আইন-আদালত

ম্যাক এন্টারপ্রাইজের জব্দ পাথর নিলামে বিক্রিতে বাধা নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর কদমতলী থানার মুন্সিখোলা এলাকায় ম্যাক এন্টারপ্রাইজেসের পক্ষে বুড়িগঙ্গা নদীর জমির ওপর স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগ। এর ফলে ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জব্দ করা পাথর নিলামে তুলতে আপাতত কোনো বাধা থাকল না।

হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে বিআইডব্লিউটিএর করা আপিলের শুনানি শেষে রোববার (২৩ মে) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বিচারপতির আপিল বিভাগের ভার্চুয়াল বেঞ্চ আপিলটি নিষ্পত্তি করে দেন।

আদালতে আজ বিআইডব্লিউটিএর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট মফিজুর রহমান। অন্যদিকে ম্যাক এন্টারপ্রাইজেসের পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট প্রবীর নিয়োগি।

শুনানিতে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, সুপ্রিম কোর্টের একাধিক রায়ে সিএস রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত জায়গাকে নদীর জায়গা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে এবং আইন অনুযায়ী নদীর ফোরশোরের (নদীর তীরের পূর্ববর্তী অংশভূমি) অন্তর্ভুক্ত। তাই বুড়িগঙ্গা নদীর কদমতলী থানার মুন্সিখোলা এলাকায় নদীর ফোরশোরের জায়গা দখল করে অবৈধভাবে ম্যাক এন্টারপ্রাইজেসের পাথর ব্যবসা রায়ের পরিপন্থী রিট গ্রহণযোগ্য নয়। নদীর জায়গা অবৈধ দখল করে ম্যাক এন্টারপ্রাইজেস শুধু ব্যবসাই চালাচ্ছে না, বরং ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেডকে নদীর জায়গা ব্যবহারের জন্য সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে চুক্তিপত্র সম্পাদন করেছে।

তিনি আরও বলেন, বিআইডব্লিউটিএ আদালতের রায়ে বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিয়েছে। সে কারণে ম্যাক এন্টারপ্রাইজেসের অবৈধ দখল উচ্ছেদ বা পাথর নিলাম বিক্রয় অবৈধ নয়।

এর আগে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু ও শীতলক্ষ্যার দূষণ, অবৈধ দখল বন্ধে ২০০৯ সালে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) জনস্বার্থে করা রিট মামলায় রুল যথাযথ ঘোষণা করে ৯ দফা নির্দেশনা জারি করা হয়। ওই নির্দেশনা মোতাবেক সিএস ম্যাপ অনুসারে নদীগুলোর সীমানা জরিপ কাজ সম্পন্ন করে পিলার স্থাপন করা এবং নদী অভ্যন্তরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশনা ছিল অন্যতম।

আদালতের নির্দেশনা অনুসারে ২০১৯ সালের জুলাই বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ বুড়িগঙ্গা নদীর কদমতলী থানার মুন্সিখোলা এলাকায় নদীর ফোরশোরের জায়গা দখল করে অবৈধভাবে ম্যাক এন্টারপ্রাইজেসের পাথর ব্যবসা বন্ধ করে ২০ হাজার টন পাথর জব্দ করে নিলাম ডাক দেয়।একই বছরের ৫ আগস্টের মধ্যে মালামাল সরিয়ে নেয়ারও নির্দেশ দেয়া হয়।

পরে সে সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে ম্যাক এন্টারপ্রাইজসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবুল কাশেমের পক্ষে একটি রিট করা হয়। ওই রিটের শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান এবং বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ২০১৯ সালেল ২৯ অক্টোবর রুল জারি করেন এবং জমির দখলের উপর স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেন।

রিট পিটিশনে কদমতলি মৌজার ৫৯১, ৫৯২ এবং ৫৯৩ সিএস দাগের ২.৪০ একর সম্পত্তি ১৯৮৭ সালে সরকারের কাছ থেকে ক্রয় সূত্রে তাদের সম্পত্তি দাবি করে মহানগর জরিপে তাদের রেকর্ড মর্মে মালিকানা দাবি করা হয়।

Back to top button