জাতীয়

সবার নিরাপত্তায় ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা’ আইন: তথ্যমন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট: দেশের সবার নিরাপত্তায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অনলাইনে মানুষকে নিরাপত্তা দেয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সেই কারণেই এই আইন। একজন সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক, লেখক, গৃহিণী, ছাত্র, কৃষক, শ্রমিক, রিকশাওয়ালা ও গৃহবধূ সবার ডিজিটালি নিরাপত্তায় এ আইন। যেন কেউ কারও চরিত্র হরণ, অসত্য, ভুল সংবাদ পরিবেশন করে গুজব ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে না পারে।

বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে কে-ফোর্স অনলাইন সংগঠন আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

‘প্রেসক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে যে কয়েকজন ব্যক্তি ডিজিটাল আইন বাতিলের দাবি করেন, তারা আসলে গুজব রটানোর অবাধ অধিকার চান’ উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, পত্রিকায় শিরোনাম হয়, সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। সুশীল কি শুধু তারা পাঁচ-দশজন! দেশে হাজার হাজার মানুষ সুশীল, বহু মানুষ বুদ্ধিজীবী এবং প্রতিবাদকারী ওই দশজনের ডিজিটাল নিরাপত্তা দেয়ার জন্যও এই আইন।

মন্ত্রী বলেন, দেশ থেকে পরিচয় গোপন করে কোনও একটা পেইজ খুলে বা বিদেশ থেকে অনলাইনে সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়। এমনও হয় যে, ছেলেকে মেয়ে বা মেয়েকে ছেলে বানিয়ে দেয়া, জীবিত মানুষ মরে গেছে, সেই গুজবও পরিবেশিত হয়। পদ্মা সেতুতে বলি দেয়ার গুজব রটিয়ে সারা দেশে ছেলেধরা-আতঙ্ক ছড়ানোর অপচেষ্টায় নিরীহ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। করোনায় দেশে হাজার হাজার লাশ পড়ে থাকার গুজব ছড়ানোর অপচেষ্টা হয়েছে। করোনার টিকা ভারতের টিকা, অন্যদের ওপরে পরীক্ষার জন্য, এই টিকা কোনও কাজ করবে না- এমন গুজবও ছড়ানো হয়েছে। যারা ছড়িয়েছে, তারাই এখন টিকা নিচ্ছে, কেউ কেউ গোপনে নিয়েছে।’

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সর্বদা সোচ্চার থাকার আহ্বান জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, যেকোনও ধরনের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকুন। একইসঙ্গে দেশ, সরকার ও মানুষের অর্জনগুলো ফলাওভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করুন। দেশে প্রায় ৭ থেকে ৮ কোটি মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে। সুতরাং এখানে প্রচারটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কেউ একটি অপপ্রচার করলে সাথে সাথে সেটির বিরুদ্ধে ঠিক পোস্ট দেয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

বিএনপি মহাসচিবের সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব সরকারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উপস্থাপন করেছেন। ইসরাইলপ্রীতি হচ্ছে বিএনপি’র। কারণ খালেদা জিয়া যখন সরকারে ছিলেন, তখন ইসরাইলী বাহিনীর গুলিতে শতশত ফিলিস্তিনি নিহত হলো, তখন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এজন্য একটি শোক ও নিন্দা প্রস্তাব আনার জন্য পার্লামেন্টে পেশ করা হয়েছিল। খালেদা জিয়ার সরকার রাজি হয় নাই, তারা ইসরাইলের বিরুদ্ধে কোনও প্রস্তাব দিতে রাজি নয়। সুতরাং ইসরাইলপ্রীতি হচ্ছে বিএনপি’র।

সরকার ইসরাইলের কাছ থেকে কোনও ধরনের ইকুইপমেন্ট কেনে না জানিয়ে ড. হাছান বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যখন গুজব রটিয়ে কাজ হচ্ছে না, তখন বিদেশি মিডিয়া ভাড়া করে ভুয়া রিপোর্ট করানো হচ্ছে। সেই রিপোর্টও গাঁজাখুরি, কোনও মানসম্মত রিপোর্ট না, আমাদের দেশের টেলিভিশন চ্যানেল এমনকি বিভিন্ন অনলাইনেও এর চেয়ে ভালো রিপোর্ট হয়।

হাছান মাহমুদ বলেন, আসলে আজকে দেশ স্বল্পোন্নত থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে দেখে বিএনপি’র মাথা খারাপ হয়েছে। সরকারকে ধন্যবাদ দিতে লজ্জা লাগলেও অন্তত দেশটাকে তো তারা ধন্যবাদ দিতে পারতেন। সেটিও তারা করেননি। অর্থাৎ দেশের কোনও উন্নয়ন- অগ্রগতি তাদের পছন্দ নয়।’

Back to top button