আইন-আদালত

পরিচ্ছন্ন নগরী নাগরিকের অধিকার

একটি সুস্থ ও পরিচ্ছন্ন নগরে বসবাস করা প্রতিটি নাগরিকের চাওয়া। বাস্তবতা ও প্রয়োজনের তাগিদেই বেড়ে ওঠে একেকটি শহর ও নগর। নতুন কর্মসংস্থানের সন্ধানে মানুষ শহর থেকে নগরের দিকে ছুটে চলে। আমাদের সমস্ত উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান রাজধানী ঢাকা কেন্দ্রিক হওয়ায় ঢাকা এখন জনসংখ্যার ভারে মুহ্যমান একটি মহানগরী।

সীমিত সম্পদ ও সীমাবদ্ধতার মধ্য ঢাকার বেড়ে ওঠা। প্রায় এক কোটির মতো মানুষের বসবাস এ শহরে। এ বিপুল জনসংখ্যার চাপে ঢাকা এখন দূষণের নগরীতে পরিণত হয়েছে। বিশ্বের অন্যতম বসবাস অযোগ্য শহর হচ্ছে ঢাকা। মানুষের সৃষ্ট যাবতীয় দূষণের কবলে পরে ঢাকার প্রাণ ওষ্ঠাগত।

পরিচ্ছন্ন ও দূষণমুক্ত ঢাকা এখন প্রায় দিবাস্বপ্ন। গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমরা মেয়র ও কমিশনার পদপ্রার্থীদের দেখেছি ঝাড়ু হাতে নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে। এটি পরিচ্ছন্ন নগরীর প্রয়োজনীয়তাকেই নতুন করে উপস্থাপন করেছে। সেই ধারাবাহিতকাতেই নতুন বছরে পরিচ্ছন্ন ঢাকা গড়তে সমন্বিত পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।

ক্রমবর্ধমান যানজট, জলাবদ্ধতা বর্জ্যের অব্যবস্থাপনা ঢাকার অন্যতম প্রধান সমস্যা। যানজটের জন্য ১০ মিনিটের পথ যেতে একঘন্টাও লেগে যায়। এভাবেই স্থির হয়ে পড়ছে ঢাকা। মানুষের পায়ে চলার জন্য নেই প্রয়োজনীয় ফুটপাত। সব দখল বেদখল হয়ে গেছে দোকানী ও হকারদের কাছে।

মূল সড়ক দিয়ে চলতে হয় পথচারীদের। ফলে দুর্ঘটনা এখন প্রায় প্রতিদিনের ঘটনা। ঢাকার রাস্তায় জনপরিবহণের অধিকাংশ বাসেরই ফিটনেস নেই। অন্তত দেখে তাই মনে হয়। এসব বাসের ইঞ্জিন ও বডির যে অবস্থা তাতে ফিটনেস আছে বলে মনে করার কোনো কারণ নেই। চালকদের বেপরোয়া গাড়ি চালনার ফলে দুর্ঘনায় পড়ে সাধারণ যাত্রী ও পথচারিরা। সব মিলিয়ে ঢাকার সড়কে বিরাজ করে এক চরম বিশৃংখলা।

এদিকে, প্রয়োজনের সাথে হচ্ছে নতুন সড়ক, ফ্লাইওভার ইত্যাদি। কিন্তু রাস্তায় যতোদিন শৃংখলা না আসবে ততোদিন রাস্তা বাড়িয়ে কোনো ফয়দা হবে না।

এক সময় কলকাতা ছিল জলাবদ্ধতার নগরী। সে জলাবদ্ধতা এখন ঢাকার ওপর ভর করেছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়ক তলিয়ে যায়। নাগরিকদের যততত্র বর্জ্য বিসর্জনই এর মূল কারণ। সেই সাথে যথাসময়ে বর্জ্য অপসারণ না হওয়ার ফলে এ সংকট আরো বাড়ছে।

সুস্থ ও পরিচ্ছন্ন নগরীতে নাগরিকদের নিরাপদ জীবনযাপন নিশ্চিত করার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে। সেই সাথে নাগরিকদের ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button