জাতীয়

১৩ বছরে ৮৭ লাইটার জাহাজডুবি, উদ্ধার ৪৮

চট্টগ্রাম সংবাদদাতা : ২০০৬ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত মাদার জাহাজ থেকে পণ্য নিয়ে গন্তব্যে যাওয়ার পথে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের (ডব্লিউটিসি) অধীনে থাকা ৮৭টি লাইটার জাহাজডুবির ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ গত ৭ আগস্ট সি চ্যাম্পিয়ন নামে একটি লাইটার জাহাজ মাদার ভেসেল থেকে পণ্য নিয়ে নগরবাড়ি যাওয়ার পথে মল্লিকপুর এলাকায় ডুবে যায়।

দুর্বল কাঠামোতে তৈরি এসব জাহাজ বে-ক্রসিংয়ের (সাগর অতিক্রমের) বিশেষ অনুমতি নিয়ে পণ্য পরিবহন করছে। নির্মাণ ত্রুটির কারণেই এগুলো ডুবে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। জাহাজডুবির ঘটনা কমিয়ে আনতে নদীপথের জাহাজ সমুদ্রপথে চলাচল না করা এবং অতিরিক্ত পণ্য বহন না করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

নৌবাণিজ্য অধিদফতরের সাবেক প্রিন্সিপাল অফিসার প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, অভ্যন্তরীণ রুটের নৌযানগুলো সাগরে চলাচলের উপযোগী করে নির্মাণ করা হচ্ছে না। এসব লাইটার জাহাজ কেবল মেঘনা নদী পর্যন্ত চলাচলের উপযোগী করে তৈরি হয়। তাই অভ্যন্তরীণ রুটের জাহাজগুলো সাগরে প্রবেশ করলে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ডুবে যাচ্ছে। দুর্বল কাঠামোতে তৈরি এসব লাইটার জাহাজ অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই করলেও তলা ফেটে ডুবে যাচ্ছে।’

ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের অধীনে নেই এমন লাইটার জাহাজডুবির ঘটনাও ঘটছে অহরহ। সর্বশেষ গত ৭ আগস্ট আবুল খায়ের গ্রুপের তিনটি জাহাজ; এমভি টিটু-১৬, এমভি টিটু-১৮ ও এমভি টিটু-১৯ চট্টগ্রাম-সন্দ্বীপ ও চট্টগ্রাম-জনতাবাজার নৌ-পথে নিমজ্জিত হয়।

ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেল (ডব্লিউটিসি) সূত্রে জানা যায়, ব্যক্তি মালিকানাধীন যেসব লাইটার জাহাজ ভাড়ায় পণ্য পরিবহন করে সেগুলো ডব্লিউটিসি-র অধীনে থাকে। এর বাইরে বিভিন্ন গ্রুপের মালিকানাধীন অনেক লাইটার জাহাজ রয়েছে যেগুলো তাদের নিজস্ব পণ্য পরিবহন করে। এসব লাইটার জাহাজ ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের (ডব্লিউটিসি) অধীনে নেই। ফলে এগুলোর ডুবে যাওয়া সংক্রান্ত তথ্য ডব্লিটিসির কাছে নেই।

বহিঃনোঙ্গরে অবস্থানরত মাদার ভ্যাসেল (বড় জাহাজ) থেকে পণ্য খালাসের জন্য বর্তমানে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের (ডব্লিউটিসি) অধীনে প্রায় ৯০০টি লাইটার জাহাজ রয়েছে বলে জানিয়েছেন ডব্লিউটিসি’র নির্বাহী পরিচালক মাহবুব রশিদ খান। ডব্লিউটিসি’র অধীনে থাকা লাইটার জাহাজগুলোর মধ্যে গত ১৩ বছরে ৮৭টি জাহাজ ডুবির ঘটনা ঘটেছে বলে তিনি জানান। এর মধ্যে ৪৮টি ডুবে যাওয়া জাহাজ ইতোমধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে।

মাহবুব রশিদ খান বলেন, ২০০৬ সালের ২১ ডিসেম্বর থেকে এ বছরের ৬ আগস্ট পর্যন্ত ৮৭টি লাইটার জাহাজ ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এসব জাহাজের অধিকাংশ সন্দ্বীপ চ্যানেল এবং কর্ণফুলীর মুখে ডুবে যায়।’ তিনি বলেন, ডুবে যাওয়া জাহাজগুলোর অধিকাংশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। গত ১৩ বছরে ডুবে যাওয়া ৮৭ জাহাজের মধ্যে ৪৮ জাহাজ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে বঙ্গোপসাগরের হাতিয়ার অংশে যেসব জাহাজ ডুবে যায়; সেগুলো উদ্ধার করা অনেক কঠিন। সেখানে ডুবে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পলি এসে ভরে যায়।’

Back to top button