আন্তর্জাতিক

মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রী ধর্ষনের ভয়াল রুপ

Related image

কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, নিউ ইয়র্ক। দীর্ঘ চার বছরের গ্র্যাজুয়েশন কোর্স শেষে শিক্ষার্থীদের ডিগ্রি প্রদান অনুষ্ঠান শুরু হচ্ছে। এ অনুষ্ঠানে জার্মানি থেকে আসা শিক্ষার্থী পল স্মৃতিকাতর হয়ে পড়ছেন। আরেকবার মনে করিয়ে দিচ্ছে গত চার বছর এ বিশ্ববিদ্যালয়ে কতটা একাকিত্বে কেটেছে তার। পল এবং তার মা-বাবা এ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন কি না তা নিয়ে বেশ সিদ্ধান্তহীনতায় ছিল। কারণ পলের ক্লাসমেট এমা সালকুইজ তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছে। এর প্রতিবাদ হিসেবে সর্বশেষ আট মাস ধরে এমা একটি ডাবল সাইজের ম্যাট্রেস বহন করেছে ক্যাম্পাসে। পলকে যাতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয় অথবা সে নিজ থেকেই যাতে পালিয়ে যায় সে জন্য অভিনব এ প্রতিবাদ করে আসছে এমা।

ধর্ষণের অভিযোগ প্রচারের পর প্রায় তিন বছর ধরে তীব্র ঘৃণা উপেক্ষা করে পল তার গ্র্যাজুয়েশন কোর্স শেষ পর্যন্ত শেষ করল। কিন্তু এখন পল ভাবছে ডিগ্রি অর্জনের পরও বাইরের জগৎ তাকে দূর দূর করে তাড়িয়ে দিতে পারে। কারণ সাংবাদিকেরা তাকে ঘিরে ধরবে অনুষ্ঠান শেষে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে নীল ক্যাপ এবং গাউন পরিহিত পলের যে চেহারা ছড়িয়ে পড়বে সারা বিশ্বে তাতে একজন ধর্ষক পলই পরিচিত হয়ে উঠবে সবার সামনে। তা ছাড়া ডিগ্রি প্রদান অনুষ্ঠানের দিনও এমা যদি সত্যি সত্যি ভারী ম্যাট্রেসটি নিয়ে হাজির হয় স্টেজে তাহলে কেলেঙ্কারির আর সীমা থাকবে না। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভারী এবং বড় কোনো জিনিস বহন করার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

শেষ পর্যন্ত পল এবং তার মা-বাবা অনুষ্ঠানে হাজির হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পলের মা-বাবা বার্লিন থেকে উড়ে এসেছেন। পলের জন্ম সেখানেই। হাজার হাজার শিক্ষার্থী নীল ক্যাপ ও গাউন পরে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ মাথায় লালফিতা বেঁধেছে ক্যাম্পাসে যৌন হয়রানির প্রতিবাদে। ক্যাম্পাসে যৌন হয়রানিবিরোধী একটি সংগঠন ‘নো রেড টেপ’-এর সহপ্রতিষ্ঠাতা হলেন পলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগকারী এমা।

যা আশঙ্কা করা হয়েছিল তাই। অনুষ্ঠানে পলের নজর পড়ল এমার দিকে। এমা বিশাল একটি ম্যাট্রেস নিয়ে হাজির হয়েছে অনুষ্ঠানে। পল তার মা-বাবার প্রতিক্রিয়া খেয়াল করার চেষ্টা করছিল। কিন্তু এখন কিছুই করার নেই। জড়সড় হয়ে অপেক্ষা করছিল পল । কখন তার ডাক আসবে স্টেজে।

এরই মধ্যে লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র এরিক স্টেজে উঠে তার বক্তব্যে এমার চলমান ম্যাট্রেস প্রতিবাদকে স্বাগত জানিয়ে তাকে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে উৎসাহ দিলেন।

এটা ছিল মুখের ওপর চড় মারার মতো। জানালেন পলের বাবা আন্দ্রেয়াস। পলের বাবা আন্দ্রেয়াস ও মা কারিন বিয়ে ছাড়াই ২৫ বছর ধরে একত্রে বাস করছেন।

কোনো ধরনের শোরগোল ছাড়াই পলের নাম ঘোষণা হলো। এর আট মিনিটের মাথায় ঘোষিত হলো এমার নাম। এমা ও তার চার বন্ধু মিলে ম্যাট্রেস নিয়ে হাজির হলো স্টেজে। করতালিতে মুখরিত চার দিক।

