আন্তর্জাতিক

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর কাছে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিক্রিতে আগ্রহী তুরস্ক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: দক্ষিণ এশিয়ায় প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিক্রি বাড়ানোর আশা প্রকাশ করেছেন তুরস্কের সরকারি কর্মকর্তা ও শিল্প নির্বাহীরা। বিশেষ করে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানকে তারা নতুন উদীয়মান বাজার বলে মনে করেন।

এক সিনিয়র ক্রয় কর্মকর্তা বলেন, তুর্কি নির্মাতাদের জন্য এসব দেশ প্রতিশ্রুতিশীল বাজার।

উপরোক্ত তিন দেশ সম্পর্কে ভালোভাবে অবহিত এক তুর্কি কূটনীতিক বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার এই তিনটি দেশের সঙ্গে তুরস্কের মসৃণ, বন্ধুত্বপূর্ণ ও সমস্যামুক্ত রাজনৈতিক সম্পর্ক থাকায় এসব দেশের সঙ্গে রফতানি চুক্তি সইয়ে তুর্কি কোম্পানিগুলোর জন্য আশাবাদ জাগাতে পারে। তিনি বলেন, তুরস্কের তৈরি সিস্টেমগুলো স্থানীয় ব্যবহারের জন্য অনেক বেশি কমব্যাট-প্রুভেন। ফলে এসব দেশের আগ্রহ বাড়বে।

ক্যাপিটাল এক্সিবিশনের চেয়ারম্যান হাকান কুর্ত বলেন, তুরস্কের প্রতিরক্ষা ও এরোস্পেস শিল্পগুলোর জন্য পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান ‘হট মার্কেট’।

‘ডিফেন্স পোর্ট টার্কি সাউথ এশিয়া’ শীর্ষক প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে ক্যাপিটাল এক্সিজিশন।

কুর্ত বলেন, তুর্কি নির্মাতাদের এখন আর এক দশক আগের মতো বিক্রিযোগ্য প্লাটফর্মের অভাব নেই।

আগামী ১০ বছরে এই তিনটি দেশে তুরস্কের প্রতিরক্ষা ও এরোস্পেস রফতানি ৫ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়াতে পারে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

২০১৯ সালে তুরস্কের সার্বিক প্রতিরক্ষা রফতানির পরিমাণ ছিলো ২.৭৪ বিলিয়ন ডলার। তবে টার্গেট ছিলো ৩ বিলিয়ন ডলার।

অবশ্য এশিয়ার বাজারের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন আঙ্কারাভিত্তিক এক প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ।

তিনি বলেন, এসব দেশের প্রয়োজন হার্ডওয়্যার। তুরস্কের সঙ্গে তাদের ভালো রাজনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। তবে দেশগুলোর অর্থনীতি প্রায়ই অর্থ সঙ্কটে ভোগে। আবার লাইসেন্সিং সমস্যায় পড়তে পারে তুরস্ক। কারণ স্থানীয় উৎপাদনের জন্য তাকে অনেক বিদেশী প্রযুক্তির উপর নির্ভর করতে হয়।

২০১৮ সালে টার্কিশ এরোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ (টিএআই) পাকিস্তানের কাছে ৩০টি টি১২৯ আত্তাক হেলিকপ্টার বিক্রির জন্য ১.৫ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি সই করে। কিন্তু চুক্তিটি এগুতে পারছে না হেলিকপ্টারগুলোর ইঞ্জিনের লাইসেন্স যুক্তরাষ্ট্র থেকে সংগ্রহ করতে না পারার জন্য।

টুইন ইঞ্জিন টি১২৯ মাল্টিরোল হেলিকপ্টারগুলো ইটালিয়ান-ব্রিটিশ কোম্পানি আগস্টাওয়েস্টল্যান্ডের কাছ থেকে পাওয়া লাইসেন্সের আওতায় তৈরি করা হয়। এই হেলিকপ্টারে দুটি এলএইচটিইসি টি৮০০-৪এ টার্বোশ্যাফট ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়। প্রতিটি ইঞ্জিন ১,০১৪ কিলোওয়াট শক্তি উৎপাদন করতে পারে। টি৮০০-৪এ হলো সিটিএস৮০০ ইঞ্জিনের রফতানি সংস্করণ। ইঞ্জিনের নির্মাতা এলএইচটিইসি হলো আমেরিকান ফার্ম হানিওয়েল ও ব্রিটিশ কোম্পানি রোলস-রয়েসের একটি যৌথ উদ্যোগ।

ওই প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ বলেন যে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানে তুরস্ক যেসব প্রতিরক্ষা হার্ডওয়্যার বিক্রি করতে পারে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে যুদ্ধজাহাজ ও পেট্রল বোট (আফগানিস্তান ছাড়া), স্মার্ট এম্যুনিশন, ড্রোন ও সাঁজোয়া যান।

সূত্র: ডিফেন্স নিউজ

Back to top button