কৃষি

বস্তায় আদা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের

নিউজ ডেস্ক: বাড়ির আঙ্গিনায় ছেঁড়া বস্তা আর অব্যবহৃত ব্যাগে আদা চাষ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলের কয়েকশ’ পরিবার। পরিবারের চাহিদা পূরণ করে পরিবারে বাড়তি আয়ের জন্য বাড়ির আঙ্গিনায় ছায়াযুক্ত স্থানে চার থেকে পাঁচটি প্লাস্টিকের বস্তা বা ব্যাগে মাটি ভরে আদা চাষে আগ্রহ বাড়ছে জেলার রানীশংকৈলের কৃষক-কৃষানিদের মধ্যে। একেকটি বস্তা থেকে ২ থেকে ৩ কেজি আদা পাওয়ায় বস্তায় আদা চাষে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে উপজেলাজুড়ে। তাদের এ চাষ পদ্ধতিতে আগ্রহ দেখিয়েছে কৃষি দপ্তর। আর এ বস্তায় আদা চাষ করে বাড়তি আয়ের স্বপ্ন দেখছেন গৃহকর্তাসহ গৃহিণীরাও।

সমন্বিত খামার ব্যবস্থাপনা কম্পোনেন্ট-২য় পর্যায় এর আওতায় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদের নিজ উদ্যোগে ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলের ভবান্দপুর, বলঞ্চা, হোসেনগাঁও, নরগাঁও, মুনিষগাঁও, মাধবপুরসহ এ রকম ১৫টি এলাকায় গড়ে উঠেছে ১৫টি কৃষক মাঠ স্কুল। একেকটি পরিবারের

স্বামী-স্ত্রীকে নিয়ে ২৫ সদস্য নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে একেকটি স্কুল। আর এ ১৫টি কৃষক মাঠ স্কুলকে দেখাশোনা করছে ছয়জন ফার্মারস ফ্যাসিলেটর।

ভবানদপুর কৃষক মাঠ স্কুল সদস্য মামুনুর রশিদ বলেন, কৃষি অফিস এবং আমাদের স্কুলের ফার্মারস ফ্যাসিলেটরের সহযোগিতায় বস্তায় আদা চাষ করি। আটটি বস্তার মধ্যে তিন থেকে চারটি আমার ভুলের কারণে নষ্ট হলেও বাকি বস্তার আদাগুলো অনেক ভালো হয়েছে এবং ভালো ফলন পাব বলে আমরা আশা প্রকাশ করছি। এতে করে আমাদের পরিবারে মসলার চাহিদা পূরণ হবে এবং আদা কেনার জন্য আমাদের আর অতিরিক্ত খরচ করতে হবে না। আমাদের বস্তায় আদা চাষ দেখে আমাদের আশপাশের বাড়িগুলোয়ও আদা চাষ হচ্ছে। কৃষি অফিসের এ কৃষক স্কুলের সদস্য হয়ে আমরা নিজেদের ধন্য মনে করছি এবং তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

হোসেনগাঁওয়ের আরেক সদস্য বলেন, আমরা যে বস্তায় আদা চাষ করছি এর জন্য আমাদের অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে না। কিছু অল্প টাকায় বাজার থেকে আদা কিনে বস্তায় চাষ করছি। কয়েক মাসের মধ্যে আমরা বস্তা থেকে কেনা আদার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি আদা পাচ্ছি। এতে আর্থিকভাবে আমরা অনেক লাভবান হচ্ছি। ফার্মারস ফ্যাসিলেটর আবদুর রহমান জানান, আমরা কৃষকের উপাদানগুলোর (সম্পদগুলো) ওপর হাতেকলমে প্রশিক্ষণ দিই। আমার আয়ত্তে পাঁচটি স্কুল রয়েছে আর একেকটি স্কুলে ২৫টি পরিবার এতে ১২৫টি পরিবারে আদা চাষ হচ্ছে তাদের দেখে পার্শ্ববর্তী পরিবারগুলো বস্তায় আদা চাষে আগ্রহী হচ্ছে ও চাষ করছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সঞ্জয় দেবনাথ জানান, মশলাজাতীয় ফসলের মধ্যে আদা অন্যতম। রান্নার মসলা, ভেজষ ঔষুধি গুণাগুণ থাকা এবং পরিবারের চাহিদা পূরণ করে বাড়তি আয়ের জন্য আমরা প্রশিক্ষণ ও উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে রানীশংকৈল উপজেলার প্রতিটি বাড়িতে আদা চাষ করার পদক্ষেপ নিয়েছিলাম। এর ফলে প্রায় প্রতিটি বাড়িতে বস্তায় আদা চাষ করা হচ্ছে। আর এতে বাজার থেকে আদা কেনার জন্য অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে না।

Back to top button