আন্তর্জাতিকরাজনীতি

জেনেভা-২ অধিবেশন শুরু হচ্ছে কিন্তু

সিরিয়া সঙ্কট সমাধানের জন্য “জেনেভা – ২” আন্তর্জাতিক সম্মেলনের শুরু হতে আর এক মাসের কম সময় রয়েছে. কিন্তু এখনও কারা অংশগ্রহণ করবে তা ঠিক হয় নি. বিরোধী পক্ষ ঠিক করে উঠতে পারছে না সুইজারল্যান্ডে কি নিজেদের প্রতিনিধি দল পাঠানো হবে, আর তা যদি হয়, তবে ঠিক কাকে. আর ইরানের যোগদান নিয়ে রাশিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখনও সমঝোতায় পৌঁছতে পারছে না.

সিরিয়া নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের দিন ও জায়গা ঠিক হয়েছে. এই অধিবেশন শুরু হওয়ার কথা সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহর থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে মনত্রিয়ে শহরে ২২শে জানুয়ারী. সরকারি দামাস্কাসের তরফ থেকে সেখানে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ওয়ালিদ মুয়াল্লিমের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল এসে পৌঁছবে. সিরিয়ার বিরোধ পক্ষের তরফ থেকে কে আসবে তা জানা নেই. তার ওপরে আবার এখন অবধি ঠিক করা হয় নি যে, বিরোধীরা এই সম্মেলনে নীতিগত ভাবে অংশ নেবে কিনা. একই সময়ে আলোচনার টেবিলে তাদের উপস্থিতি খুবই চাওয়া হয়েছে, এই কথা উল্লেখ করে স্ট্র্যাটেজিক পরিকল্পনা ও পূর্বাভাস ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর আলেকজান্ডার গুসেভ বলেছেন

সিরিয়ার বিরোধী পক্ষ বিগত ছ’মাস ধরে এখানে আসা নিয়ে একবার রাজী হচ্ছে, আবার রাজী হচ্ছে না, আর এখন তারা আদৌ “জেনেভা-২” সম্মেলনে অংশ নেবে কি না, তা প্রশ্ন হয়েই রয়েছে. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্সের মত সেই সমস্ত দেশের রাজনৈতিক ইচ্ছার প্রয়োজন, যাতে সিরিয়ার বিরোধী পক্ষের প্রতিনিধিরা এই অধিবেশনে যোগ দেয়.

রাশিয়াতে মনে করা হয়েছে সিরিয়া নিয়ে সম্মেলনে ইরানের অংশ গ্রহণ এতটাই প্রয়োজনীয় হয়েছে. কিন্তু আপাততঃ তেহরানের উপস্থিতিই প্রশ্নের সামনে রয়েছে, এই কথা জানিয়ে রাশিয়ার কূটনৈতিক দপ্তরের প্রধান সের্গেই লাভরভ বলেছেন:

“ইরানের লোকরা আমাদের জানিয়েছেন যে, যদি তাঁরা জেনেভা সম্মেলনে বাকী সকলের মতো অংশ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ পান, কোন রকমের প্রাথমিক শর্ত ছাড়া, তবে তাঁরা এই আমন্ত্রণ গ্রহণ করবেন. ইরান এই পরিস্থিতির সমাধানের উপরে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, এই ধরনের ইঙ্গিত আমাদের কাছে এসেছে. ব্যক্তিগত ভাবে কথা বলার সময়ে সকলেই এই বিষয়ে বলেছেন. কিছু লোক আবার প্রকাশ্যে সেই বিষয়ের পক্ষ নিয়েই বলতে শুরু করেছেন যাতে এই রকমের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার ইরানকে যেন সম্মেলনে অংশ নেওয়া থেকে বিরত না করা হয়. এই বিষয়েই অংশতঃ, বলেছেন রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব বান কী মুন. যারা ইরানের অংশ নেওয়া নিয়ে আপত্তি করছে, তারা এই কাজের স্বার্থের কারণে তা করছে না, করছে আদর্শগত ধারণা থেকেই”.

ইরানের “জেনেভা – ২” সম্মেলনে অংশ নেওয়া থেকে সবচেয়ে বেশী বাধা সৃষ্টি করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কাতার, সৌদী আরব ও ইজরায়েল. রাশিয়া এই ধরনের আপত্তিকে মনে করে স্রেফ ভেবে বার করা বলেই.

স্ট্র্যাটেজিক পরিকল্পনা ও পূর্বাভাস ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর আলেকজান্ডার গুসেভ আবার করে বলেছেন:

“রাশিয়ার অবস্থান তার থেকেই নেওয়া যে, ইরান বাস্তবে সিরিয়ার ঘটনার অংশীদার. কোন গোপনীয় বিষয় নয় যে, এই ঐস্লামিক প্রজাতন্ত্রের আলাদা করে কিছু বাহিনী সরাসরি যুদ্ধের সঙ্গে যোগ দিয়েছে. এটা খুব ভাল করেই ব্যাখ্যা করা যেতে পারে. ইরানের নেতৃত্ব সিরিয়াতে বিরোধকে মনে করেছে ইরানের পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য তীক্ষ্ণ পরিবর্তনের একটা প্রাথমিক অশনি সঙ্কেত বলেই. তার ওপরে বিগত বছরগুলোতে ইরান সম্পূর্ণ মানের আঞ্চলিক ক্রীড়নকে পরিণত হয়েছে, যাদের শুধু শক্তিশালী সামরিক বাহিনীই নেই, বরং আরও রয়েছে যথেষ্ট শক্তিশালী রাজনৈতিক শক্তিও, যারা শুধু আঞ্চলিকই নয়, বরং আলাদা অনেক বিশ্বমানের প্রশ্নের সমাধানও করতে জানে. ঠিক এই কারণেই “জেনেভা-২” সম্মেলনে ইরানের অংশগ্রহণ সম্পূর্ণ ভাবেই যুক্তিসঙ্গত বলে মনে হয়েছে”.

আজকের দিনে জেনেভা-২ সম্মেলনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে ২৬টি দেশের প্রতিনিধিদলের বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে. তাদের ২০১২ সালের ৩০শে জুনের জেনেভা সম্মেলনের কমিউনিকের ভিত্তিতে সিরিয়ার সঙ্কটের মীমাংসা করতে হবে. কিন্তু আগে থেকেই বোঝা গিয়েছে যে, “জেনেভা-২” সম্মেলন হতে চলেছে শুধু এক দীর্ঘ প্রক্রিয়ার শুরু বলেই. সিরিয়াতে বহু সংখ্যক কাউকে মানতে না চাওয়া কট্টরপন্থী সশস্ত্র বাহিনী রয়েছে, যাদের জন্য শান্তি প্রক্রিয়া একেবারেই লাভজনক নয়.
সম্পূর্ণ পড়তে হলে: http://bengali.ruvr.ru/2013_12_24/syria-geneva-prastuti/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button