পল-এমার বন্ধুত্ব এবং ধর্ষণ

পল ও এমার বন্ধুত্ব ২০১০ সাল থেকে । এ সময় তারা বেশ কয়েকবার একান্তে মিলিত হয়েছে। ২০১২ সালের আগস্টে বন্ধুত্বের দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে তারা আবার একান্তে মিলিত হয়। এর কয়েক মাস পর এমা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে পলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করে। ধর্ষণের অভিযোগ বিষয়ে এমা নিউ ইয়র্ক টাইমসকে জানায়, ওই রাতে তারা পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতেই একান্তে মিলিত হয়। কিন্তু একপর্যায়ে পল তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে পশ্চাৎদেশে মিলন শুরু করে। আমি বাধা দেই, চিৎকার করি কিন্তু সে থামে না। আমাকে জোরে চড় মেরে বিছানায় ফেলে দেয়। গলা চেপে ধরে বিছানায় ঠেসে ধরে। আমার শ্বাসরোধের চেষ্টা করে। মনে হাচ্ছিল সে আমাকে মেরে ফেলবে হয়তো তার কাজে বাধা দেয়ার কারণে।

অভিযোগ বিষয়ে তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে পল জানায়, যা হওয়ার সবই সম্মতির ভিত্তিতেই হয়েছে। ২০১৩ সালে পলের বিরুদ্ধে আনা এমার অভিযোগ খারিজ করে দেয় কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

পলের বিরুদ্ধে আরো দুই ছাত্রীর অভিযোগ

এমার অভিযোগ দায়েরের পর পলের বিরুদ্ধে আরো তিনটি যৌন হয়রানির অভিযোগ দায়ের হয়। একটি অভিযোগে এক ছাত্রী জানায়, পল জোর করে তার শরীরে হাত চালিয়েছে। আরেক ছাত্রী জানায়, পলের সাথে ডেটিংয়ের সময় তাকে মিলিত হতে বাধ্য করে সে। আরেক ছাত্র অভিযোগ করে জানায় পল কর্তৃক সে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে।

তদন্তের পর পরের তিনটি অভিযোগ থেকেও খালাস দেয়া হয় পলকে। একটি অভিযোগে প্রথমে তাকে অভিযুক্ত করা হলেও আবার তদন্তের পর তাকে খালাস দেয়া হয়। পলের মা কারিন এরপর বলেন, অনেক হয়েছে। এবার সবাই চুপ করেন দয়া করে। পলকে বাঁচতে দিন।

গণমাধ্যমে পল-এমার কাহিনী

সহপাঠী, বন্ধুদের সাথে মার্কিন শিক্ষার্থীদের অবাধ মেলামেশা কোনো বিষয় নয়। ধর্ষণের খবরও কোনো বিষয় নয়। কিন্তু ইদানীং কিছু কিছু ক্ষেত্রে অবাধ মেলামেশার পর এক পক্ষ থেকে তাকেই ধর্ষণে রূপান্তরের সুযোগ নিচ্ছে কিছু কিছু আইনের কারণে। পলের সাথে এমার দীর্ঘ দিনের বন্ধুত্ব এবং পরে পলের বিরুদ্ধে এমার ধর্ষণের অভিযোগ এবং পলের বিরুদ্ধে এমার লাগাতার প্রতিবাদ গোটা মার্কিন মুলুকে আলোচিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে।

২০১৩ সালে নিউ ইয়র্ক পোস্ট পত্রিকায় পলের বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগের পূর্ণাঙ্গ বিবরণ দিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয় ধর্ষক ঘুরে বেড়াচ্ছে ক্যাম্পাসে।

২০১৪ সালে এমা সিনেটর ক্রিস্টিন গিলিব্রান্ডকে নিয়ে নিউ ইয়র্কে সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, আমার ধর্ষক পল একজন সিরিয়াল ধর্ষক হয়ে এখনো ক্যাম্পাসে মুক্তভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর আমরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি।

এর এক মাস পর নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রথম পাতায় এমার ধর্ষণ ঘটনার বিবরণ দিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন ছাপা হয়। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়ে সিরিয়াল ধর্ষক হিসেবে পলের পরিচিতি।

পলের মা কারিন জানান, অভিযোগ এবং তা ব্যাপকভাবে প্রচারের পর আমাদের ওপর অনেক হুমকি আসে। পলকে হত্যার হুমকিও আসে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে কিছু একটা করার জন্য অনুরোধ জানাই বারবার কিন্তু তারা কিছুই করেনি।

