মেট্রোরেল লাইন ৫-এর ভূগর্ভস্থ স্টেশন নির্মাণের জন্য গাবতলী টার্মিনালটি স্থানান্তর

গাবতলী বাস টার্মিনালটি সাময়িক স্থানান্তরের জন্য বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) বীজ উৎপাদন খামারের সাত হেক্টর জমি প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। নির্মিতব্য মেট্রোরেল লাইন (এমআরটি) ৫-এর ভূগর্ভস্থ স্টেশন নির্মাণের জন্য বিদ্যমান গাবতলী টার্মিনালটি সাময়িকভাবে সরিয়ে নেয়ার প্রয়োজন পড়ছে।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মেট্রোরেলের ভূগর্ভস্থ স্টেশন নির্মাণের সুবিধার্থে গাবতলী টার্মিনালটি সাময়িকভাবে সরিয়ে দেয়ার প্রস্তাব দেয় ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)। শুরুতে টার্মিনালসংলগ্ন সিটি পল্লী বস্তি ও আমিনবাজার ট্রাক টার্মিনালে স্থানান্তরের পরিকল্পনা ছিল।
তবে মেট্রোরেল লাইন-৫-এর জন্য গঠিত সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের স্থান নির্বাচনী কমিটির সর্বশেষ সভায় সিটি পল্লী বস্তি ও আমিনবাজার ট্রাক টার্মিনালের পরিবর্তে বিএডিসির বীজ উৎপাদন খামারের (উত্তর পাশে) সাত হেক্টর জমি প্রাথমিকভাবে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এক বছরের মধ্যে টার্মিনালটি স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। ভূগর্ভস্থ স্টেশনটি নির্মাণকালীন ছয় মাস থেকে এক বছরের জন্য বাস টার্মিনালটি সরিয়ে নেয়া হবে।
মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ চলছে ডিটিসিএর তত্ত্বাবধানে। সংস্থাটির কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গাবতলী টার্মিনালের বিকল্প হিসেবে আশপাশের ৫০০ মিটারের মধ্যে উপযুক্ত জায়গা খোঁজা হচ্ছিল। বিএডিসির বীজ উৎপাদন খামারের অব্যবহূত জমির অবস্থান টার্মিনালের ৫০০ মিটারের মধ্যেই। ডিটিসিএর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ বৈঠকে বিএডিসির সাত হেক্টর জমি প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করা হয়েছে। ভূগর্ভস্থ স্টেশন নির্মাণকালে বিএডিসির কাছ থেকে উল্লিখিত জমি ভাড়া নেয়া হবে। এজন্য বিএডিসির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাব পাঠানোর প্রক্রিয়া চলমান। তাদের সম্মতি মিললেই সাময়িক স্থানান্তরের জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত জমি চূড়ান্ত করা হবে।
সরকারের সংশোধিত কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনায় (আরএসটিপি) রাজধানীবাসীর জন্য স্বল্প ব্যয়ে দ্রুত ও উন্নত গণপরিবহন সেবা দেয়ার লক্ষ্যে মোট পাঁচটি মেট্রোরেল লাইনের সুপারিশ রয়েছে। এগুলো হলো— উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত এমআরটি-৬, কমলাপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত এমআরটি-১, বলিয়ারপুর-আমিনবাজার থেকে ভাটারা পর্যন্ত এমআরটি-৫, আশুলিয়া থেকে কমলাপুর পর্যন্ত এমআরটি-২ ও কমলাপুর-নারায়ণগঞ্জ রুটে এমআরটি-৪। এর মধ্যে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত এমআরটি-৬-এর কাজ চলমান।
অন্যদিকে গাবতলী টার্মিনালের ওপর দিয়ে যাবে এমআরটি লাইন-৫। বলিয়ারপুর থেকে শুরু হয়ে আমিনবাজার দিয়ে ভাটারা পর্যন্ত নির্মিতব্য এ লাইনের জন্যই গাবতলী টার্মিনালটি সাময়িকভাবে সরিয়ে নেয়ার প্রয়োজন পড়ছে।
টার্মিনাল স্থানান্তরের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ আহম্মদ বণিক বার্তাকে বলেন, বিএডিসির বীজ উৎপাদন খামারের সাত হেক্টর জমি আমরা গাবতলী বাস টার্মিনাল স্থানান্তরের জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করেছি। আমরা চেয়েছিলাম বিদ্যমান টার্মিনালের ৫০০ মিটারের মধ্যেই স্থানান্তর করতে। বিএডিসির খামারের জমি টার্মিনালের ৫০০ মিটারের মধ্যেই পড়েছে। আমরা এরই মধ্যে প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত জমি পরিদর্শন করেছি। আমার মনে হয়, গাবতলী টার্মিনাল সাময়িক স্থানান্তরের সবচেয়ে ভালো বিকল্প হবে এটি।