জাতীয়

দাম না পাওয়ায় হাওরে কমছে ধান চাষ, বাড়ছে ভুট্টা

কিশোরগঞ্জ সংবাদদাতা: উৎপাদন খরচের তুলনায় ফসল বিক্রি করে কম টাকা পাওয়ায় কিশোরগঞ্জের হাওর অঞ্চলে ধান চাষ কমেছে। বিকল্প ফসল হিসেবে এখন ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা। উৎপাদন খরচ কম, দাম ভালো এবং চাহিদা বেশি থাকায় ভুট্টা চাষে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে তাদের।

গত  কয়েক বছর ধরে লোকসানের কারণে কিশোরগঞ্জের হাওর অঞ্চলে ধান চাষে আগ্রহ হারাছেন কৃষকরা। ধান চাষ কমলেও বেড়েছে ভুট্টা ও সবজির চাষ। তাছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও আগাম বন্যায় হাওরাঞ্চলে ধান চাষে ঝুঁকিও রয়েছে। সেক্ষেত্রে ভুট্টা চাষে ঝুঁকি কম। কারণ বর্ষা আসার আগেই কৃষক ভুট্টা ঘরে তুলতে পারেন। ফলে বিকল্প ফসল হিসেবে দিন দিন বাড়ছে বাড়ছে ভুট্টার আবাদ।

মিঠামইন উপজেলার গোপদিঘী ইউনিয়নের হাসানপুর গ্রামের কৃষক মোতালিব মিয়া বলেন,  আমরা সব সময় ধান চাষ করতাম। আগাম বন্যায় অনেকবার আমাদের ধান তলিয়ে গেছে। আবার ধানের ফলন ভালো হলেও দাম পাই না। এজন্য এবার ভুট্টার চাষ করেছি। পানি আসার আগেই সেগুলো উঠিয়ে ফেলা যায় দামও ভালো পাওয়া যায়।

একই গ্রামের সিদ্দিক মিয়া বলেন, এবার আট একর জমির অর্ধেকে ধান আর আর অর্ধেক ভুট্টা করেছি। ধান চাষ করে সবসময় চিন্তার মধ্যে থাকি এই বুঝি পাহাড়ি ঢলে বাঁধ ভেড়ে সব তলিয়ে যাবে। তবে ভুট্টাটা আমাদের জন্য একদমই নিরাপদ একটা ফসল। আমার মতো অনেকেই এবার ধান বাদ দিয়ে ভুট্টা করেছে। গত বছর যে কয়েকজন ভুট্টা করেছিল তারা ধান চাষিদের তুলনায় অনেক লাভবান হয়েছেন।

এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জের কৃষি সম্প্রসারণের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক আশোক পারভেজ বলেন, হাওরের কৃষকরা দ্রুত ভুট্টা আবাদের দিকে ঝুঁকছেন। বিশেষ করে ধানের দাম কম পাওয়াতে। এছাড়া ধান চাষে সেচের জন্য যে পরিমাণ সেচ দেওয়া লাগে ভুট্টাতে তেমন লাগে না। তিনি আরও জানান,  গত কয়েক বছর আগেও এলাকায় ৫০ হেক্টরের মতো জমিতে ভুট্টা হতো। এখন তা আশ্চর্যজনকভাবে বাড়ছে। এ বছর হাওর এলাকায় প্রায় ৬ হাজার ৬৭০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে।

Back to top button