পার্বত্য চট্রগ্রাম

তুমব্রু সীমান্তে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে বিজিবি

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্ত থেকে সেনাসদস্যদের সরিয়ে নিয়েছে মিয়ানমার। কাঁটাতারের বেড়ার কাছ থেকে মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সংখ্যাও কমেছে আগের তুলনায়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, আজ সোমবার অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সেনা-বিজিবির টহলও খুব বেশি নেই সীমান্ত সড়কে। জানা গেছে, সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য তুমব্রু সীমান্তে জিরোলাইনে তিনটি ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা লাগানোর পর থেকেই পিছু হটে যায় মিয়ানমারের সেনারা।

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেছে, গত বুধবার থেকে দফায় দফায় তুমব্রু সীমান্তে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সেনা-বিজিপির সংখ্যা বাড়ায় মিয়ানমার। শূন্যরেখায় আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের উদ্দেশে মাইকিং, ফাঁকা গুলি ছোড়া, মদের বোতল ও গুলতি মেরে ভয়ভীতি দেখিয়ে নো ম্যানস ল্যান্ড থেকে বাংলাদেশের দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা চালায় মিয়ানমারের সেনা-বিজিপি। কিন্তু সীমান্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য বিজিবি তুমব্রু সীমান্তে সিসি ক্যামেরা লাগানোর পর থেকেই পিছু হটে মিয়ানমারের সেনারা। অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে টহলও কমায় সেনা-বিজিপি। তবে সীমান্ত এলাকায় আজ সকাল থেকেই মিয়ানমারের সেনাদের দেখা যাচ্ছে না। অতিরিক্ত কোনো বিজিপি সদস্য চোখে পড়ছে না।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) কক্সবাজারের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল আবদুল খালেক জানায়, সীমান্তে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য তুমব্রুতে তিনটি সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। ঠিক কৌশল নয়, এটি প্রশিক্ষিত বাহিনীর আধুনিক প্রযুক্তির একটি ব্যবহার। সীমান্ত সুরক্ষায় বিজিবি সর্বদা সতর্ক প্রহরায় রয়েছে। নতুন করে সীমান্তে কোনো জনবল বৃদ্ধি করা হয়নি। তিনি আরো বলেছে, পতাকা বৈঠকে মিয়ানমার জানিয়েছে, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার প্রয়োজনে সীমান্তে সেনা-বিজিপির টহল বাড়িয়েছে তারা (মিয়ানমার)। তাই সার্বিক সীমান্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য বিজিবির পক্ষ থেকে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়। ক্যামেরায় দেখা গেছে, সীমান্ত থেকে সেনা সরিয়ে নিয়েছে মিয়ানমার।

শূন্যরেখায় আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা নূর বাহার (৫৫) ও নূর আলম (৩৫) জানায়, তুমব্রু সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়ার কাছ থেকে গতকাল রোববার সন্ধ্যার পর থেকে মিয়ানমারের কোনো সেনা দেখা যাচ্ছে না। অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে টহলের সংখ্যাও কমেছে আগের তুলনায়। কিন্তু গত রাতেও শূন্যরেখা থেকে রোহিঙ্গাদের চলে যেতে মাইকিং করেছে বিজিপি। বর্তমানে পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক ভালো। অনেকটা স্বস্তিতে আছে রোহিঙ্গারাও।

গত বছরের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইনে নিপীড়ন-নির্যাতনের কারণে পালিয়ে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের তুমব্রু কোনাক খালের পাড়ে শূন্যরেখায় আশ্রয় নেওয়া প্রায় ছয় হাজার রোহিঙ্গাকে ঘিরে সীমান্তে উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত বুধবার থেকে সীমান্তের তুমব্রু পয়েন্টে দফায় দফায় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সেনা-বিজিবির সংখ্যা বাড়ায় মিয়ানমার। সীমান্ত সড়কের পাশে পাহাড়ের চূড়াগুলোতে বাঙ্কার স্থাপন করা হয়। বাঙ্কার থেকে শূন্যরেখার আশ্রয় ক্যাম্প তাক করে রাখা হয়েছিল অস্ত্র।

Back to top button