এরপর ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এমা ঘোষণা দেয় ‘যত দিন তার ধর্ষক পল বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকবে তত দিন সে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ম্যাট্রেস বহন করবে।

যে ঘোষণা সেই কাজ। এতে ভীষণভাবে ঘাবড়ে যায় পল। সে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে এর প্রতিবাদ জানায়। প্রতিবাদে সে জানায় এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মবিরোধী বটে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।

এমার ম্যাট্রেস বহনের ঘোষণার ভিডিও এ পর্যন্ত ২২ লাখেরও বেশিবার দেখা হয়েছে।

অপর দিকে ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির বিরদ্ধে প্রতীকে পরিণত হয় এমার ম্যাট্রেস পারপরম্যান্স বা ক্যারি দ্যাট ওয়েট কর্মসূচি। এই কর্মসূচির কারণে মার্কিন মুলুকের প্রভাবশালী অনেক গণমাধ্যমের পাতায় জায়গা দখল করে নেয় এমা। রীতিমতো তারকায় পরিণত হয় এমা। এমনকি স্টেট ইউনিয়নে ওবামার বক্তৃতা অনুষ্ঠানেও যোগদানের সুযোগ ঘটে এমার। আর নারীবাদী এবং নারী অধিকার রক্ষাবিষয়ক বিভিন্ন গ্রুপের প্রশংসায় ভাসতে থাকেন তিনি।

অপর দিকে ম্যাট্রেসের নিচে চাপা পড়েছে পলের ইমেজ। পল জানায়, আমি জানি আমার জীবন আর কখনো আগের মতো হবে না। রাস্তায় চলতে গেলেও শুনতে হয় আমাকে নিয়ে আলোচনা। আমাকে তারা চেনে না কিন্তু আমাকে নিয়ে আলোচনা চলছে লোকজনের জটলায়, ট্রেনে, সাবওয়েতে।

যৌন হয়রানির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলে প্রতিবাদ এবং ম্যাট্রেস প্রটেস্ট কর্মসূচি এমাকে যেমন ক্যাম্পাসে পোস্টারকন্যায় পরিণত করেছে, তেমিন পলকেও পরিচিত করেছে একজন ধর্ষক পোস্টারবয় হিসেবে। পলের মা জানান, আমরা এর বিরুদ্ধে অনেক লড়াই করেছি। মামলা করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রশ্রয়েই এমা এ কাজ চালিয়ে যেতে পেরেছে। আমাদের পক্ষে কেউ দাঁড়ায়নি।

তবে এমাকে মিথ্যাবাদী, প্রিটি লিটল লায়ার, আখ্যায়িত করে কেউ কেউ পলের পক্ষে পোস্টারিং করেছে। পোস্টারে দেখা যায় স্বল্প পোশাকে এমা মাথায় একটি ম্যাট্রেস বহন করছে।

পলের বয়স এখন ২৪। পলের বিরুদ্ধে এমার ধর্ষণের অভিযোগের কোনো প্রমাণ পায়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তার মানে পল এ পর্যন্ত যাদের সাথে একান্তে মিলিত হয়েছে সবই হয়েছে তাদের সম্মতির ভিত্তিতে। তারপরও এমাকে লাগাতার প্রতিবাদের সুযোগ করে দেয়া, তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো ধরনের বাধা না দেয়া এবং তার (পল) সুনাম ধ্বংসের অভিযোগে পল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। পলের আরো একটি অভিযোগ হলো সে ছেলে বিধায় বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এসব নজরে নেয়নি। যদিও এসংক্রান্ত আইনে ছেলে-মেয়ে কারো বিরুদ্ধে কোনো বৈষম্য না করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এ আইনের সুবিধা পাচ্ছে না পল, অভিযোগ পলের মা-বাবার।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলার পর এবং ডিগ্রি প্রদান অনুষ্ঠানের কিছুদিন আগে পল ক্যাম্পাসের পাশে একটি ভবনে অনুষ্ঠিত আর্ট প্রদর্শনীতে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ছবি সেখানে প্রদর্শন করা হচ্ছে। সেখানে একটি ছবিতে দেখা য”চ্ছ পল তার অন্তর্বাস খুলছে। এরপর সে তার পুরুষাঙ্গ প্রদর্শন করছে। আরেকটি ছবিতে দেখা যায় ম্যাট্রেসের ওপর উলঙ্গ পল। পাশে আরেক উলঙ্গ নারী।

এমা পলের বিরুদ্ধে পশ্চাৎদেশে ধর্ষণের যে বিবরণ দিয়েছে সেই বিবরণ মোতাবেক ছবি আঁকা হয়েছে এখানে, যা বর্ণনাযোগ্য নয়।

