জীবনযাত্রায় ব্যয় বেড়েছে সাড়ে ৬ শতাংশ -ক্যাব

নিজস্ব প্রতিবেদক: সদ্য সমাপ্ত ২০১৯ সালের জীবনযাত্রায় ব্যয় বেড়েছে সাড়ে ৬ শতাংশ। পণ্য ও সেবামূল্য বেড়েছে ৬ দশমিক ০৮ শতাংশ। এর আগে ২০১৮ সালে এই বৃদ্ধির হার ছিল যথাক্রমে ৬ শতাংশ এবং ৫ দশমিক ১৯ শতাংশ। অন্যদিকে ২০১৭ সালে ছিল ৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং ৭ দশমিক ১৭ শতাংশ।মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিগত ২০১৯ সালে উচ্চবিত্তের বাড়ি ভাড়া কিছুটা কমলেও নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্তের বাড়ি ভাড়ায় বাড়তি খরচ করতে হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে বস্তির ঘর ভাড়া।
ক্যাব সভাপতি জানান, ২০১৯ সালে উচ্চবিত্তের বাড়ি ভাড়া কিছুটা কমলেও নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্তের বাড়ি ভাড়ায় বাড়তি খরচ করতে হয়েছে। ক্যাবের প্রতিবেদন বলছে, নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্তের বাড়ি ভাড়া বেড়েছে গড়ে ৮.১৮ শতাংশ, বস্তির ঘর ভাড়া বেড়েছে ৯.৭৪ এবং মেস রুমের ভাড়া ৭.৯১ শতাংশ বেড়েছে।
ক্যাব সভাপতি জানান, ১১৪টি খাদ্যপণ্য, ২২টি নিত্যব্যবহার্য সামগ্রী এবং ১৪টি সেবার তথ্য নিয়ে পর্যালোচনা প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেদনের জন্য রাজধানীর ১৫টি খুচরা বাজার থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এসব পণ্য ও সেবা বাবদ পরিবারের মোট ব্যয় তুলনা করে শহুরে জীবনযাত্রার ব্যয়ের হিসাব বের করেছে সংগঠনটি। তবে এ হিসাবে শিক্ষা, চিকিৎসা ও যাতায়াত বাবদ যে ব্যয়, তা বাদ দেয়া হয়েছে।
ক্যাবের বিশ্লেষণ বলছে, ২০১৯ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে পেঁয়াজের দাম ছিল ২০-২৫ টাকা। নভেম্বর তা বেড়ে ২৫০ টাকায় ওঠে। মসলা জাতীয় পণ্য পেঁয়াজ, রসুন ও আদা ছাড়া অধিকাংশ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য সহনীয় এবং নিম্নমুখী ছিল। বছরের শেষ দিকে চালের দাম সামান্য বাড়লেও তা সহনীয় পর্যায়ে ছিল। তবে বছর শেষে আটা, ডিম, শাক-সবজিসহ বেশকিছু পণ্যের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী হয়। যা সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন ব্যয় বাড়িয়ে দিয়েছে। বছরের শুরুতে শাকসবজির দাম স্বাভাবিক থাকলেও শেষদিকে বেশ চড়া দামেই কিনতে হয়েছে ভোক্তাদের। সারাবছর বিভিন্ন ধরনের শাকসবজির মূল্য বেড়েছে গড়ে ৮.১৩ শতাংশ।
গোলাম রহমান বলেন, খাদ্যে নিরাপত্তা অর্জনের পর বছরজুড়ে নিরাপদ খাদ্য নিয়ে বেশ আলোচনা হয়েছে, যার বড় জায়গাজুড়ে ছিল ভেজাল ও দূষণ। তবে নতুন বছরের শুরুতেই তেল, চিনি, পেঁয়াজ, ডিম, সবজির বাড়তি দামকে একটি অশনিসংকেত হিসেবেই দেখছেন ক্যাব সভাপতি। নিত্যপণ্যের বাজার সরকারের নিয়ন্ত্রণে আসেনি বলেও জানান তিনি।
বিগত এক দশকে বিদ্যুতে অভাবনীয় উন্নতি হলেও বাড়তি ব্যয়ে চালানো কুইক রেন্টালগুলো সামগ্রিকভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহারের খরচকে ঊর্ধ্বমুখী করে তুলছে। ২০০৮ থেকে এ পর্যন্ত বিদ্যুতের পাইকারী মূল্য সাতবার এবং খুচরা মূল্য ৯ বার বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানিগুলো ভোক্তাদের নিকট চড়া মূল্যে বিদ্যুত বিক্রি করা সত্ত্বেও উৎপাদন ও বিতরণ ব্যয় সংকুলান সম্ভব হচ্ছে না এমন অজুহাত তুলে আবারও মূল্য বৃদ্ধির প্রক্রিয়া শুরু করেছে।