কৃষিদেশের সংবাদ

শরিফা চাষে সফল ব্যাংকার

মেহেরপুর সংবাদদাতা: দেশের বিলুপ্তপ্রায় ফল শরিফা। যার আঞ্চলিক নাম মেওয়া। এ ফলের বাগান করে বেশ সফলতা পেয়েছেন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চেংগাড়া গ্রামের ব্যাংকার বাহাউদ্দীন। তার বাগানে গাছের ডালে ডালে শোভা পাচ্ছে শরিফা। সুস্বাদু ও বেহেশতি ফল হিসেবে পরিচিত শরিফা চাষে বেশ লাভবান হয়েছেন তিনি। ১০ বিঘা জমিতে বাগান করে প্রতি বছর কয়েক লাখ টাকা আয় করেছেন তিনি। তার এ সফলতা এলাকার তরুণদের শরিফা বাগান করার অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে।

গাংনী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান চেংগাড়া গ্রামের বাসিন্দা দাউদ হোসেনের ছেলে বাহাউদ্দীন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে যমুনা ব্যাংকে চাকরি করেছেন। তবে বাগান করে সফলতা পাওয়ার পর তিনি চাকরিতে ইস্তফা দিয়েছেন। শখের বশে ব্যতিক্রমী কিছু করার চিন্তা নিয়েই ৩ বছর আগে গ্রামের মাঠে মাত্র ৪ বিঘা জমিতে শরিফা ফলের বাগান করেন। স্থানীয়ভাবে বীজ সংগ্রহ করে তা রোপণ করেন তিনি। প্রথম বছরে খরচ করেন মাত্র ২০ হাজার টাকা। পরের বছর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তার। সে বছর বাগানে উৎপাদিত শরিফা স্থানীয় ফল বিক্রেতাদের কাছে বিক্রি করে পান ৪০ হাজার টাকা। স্বল্প পুঁজি বিনিয়োগ করে বেশি লাভবান হওয়ায় আরও ৬ বিঘা জমিতে শরিফা বাগান করেন বাহাউদ্দীন। এ বছর তিনি ৫০ হাজার টাকা খরচ করে পেয়েছেন ২ লাখ টাকা। অনুকূল আবহাওয়া আর নিজের অদম্য পরিশ্রম এবং কৃষি অফিসের পরামর্শে তিনি শরিফা বাগান করে লাভবান হয়েছেন।

স্থানীয় ফল ব্যবসায়ী রহমান জানান, শরিফা ফল খুবই সুস্বাদু ও পুষ্টিকর হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা ব্যাপক। নিজের হাতে বাগান থেকে ফল সংগ্রহ করে স্থানীয় বাজার ও ঢাকায় পাঠানো হয়। অনলাইনেও বেচা-কেনা হয়। বাগান থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে কিনে সাড়ে ৪৫০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। এতে লাভ হয় বেশি। একই কথা জানান, ফল কিনতে আসা ব্যবসায়ী লিটন মিয়া।

শরিফা চাষে আগ্রহী কলেজ শিক্ষক রফিকুল আলম জানান, স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে গল্প শুনে বাগান দেখতে এসেছেন, শুনেছি স্বল্প খরচ আর অল্প পরিশ্রমে বেশি লাভবান হওয়া যায়। তিনি এ শরিফা চাষে সফলতার গল্প শুনেই পরামর্শ নিচ্ছেন বাগান করার। এরই মধ্যে দুই বিঘা জমি প্রস্তুত ও বীজ সংগ্রহ করেছেন তিনি। রফিকুল আলমের মতো অনেকেই বাহাউদ্দীন ও কৃষি অফিসে পরামর্শ নিচ্ছেন শরিফা বাগান করার জন্য।

Back to top button