কৃষিজাতীয়

বরেন্দ্রের মাটিতে মসলা চাষ, চাষ হচ্ছে কালোজিরার

রাজশাহী সংবাদদাতা: রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলের অপেক্ষাকৃত শক্ত-এঁটেল মাটিতে সেচ সাশ্রয়ী নতুন নতুন ফসলের দিকে ঝুঁকছেন কৃষকরা। সফলতাও পাচ্ছেন। নানা জাতের ফসলের পাশাপাশি এবার তৈল ও মসলা জাতীয় প্রায় ১০ প্রকার ফসলের চাষ শুরু হয়েছে।

এরমধ্যে কালিজিরা, তিসি, কাউন, গুজিতিল, জাউন, ফিরিঙ্গী, শলুক, মৌরি, মেথী, ধনিয়া চাষ করছেন রাজশাহীর তানোর উপজেলার দুবইল গ্রামের কৃষক লিয়াকত আলী নামের এক কৃষক। প্রায় চার বিঘা জমিতে চাষ করা মসলা মধ্যে রয়েছে, দানাশস্য একটি, মসলা জাতীয় সাতটি, ও তৈল জাতীয় দুটি ফসল।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট বগুড়ার মসলা গবেষণা কেন্দ্র থেকে মসলা বীজ সংগ্রহ করে চাষ করা হচ্ছে। আর এতে কারিগরি ও প্রযুক্তি সহযোগিতা প্রদান করছেন স্থানীয় কৃষি বিভাগ। বরেন্দ্রে মসলা চাষে কৃষকদের আর্থিকভাবে সহযোগিতা ও উৎসাহ জোগাচ্ছেন বেসরকারী গবেষণা সংস্থা (বারসিক)।

এর আগে বরেন্দ্রের মাটিতে সর্বপ্রথম কালিজিরা চাষ করে সফলতা পান তানোর উপজেলার দুবইল গ্রামের মোজারুল ইসলাম নামের এক চাষী। তিনি দুই বছর আগে মাত্র ৫ শতক জমিতে কালিজিরা চাষ শুরু করেন। পরের বছর ১০ শতক এবং চলতি বছর এক বিঘা জমিতে কালিজিরা চাষ করেছেন।

কৃষক মোজারুল ইসলাম বলেন, কালিজিরা চাষে উৎপাদন খরচ নাই বললেই চলে। এক বিঘা জমিতে কালিজিরা চাষ করতে মাত্র দুই হাজার টাকা খরচ হয়। ফলন পাওয়া যাবে প্রায় চার মণ। প্রতিমণ কালিজিরার বাজার মুল্য ৬ হাজার টাকার উপরে। যা অন্য যে কোন ফসলের চেয়ে লাভজনক।

এদিকে কৃষক মোজারুলের কালিজিরা চাষে সফলতা দেখে, একই গ্রামের লিয়াকত আলী নামের এক চাষী চলতি মৌসুমে কালিজিরাসহ ১০ প্রকার মসলা চাষ করেছেন। তার খেতে এখন মসলা জাতীয় ১০ প্রকার ফসল শোভা পাচ্ছে। সকল প্রকার মসলা চাষ করে সফলতার পাওয়ার আশা করছেন লিয়াকত আলী।

কৃষক লিয়াকত আলী বলেন, গ্রামের কালিজিরার প্রথম চাষী মোজারুল। তার সফলতা দেখে আমি মসলা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠি। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট বগুড়ার মসলা গবেষণা কেন্দ্র হতে কালিজিরার পাশাপাশি তিসি, কাউন, গুজিতিল, জাউন, ফিরিঙ্গী, শলুক, মৌরি, মেথী, ধনিয়া বীজ সংগ্রহ করে চাষ শুরু করেছি। আর এতে কারিগরি ও প্রযুক্তি সহযোগিতা প্রদান করছেন স্থানীয় কৃষি বিভাগ।

চাষী লিয়াকত আলী আরও বলেন, খেতে এখন পর্যন্ত যে মসলা গাছ রয়েছে তাতে লাভবান হওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এসব মসলা চাষ করে পোকামাকড় কম লাগে, উৎপাদন খরচ নাই বললেই চলে। ধান-সবজির চেয়ে মসলা চাষ করে তিনগুণ লাভ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তানোর উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সমশের আলী বলেন, বরেন্দ্রে কড়া মাটিতে পানি সাশ্রয়ী এমন ফসল উৎপাদন হবে এমন ভাবাই যেতনা। বর্তমানে যে প্রকার সবজি ও নানা প্রকার রবিশস্য উৎপাদন হচ্ছে তা অন্য অঞ্চলকে ছাড়িয়ে গেছে। এসব ফসল স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলে যাচ্ছে।

Back to top button