অর্থ-বাণিজ্য

সরকারী বিধিনিষেধে ডেইরি খাতে প্রতিদিন ক্ষতি ৫৭ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিধর্মী দেশগুলোতে গজবস্বরূপ করোনা হানা দিলেও এই গজবকে মহামারী হিসেবে মিথ্যাচার করছে দেশের মিডিয়াগুলো। পাশাপাশি করোনার অজুহাত দিয়ে সারাদেশে নানা রকমের বিধিনিষেধ জারী করেছে সরকার। যার মধ্যে মসজিদে জামায়াত বন্ধ, ওয়াজ মাহফিল বন্ধ, হাট-বাজার, গণপরিবহন ইত্যাদি বন্ধ করে দিয়েছে। সারাদেশে একপ্রকার অদৃশ্য লকডাউন চলছে। ফলে বিপাকে পড়েছে দেশের অর্থকরী খাতগুলোর ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তারা।

সরকারী নানা বিধিনিষেধের কারনে দেশের যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় বন্ধ। পাশাপাশি সরকার থেকে ঘোষণা দেয়া টানা ১০ দিন ছুটির কারণে জনজীবন স্থবির হয়ে যাবে। এ পরিস্থিতিতে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে ডেইরি খাত। জানা গেছে, প্রতিদিন ১২০ লাখ থেকে ১৫০ লাখ লিটার দুধ অবিক্রীত থেকে যাচ্ছে। এতে দেশের খামারিদের প্রতিদিন প্রায় ৫৭ কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। আগামী এক মাস এ অবস্থা চলতে থাকলে এই ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ১ হাজার ৭১০ কোটি টাকা।

বুধবার ই-কনফারেন্সে বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিএফএ) প্রেসিডেন্ট ইমরান হোসেন এ কথা জানান।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে দুগ্ধ খামার শিল্পকে রক্ষার্থে বিডিএফএ আয়োজিত ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে বার্ষিক প্রায় ৯৯ লাখ মেট্রিক টন দুধ উৎপাদন হচ্ছে, যা মোট চাহিদার প্রায় ৭০ শতাংশ। প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৫০ লাখ লিটার দুধ অবিক্রীত থাকায় খামারিদের ক্ষতি হচ্ছে ৫৭ কোটি টাকা।

এক মাসে এই ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ১ হাজার ৭১০ কোটি টাকা। কারণ সাত দিন ধরে প্রান্তিক পর্যায়ের খামারিরা দুধ বিক্রিতে বেশ অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন। বাধ্য হয়ে দেশের কোথাও কোথাও তারা প্রতি লিটার দুধ ১০ থেকে ১২ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন। কোথাও কোথাও অনেক খামারি দুধ বিক্রিও করতে পারছেন না।

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, বর্তমানে দেশে প্রায় সাড়ে তিন লাখ দুগ্ধখামারের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষের জীবিকা নির্ভরশীল। বাংলাদেশে দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাত কোম্পানিগুলো দেশের মোট উৎপাদিত দুধের মাত্র ৫ শতাংশ প্রতিদিন সংগ্রহ করেন। এর পরিমাণ মাত্র ১৩ লাখ ৫৯ হাজার লিটার। বাকি ২ কোটি ২৮ লাখ ৩৬ হাজার লিটার খামারিরা মিষ্টির দোকানগুলো ও বাসাবাড়িতে বিক্রি করেন। দেশে নানা অস্থিরতা দেখা দেওয়ায় বর্তমানে মিষ্টির দোকান সবই বন্ধ হয়ে গেছে।

বিডিএফএ প্রেসিডেন্ট ইমরান হোসেন বলেন, দেশের দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতের তিনটি বড় কোম্পানির প্রতিদিন প্রায় সাড়ে তিন লাখ লিটার দুধ সংগ্রহ করে গুঁড়া দুধ তৈরির সক্ষমতা রয়েছে। একই সঙ্গে আরও ১০ থেকে ১২টি কোম্পানির ঘি, মাখন, ফ্লেভারড মিল্ক, আইসক্রিম, ক্রিম তৈরির সক্ষমতা আছে। সরকার ও দেশের দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতের কোম্পানিগুলোর সহযোগিতা না পেলে অচিরেই প্রায় ৫০ শতাংশ খামার বন্ধ হবে।

 

Back to top button