জাতীয়

জেলে বসেই নতুন এমএলএম ব্যবসা ডেসটিনি রফিকুলের

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রতারণার মাধ্যমে গ্রাহকের হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে কারাগারে আছেন ডেসটিনি গ্রুপের এমপি রফিকুল আমীন। কিন্তু থেমে নেই সে। বন্দী অবস্থাতেই প্রতারণার নতুন পথ আবিস্কার করেছে সে। আর তা হচ্ছে- ‘ডিটুকে’ নামে নতুন এমএলএম কোম্পানি খুলেছে সে।

অসুস্থতার কারণে সে এখন বন্দি আছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ)। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে দুই মাস আগে বহুমূত্র রোগের কারণে বিএসএমএমইউতে আসেন রফিকুল আমীন।

জুম প্ল্যাটফরমের মাধ্যমে তার নেতৃত্বে বৈঠক হওয়ার একাধিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এক ঘণ্টার বেশি সময়ের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রফিকুল আমীনের নাম লেখা ইংরেজিতে ‘আর’। সে বৈঠকে অংশ নেওয়া অন্যদের দিকনির্দেশনা দিচ্ছে।

রফিকুল আমীনের সঙ্গে জুম বৈঠকে অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে সে বলছে, দেশের সব থানায় এজেন্ট নিয়োগ করতে হবে এবং অবশ্যই সৎ থাকতে হবে এই এজেন্টদের। আশ্বাস দিয়ে সে জানায়, বিদেশ থেকে অনেক টাকা আনা হবে। ১০০ টাকার শেয়ারে ১ হাজার ৮০০ টাকা লভ্যাংশ পাওয়া যাবে ইত্যাদি।

দুদকের করা মামলায় ডেসটিনির এমডি রফিকুল আমীন আট বছরের বেশি সময় ধরে কারাগারে আছে। কয়েক বছর আগে আদালতের এক রায়ে বলা হয়েছে, ২ হাজার ৮০০ কোটি টাকা জমা দিলে সে জামিন পেতে পারে।

ডেসটিনির কর্তাব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ৪ হাজার ১১৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে দুই মামলায় ৫৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয় আট বছর আগে। কোনো মামলারই সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়নি।

আদালতের নির্দেশে ২০১৩ সাল থেকে ডেসটিনির নামে থাকা বিপুল পরিমাণ স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ ও তদারকির দায়িত্ব পালন করছে পুলিশ। রাজধানীতে থাকা ডেসটিনির সম্পদ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এবং রাজধানীর বাইরের সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করছে সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ সুপার (এসপি)।

অর্থ হাতিয়ে নিতে মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সাংসদ, রাজনীতিবিদ, শীর্ষ সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা এবং ডিসি-এসপিদের ব্যবহার করেছেন রফিকুল আমীন। তাদের সঙ্গে ছবি তুলে জেলা, উপজেলাসহ সব অফিসে বড় বড় করে টাঙিয়ে রাখতো সে। নতুন গ্রাহক-পরিবেশকদের আস্থা অর্জনের জন্য এ ছিল তার কৌশল। অর্থাৎ সহজ-সরল মানুষদের বোঝানো যে এত বড় প্রভাবশালী মানুষ ডেসটিনির সঙ্গে আছেন।

প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ব্যবসায়ের অংশীদার করে, মাসোহারা দিয়ে এবং সেধে গিয়ে বড় বড় অনুষ্ঠানের স্পনসর করাও ছিল ডেসটিনির আরেক কৌশল।

Back to top button