রাজনীতি

আইনের বাইরে পদক্ষেপ নেওয়া হলে অস্থিরতা বাড়বে: জাপা

নিউজ ডেস্ক : সামরিক শাসক এইচ এম এরশাদের গড়া ছাত্রসমাজকে নিষিদ্ধের যে প্রস্তাব ডাকসু তুলেছে, তার সমালোচনার করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।

তিনি বলেছেন, রাষ্ট্রীয় আইনের বাইরে এই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হলে অস্থিরতা বাড়বে।

দুদিন আগে ডাকসুর সভায় ধর্মীয় সংগঠনের পাশাপাশি জাতীয় ছাত্রসমাজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিষিদ্ধের প্রস্তাব পাস হয়।

গঠনের পর থেকে নানা কারণে বিতর্কিত এই ছাত্র সংগঠনটির তৎপরতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেকদিন ধরেই নেই। নব্বইয়ের গণআন্দোলনে এরশাদের পতনের পর থেকে সংগঠনটিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘নিষিদ্ধ’ ঘোষণা করে অন্য ছাত্র সংগঠনগুলো।

শনিবার বনানীতে নিজের রাজনৈতিক কার্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পার্টির দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ডাকসুর সিদ্ধান্ত নিয়ে কথা বলেন জি এম কাদের।

তিনি বলেন, “ছাত্রসমাজকে নিয়ে যে কথা এসেছে, তাতে আমি ব্যথিত হয়েছি। আমাদের দল জাতীয় পার্টির অঙ্গসংগঠন জাতীয় ছাত্র সমাজ সরকারি আইন স্বীকৃত সংগঠন। তাদের কর্মকাণ্ড কী করবে না করবে, তা সরকার থেকে নির্ধারিত করে দেওয়া আছে।

“কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের এই আইনের বাইরে গিয়ে কিছু করা, কিছু বিধান দেওয়ার সুযোগ আছে বলে আমার মনে হয় না। সরকারের প্রচলিত আইন নিয়ে কিছু বলা বা আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারও নেই। এগুলোতে দেশের অস্থিরতা বৃদ্ধি পাবে … দেশের উন্নয়ন হয়তো বাধাগ্রস্থ হতে পারে।”

দুর্নীতি ও অব্যবস্থার কারণে দেশে বিভিন্নভাবে ‘সামাজিক অস্থিরতা’ দেখা দিচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন সংসদে বিরোধী দলের এই নেতা। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের চলমান অভিযানে জাতীয় পার্টি সহযোগিতা করবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি।

জি এম কাদের বলেন, দেশে বেকার সমস্যা সৃষ্টির পেছনে দুর্নীতিই দায়ী।

সভায় জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সালমা ইসলাম, নাজমা আখতার ও আদেলুর রহমান আদেল উপস্থিত ছিলেন।

রাঙ্গাঁ বলেন, এরশাদ তার শাসনামলে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক যেসব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছেন, সেগুলো যদি মুক্তিযোদ্ধারা সঠিকভাবে মূল্যায়ন করে, তবে তারা অন্য দল ছেড়ে জাতীয় পার্টিতে চলে আসবে।

“মুক্তিযুদ্ধের উপরে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের যত কর্মকাণ্ড রয়েছে…মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে যারা এখনও জীবিত রয়েছেন বা তাদের যে প্রজন্ম রয়েছে, তারা যদি এসব দেখে বা পড়াশোনা করে, তাহলে বাংলাদেশের কোনো মুক্তিযোদ্ধা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলে থাকবে না। সবাই হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দলে আসবেন।”

এরশাদের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কাজের ফিরিস্তি তুলে ধরতে গিয়ে রাঙ্গাঁ সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধের কাজ সমাপ্ত করা এবং মুজিবনগর স্মৃতিসৌধের কাজ শুরু করা, বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবপ্রাপ্ত সাত শহীদের জন্য আবাসিক ভবন নির্মাণ, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের জন্য জমি বরাদ্দ করা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বৃদ্ধির কথা বলেন।

নতুন গড়ে উঠা সংগঠন মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পার্টি জাতীয় পার্টির সহযোগী সংগঠন হিসেবে এখনও স্বীকৃতি পায়নি। সেই স্বীকৃতির দাবি জানাতে এসে তারা সংবর্ধনা দেয় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে।

জি এম কাদের বলেন, ~আমাদের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান বলেছেন। তা আমাদের খেয়াল করতে হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকেই আজকে নেই। কিন্তু আমরা তাদের নাতি নাতনীদেরও সম্মান দেব। এই মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম পার্টির যথার্থতা রয়েছে।”

Back to top button