জাতীয়

বিশ্ব ঐতিহ্য খুলনার সাবেকডাঙ্গা মসজিদ

নিউজ ডেস্ক: ইউনেস্কো কর্তৃক ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের (ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট) অন্তর্ভুক্ত সাবেকডাঙ্গা মনুমেন্ট। এটি স্থানীয়ভাবে সাবেকডাঙ্গা মসজিদ বা সাবেকডাঙ্গা নামাজ ঘর হিসেবে পরিচিত। প্রাচীন চৌচালা রীতিতে স্থাপিত এটিই একমাত্র নিদর্শন যা এখনো বাংলাদেশে টিকে আছে।

খুলনার খান জাহান আলী রহমাতুল্লাহি আলাইহির মাজার শরীফ থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার উত্তরে কাড়াপাড়া ইউনিয়নের সাবেকডাঙ্গা গ্রামে অবস্থিত এই পুরাকীর্তিটি। ষাট গম্বুজ মসজিদ থেকে ছয় কিলোমিটারের মধ্যে এর অবস্থান। এটি পঞ্চদশ শতাব্দীর মাঝামাঝিতে তৈরি করা বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। ধারণা করা হয় এটি হজরত খান জাহান আলী রহমাতুল্লাহি আলাইহির সময়ের অল্পকিছু পরে স্থাপিত। তবে প্রচলিত জনশ্রতি মতে, এটি হযরত খান জাহান আলী রহমাতুল্লাহি আলাইহির ইবাদত ঘর বা নামাজ ঘর।

একটি আয়তকার ভূমি কল্পনা করে এর মূল স্থাপনাটি গড়ে ওঠেছে। বাইরের দিকে এর দৈর্ঘ্য উত্তর-দক্ষিণে ৭.৮৮ মিটার এবং প্রস্থ পূর্ব-পশ্চিমে ৫.১০ মিটার করে। দেয়ালের পুরুত্ব ১.৪৭ মিটার। এর প্রবেশপথ দক্ষিণ দিকে। মূল স্থাপনায় এ ছাড়া আর কোনো দরজা বা জানালা ছিল না। মনুমেন্টটি তৈরি করতে লাল ইটের ব্যবহার করা হয়েছে। এর কার্নিশগুলো অনেকটা ধনুকের মতো বাঁকা। ছাদটি চৌচালা। গ্রামীণ দোচালা কুঁড়ে ঘরের মতো। ভেতরের দেয়ালে পোড়ামাটির ফুল আর লতাপাতার কারুকাজ করা। এই স্থাপনাতে দিল্লির তুঘলকি স্থাপত্য আর সাধারণ বাঙালি স্থাপত্যের একটা মিশেল দেখা যায়।

এই প্রাচীন স্থাপনাকে ঘিরে রয়েছে অনেক বিতর্ক। জনশ্রুতি মতে এটিকে খান জাহান আলীর ইবাদত ঘর হিসেবে পাওয়া গেলেও শুরুতে এটি মসজিদ ছিল না বলে প্রতœতত্ত্ববিদদের ধারণা।

১৯৮৫ সালে এটি বিশ্ব ঐতিহ্যের স্থান হিসেবে তালিকাবদ্ধ হয়। এরপর বাগেরহাটের অন্যান্য স্থাপনার সাথে সাবেকডাঙ্গা মনুমেন্ট সংস্কার ও সংরক্ষণের জন্য কয়েক দফায় কাজ শুরু হয়। সরকার এবং দেশী-বিদেশী বিশেষজ্ঞের নেতৃত্বে ২০০২ সাল পর্যন্ত এই সংস্কার কাজ চলে। বর্তমানে প্রতœতত্ত্ব অধিদফতর এই প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শনকে সংরক্ষিত ঘোষণা করেছে।

Back to top button