জাতীয়

ন্যায্য মূল্য না পেয়ে বিপাকে মরিচ চাষিরা

মানিকগঞ্জ সংবাদদাতা: মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে ঘিওর উপজেলাসহ মানিকগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায়। ফলন ভালো হলেও ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। উৎপাদন খরচ, ক্ষেত থেকে মরিচ তুলে বাজারে নিয়ে বিক্রি করতে যে টাকা খরচ হয় সে টাকাও উঠছে না। এতে চাষিরা মরিচ নিয়ে পড়েছেন মহাচিন্তায়।

এবার মরিচের দাম আর যদি না বাড়ে তা হলে মোটা অংকের টাকা লোকসান গুণতে হবে এ অঞ্চলের চাষিদের। অপরদিকে লকডাউন পরিস্থিতির কারণে বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় প্রায় শূন্যের কোটায় মানিকগঞ্জের কাঁচা মরিচের রফতানি বাজার। নামে মাত্র অল্প কিছু মরিচ পাঠানো হচ্ছে বিদেশের বাজারে। চাহিদা থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। যার প্রভাব পড়েছে স্থানীয় হাট-বাজারে। এতে করে লোকসানে রয়েছে মানিকগঞ্জের মরিচ চাষিরা।

মানিকগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্ত সূত্রে জানা যায়, গত বছর মরিচের দাম ভালো হওয়াতে এবার মরিচের আবাদ বেড়েছে এবং ফলনও ভালো হয়েছে। এ বছর ৫ হাজার ৭০৯ হেক্টর জমিতে মরিচ আবাদের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হলেও আবাদ হয়েছে ৬ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে। গতকাল বৃহস্পতিবার জেলার বৃহত্তর মরিচ হাট বরংগাইলে গিয়ে দেখা গেছে, বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শত শত কৃষক বস্তা ভর্তি মরিচ নিয়ে বসে আছেন একটু ভালো দাম পেয়ে বিক্রির আশায়। কিন্তু তাদের এই আশা সফল হয়নি। এক সপ্তাহ ধরে কাঁচা মরিচের দাম একই জায়গাতেই রয়ে গেছে।

পাইকারী ব্যবসায়ী মনির হোসেন জানালেন, এবার দুই লাখ টাকা নিয়ে মরিচ কেনা বেচায় নেমেছিলাম। এ পর্যন্ত ৮০ হাজার টাকা খোয়া গেছে। তিনি বলেন, বরংগাইল হাট থেকে প্রতিদিন মরিচ কিনে চট্রগামে পাঠাই। ব্যবসা টিকিয়ে রাখার জন্য এই ক্ষতি মেনে নিতে হচ্ছে।

বরংগাইল পাইকারি মরিচ বাজারের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক জানান, প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ টন মরিচের আমদানি হয় বরাংগাইল বাজারে। এখান থেকে ৩২ জন আড়তদার মরিচ কিনে দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন বাজারে পাঠান। তবে বিমান চলাচল সীমিত হয়ে যাওয়ায় বিদেশের বাজারে মরিচ রফতানি করা যাচ্ছে না। যে কারণে চাহিদা কমেছে মরিচের। আর এতে করে লোকসান গুনতে হচ্ছে চাষিদের।

বরংগাইল হাটে মরিচ বিক্রি করতে আসা এক কৃষক জানায়, অন্যের কাছ থেকে এক বছরের জন্য বর্গা নিয়ে ১৪ হাজার টাকা খরচ করে মরিচ ক্ষেত করেছিলাম। কিন্তু আমাগো এখন মাথায় হাত। মরিচের দাম নাই। এই হাটে মরিচ বিক্রি করতে আসা অনেক কৃষকের ধারনা, এখান থেকে পাইকরারা কম দামে মরিচ কিনে শহরের বেশি দামে বিক্রি করছে। শহরের সাথে গ্রামে দামের ফারাক আকাশ পাতাল।

Back to top button