ডিগ্রি নিয়ে পল ফিরে গেছে জার্মানির নিজ শহর বার্লিনে। প্রায় এক মাসের চেষ্টায় নিউজউউকের সাংবাদিক একটি ক্যাফেতে বসে পলের সাক্ষাৎকার নেয়ার সুযোগ পান। পল জানায়, তারা খুব সচ্ছল নয়। দারিদ্র্য কোটায় স্কলারশিপ নিয়ে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পায় সে। কিন্তু ডিগ্রি অর্জন শেষে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশে তাকে বেগ পেতে হচ্ছে। যেখানেই যাচ্ছেন তাকে খুলে বলতে হয় ধর্ষণ ঘটনার বিষয়ে। এ কারণে অনেক প্রতিষ্ঠান থেকে ইতোমধ্যে প্রত্যাখ্যানও হয়েছেন।

যৌন হয়রানির অভিযোগ বেড়েছে ৪০০ গুণ

যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা বিভাগের অফিস ফর সিভিল রাইটস বর্তমানে ১৫২টি কলেজে ছাত্রীদের দায়েরকৃত ধর্ষণ এবং যৌন হয়রানির অভিযোগের তদন্ত করছে। ধর্ষণ এবং যৌন হয়রানির অভিযোগ আগের চেয়ে ৪০০ গুণ বেড়েছে। তদন্তে দেখা গেছে, প্রতি চারজনে একজন কলেজছাত্রী যৌন হয়রানির শিকার।

ভাসার কলেজে এক প্রফেসরের মেয়ে তার টিমমেটের সাথে একান্তে মিলিত হয়েছে। এ মিলন বিষয়ে পরে ফেসবুকে সে পোস্ট করেছে ‘সময়টা দারুণ উপভোগ করেছি’। মামলার ডকুমেন্টে এটা উল্লেখ আছে। কিন্তু এক বছর পর মামলা চলাকালে সে বলেছে, টিমমেটের সাথে তার যে মিলন হয়েছে তাতে তার সম্মতি ছিল না। তাকে একধরনের ফাঁদে ফেলে এটি করা হয়েছে। মেয়েটির এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ছেলেটিকে বহিষ্কার করা হয় কলেজ থেকে। পরে ছেলেটি মামলা করেছিল কিন্তু আদালত তা আমলে নেয়নি।

ওয়াশিংটন অ্যান্ড লি ইউনিভার্সিটির একটি ধর্ষণের অভিযোগের বিবরণে বলা হয় একটি মেয়ে তার এক সহপাঠী ছাত্রকে প্রথমে চুমু খেতে শুরু করে। এভাবে একপর্যায়ে মেয়েটি ছেলেটিকে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের দিকে টেনে নেয় । প্রথম দিনের এ ঘটনার এক মাসের মাথায় তারা আবার মিলিত হয়। এরপর মেয়েটি একটি যৌন হয়রানিবিরোধী সেমিনারে যোগ দেয় এবং সে তার সহপাঠীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ আনে। ঘটনার তদন্ত হয় এবং তদন্তকারী ছেলেটিকে অভিযুক্ত করে। অভিযোগ উঠেছে ছেলেটিকে অন্যায়ভাবে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

কোলগেট কলেজে ২১ বছর বয়সী লিউকের বিরুদ্ধে তিন ছাত্রী যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছে। তাদের সবার অভিযোগ, তাদের অনুমতি ছাড়া লিউক প্রথমে তাদের গায়ে হাত দিয়েছে। এরপর একপর্যায়ে সে তাদের সাথে মিলিত হয়েছে। লিউকের অভিযোগ, তাদের সাথে যা হয়েছে তা তাদের সম্মতিতেই হয়েছে। ধর্ষণের একটি অভিযোগ বিষয়ে লিউক বলেন, ওই ছাত্রী তার সামনেই টপলেস হয়ে তাকে প্রলুব্ধ করেছে ।

গ্র্যাজুয়েশন কোর্স শেষ করার ৩৯ দিনের মাথায় লিউককে বহিষ্কার করা হয় কলেজ থেকে।

মার্কিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় ধর্ষণ বা যৌন হয়রানি শুধু ব্যাপকভাবে বাড়ছে না ধর্ষণের অভিযোগ এনে প্রতিশোধ নেয়া হচ্ছে। উভয়ের সম্মতির ভিত্তিতে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের পর দেখা যাচ্ছে পরস্পরকে দোষারোপ করা হচ্ছে।

Back to top button