আন্তর্জাতিক

চীনে দুই মাসে দুই কোটি মোবাইল গ্রাহক উধাও !

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মহাগযব করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনের উহানে। মৃতের সংখ্যায় চীনকে ছাড়িয়ে গেছে ইতালি। তবে মৃত্যুর ভয়াবহ বিভীষিকাটা চীনারাই দেখেছে আগে। দেশটির মোবাইল ফোন অপারেটরদের একটি পরিসংখ্যানের আপনার মনে প্রশ্নের উদ্রেগ জাগাতে পারে। সেখানে গেল দুই মাসে তিনটি অপারেটর থেকে প্রায় দুই কোটি ১০ লাখ গ্রাহক ‘নাই’ হয়ে গেছে।

চীনা মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো প্রতিমাসেই তাদের তথ্য প্রকাশ করে। গ্রাফে দেখা যায়, গত বছরও ক্রমান্বয়ে বাড়ছিল মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী। তবে এ বছর জানুয়ারি মাসে তা ব্যাপক হারে কমতে শুরু করে। ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তা কমতে কমতে দুই কোটি গ্রাহক ‘নাই’ হয়ে যায়।

মোবাইল অপারেটরগুলোর ওয়েবসাইটে দেয়া তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারি মাসে চায়না মোবাইল লিমিটেড হারিয়েছে সবচেয়ে বেশি ৮০ লাখ গ্রাহক, চীনা ইউনিকম হংকং লিমিটেড হারিয়েছে ৭৮ লাখ এবং চীনা টেলিকম করপোরেশন হারিয়ে ৫৬ লাখ গ্রাহক।

এতসংখ্যক গ্রাহক কমার প্রভাব পড়েছে কোম্পানিগুলোর শেয়ার দরেও। গতকাল সোমবার এই তিন মোবাইল অপারেটরের শেয়ারেও পতন হয়েছে। হংকং স্টক এক্সচেঞ্জে চায়না মোবাইল লিমিটেড শেয়ারদর হারিয়েছে ২ দশমিক ৭ শতাংশ, যেখানে এক্সচেঞ্জটির মূল সূচক হ্যাং সেং পয়েন্ট হারিয়েছে ৪ দশমিক ৯ শতাংশ। এছাড়া অন্য দুই অপারেটর চায়না টেলিকম হারিয়েছে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ এবং চায়না ইউনিকম হংকং লিমিটেড হারিয়েছে ৬ দশমিক ৪ শতাংশ।

এত সংখ্যক গ্রাহক কোথায় গেল- এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে চীনের মানবাধিকার কর্মী ও লেখক জেনিফার জেং। সে লিখেছে, ‘জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে চীনের বড় তিনটি মোবাইল অপারেটর একত্রে দেড় কোটি গ্রাহক হারিয়েছে। তারা এখন কোথায়?’

অবশ্য এর ব্যাখ্যা দিয়েছে মার্কিন ব্রোকারেজ হাউজ ‘সানফোর্ড সি বার্নস্টেইন অ্যান্ড কোম্পানি’-র বিশ্লেষক ক্রিস লেন। সে বলছে, ‘গ্রাহক পতনের বড় কারণ হতে পারে দেশটির স্থানীয় ও বিদেশী কর্মজীবী মানুষ। বিদেশীদের বেশিরভাগই নিজ দেশে ফিরে গেছে। আবার চীনের অনেকেই এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে কাজ করেন এবং অফিস থেকে তাদের ফোন নম্বর সরবরাহ করা হয়। মহাগযব করোনার প্রকোপ শুরু হলে অনেকেই নিজ নিজ অঞ্চলে ফিরে গেছে। ফলে তাদের মোবাইল নম্বরগুলো অকার্যকর হয়ে গেছে।’

এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ কয়েকটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে, শতশত মোবাইল ফোন ময়লা তোলার বেলচায় করে জড়ো করে বস্তায় ভরা হচ্ছে। এ সম্পর্কে বিস্তারিত তেমন জানা না গেলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীদের ধারণা,মহাগযব  করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা তাদের পুরনো মোবাইল আর ব্যবহার করছে না। এর ফলেও কমে গেছে গ্রাহক সংখ্যা।

চীনে ইতোমধ্যে কারখানা ও অন্যান্য কাজকর্ম স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। ক্রিস লেনের ধারণা, দেশটিতে এ মাসের মধ্যেই সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে আসবে।

সূত্র: ব্লুমবার্গ

Back to top button