ইয়েমেনের হোদেয়াহ বন্দরে আগুনে লেগে বিশালসংখ্যক ত্রাণ ও খাবার ধ্বংস

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর হোদেয়াহতে আগুন লেগে অনেক ত্রাণ নষ্ট হয়ে গেছে। শনিবার এই অগ্নিকাণ্ডে রান্নার জ্বালানি ও খাবারসহ অনেক ত্রাণ ধ্বংস হয়েছে বলে জানিয়েছে ত্রাণকর্মীরা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের কারণে এই অগ্নিকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে। ২টা পর্যন্তও আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়নি দমকল বাহিনীরা।
মানবিক সহায়তার চরম সংকটে থাকা ইয়েমেনে এই বন্দর দিয়েই ত্রাণ পৌঁছাতো। গৃহযুদ্ধ ও দুর্ভিক্ষকবলিত ইয়েমেনে অব্যাহত রয়েছে মার্কিন সমর্থিত সৌদি জোটের হামলা। পাশাপাশি ‘সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের নামে প্রত্যক্ষ মার্কিন হামলাও রয়েছে। আর এই যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেই ২০১৬ সালে ইয়েমেনে কলেরার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর নাগাদ কলেরা আক্রান্তের সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়েছে। প্রাণ হারায় ২২০০ মানুষ।
যুদ্ধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেক ফসল ও হাসপাতাল। ইরান হুথিদের অস্ত্র সরবরাহ করছে এমন অভিযোগে দেশটিতে অবরোধ আরোপ করে সৌদি আরব। কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা এই অবরোধে আটকা পড়ে অনেক মানবিক সহায়তা। মূলত তখনই ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়ে ইয়েমেন।
এরপর অবরোধ শিথিল করা হলে জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার ত্রাণ যাচ্ছিল ইয়েমেনে। দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে থাকা দেশটিতে বড় অংশ ত্রাণ আসতো হোদেয়াহ বন্দর দিয়েই। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির এক কর্মী জানান, ‘আগুনে বিশালসংখ্যক ত্রাণ ও খাবার ধ্বংস হয়ে গেছে।
হুথি নিয়ন্ত্রিত বার্তা সংস্থা সাবাও আগুন লাগার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তবে কারণ জানাতে পারেনি তারাও। ত্রাণকর্মীরা জানান, সেখানে ইয়েমেনের বাস্তুহারাদের জন্য লাখ লাখ ম্যাটরেস ছিল।
২০১৪ সাল থেকে ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধ চলছে। ওই সময় শিয়া হুথি বিদ্রোহী ও তাদের মিত্ররা দেশটির প্রেসিডেন্ট আলি আব্দুল্লাহ সালেহকে হটিয়ে রাজধানী সানাসহ বেশ কিছু এলাকার দখল নেয়। এ সময় প্রেসিডেন্ট সালেহকে নির্বাসনে যেতে বাধ্য করে হুথি বিদ্রোহীরা। এক বছর পর সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন আরব জোট হুথি বিদ্রোহীদের উৎখাতে ইয়েমেনে আগ্রাসন শুরু করে। যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে ইয়েমেনের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। ঝুঁকিতে পড়ে লাখ লাখ মানুষ।