ব্যথানাশক ট্যাবলেটে ইয়াবার বিকল্প নেশা!
বগুড়া সংবাদদাতা: বগুড়ার ধুনট উপজেলায় মাদকের বিকল্প হিসেবে নিষিদ্ধ ব্যথানাশক বিভিন্ন ধরনের ট্যাবলেটের চাহিদা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। পুলিশের মাদকবিরোধী তৎপরতায় ইয়াবা-হেরোইন-ফেনসিডিলের দাম বেড়ে যাওয়ায় স্বল্প দামের এসব ট্যাবলেট মাদকসেবীদের কাছে অধিক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই ফার্মেসিগুলোতে অবাধে বিক্রির সুযোগে ব্যথানাশক বিভিন্ন ওষুধ সেবনের দিকে ঝুঁকে পড়ছে মাদকাসক্তরা।
জানা গেছে, মাদকের বিকল্প হিসেবে সব ধরনের ব্যথানাশক ট্যাবলেটের চাহিদা নেই। বেশ কিছু ওষুধ কোম্পানি ব্যথানাশকের নামে কৌশলে নেশা জাতীয় ট্যাবলেট বাজারজাত করে থাকে। এসব ওষুধ সেবন করলে ব্যথার পাশাপাশি ঘুম ও নেশার চাহিদা মেটায়। এটি ওষুধ কোম্পানির মার্কেটিং অফিসারদের মাধ্যমে গোপনে ওষুধের দোকানগুলোতে প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়। বিভিন্ন কোম্পানি ভিন্ন ভিন্ন নামে এসব ব্যথানাশক ট্যাবলেট বাজারে ছেড়েছে।
দিনের চেয়ে রাতে এই ট্যাবলেটের চাহিদা অনেকগুণে বেড়ে যায়। তাই প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই ওষুধের দোকানগুলোতে মাদকসেবনকারীদের আনাগোনা বাড়তে থাকে। তারা ওষুধের দোকান থেকে অবাধে নিষিদ্ধ ব্যথানাশক ট্যাবলেট কিনে সেবন করছে। এসব ব্যথানাশক ওষুধ চলতি বছরের ১০ জুলাই সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এরপরও কিছু অসাধু ওষুধ ব্যবসায়ী অধিক লাভের আশায় মাদকসেবীদের কাছে গোপনে এসব ট্যাবলেট বিক্রি করছে।
ব্যথানাশক ট্যাবলেট কিনতে আসা একাধিক সেবনকারী জানান, প্রশাসনের কঠোর তৎপরতায় বাজারে ইয়াবা ট্যাবলেটসহ সব ধরনের মাদকের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। দামও অনেক চড়া। তাই ইয়াবার বিকল্প হিসেবে এসব ওষুধ বিকল্প নেশাদ্রব্য হিসেবে সেবন করছি। এরমধ্যে শুধু একটিতে হুবহু হেরোইনের স্বাদ পাওয়া যায়। বাকি সব ট্যাবলেটে ইয়াবার মতো নেশা হয়। ব্যথানাশক ট্যাবলেট সেবনে ঘুম ভালো হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এক ধরনের ফিলিংসও পাওয়া যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ওষুধের দোকানের মালিক বলেন, বর্তমানে মাদকসেবীদের কাছে ব্যথানাশক ট্যাবলেট ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মাদকসেবীদের শতকরা ৬০-৬৫ ভাগই এখন ব্যথানাশক ট্যাবলেটে আসক্ত। বেশি চাহিদার কারণে এসব ট্যাবলেটের খুচরা মূল্য ২৫-৩০ টাকা হলেও বর্তমানে প্রতি পিচ ট্যাবলেট ১০০-১৫০ টাকা দামে বাজারে বিক্রি হচ্ছে।
ধুনট থানার ওসি কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, সব ধরনের মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখা হয়েছে। মাদকের বিকল্প হিসেবে নিষিদ্ধ ব্যথানাশক ট্যাবলেট সেবনের কোনো তথ্য পাওয়া গেলে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্ত জানায়, বাজারে যে সকল ফার্মেসিতে নিষিদ্ধ ব্যথানাশক ট্যাবলেট বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে। কোনো দোকানে নিষিদ্ধ ব্যথানাশক ট্যাবলেট পাওয়া গেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।