়োজনগুলোর চেয়ে আলাদা বলে উল্লেখ করছেন প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সাথে সংশ্লিষ্টরা।

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী শাহ আলী ফরহাদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যেতে চান।
সে ধারাবাহিকতায় সকল রাজনৈতিক দলকে এ চা-চক্রে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
‘দেশ গড়ার কাজে তিনি একলা চলো নীতিতে বিশ্বাসী না। উনি সবাইকে সাথে নিয়ে এগিয়ে যেতে চান। উনি খুব পরিষ্কারভাবেই একটি জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন। সে ধারাবাহিকতায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন চা-চক্রে,’ বলেন শাহ আলী ফরহাদ।
তিনি বলেন, ‘আমাদের যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি সেখানে একটা শিষ্টাচার নিয়ে আসতে চান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। এখানে আমাদের যদি বিভিন্ন বিষয়ে মতের পার্থক্য থাকে, তারপরেও যাতে আমরা একসাথে বসে কথা বলতে পারি, সে আলোচনার দুয়ারটা সবসময় খোলা রাখার একটি প্রচেষ্টা আমরা দেখতে পাচ্ছি।’
এদিকে কয়েকদিন আগে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার যে আহ্বান জানিয়েছেন – সেটিকে খারিজ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন- এসব ঐক্যের ডাক এখন অর্থহীন।

Back to top button