কৃষিজাতীয়

ফারাক্কা দিয়ে ৪০ বছরে বাংলাদেশকে সবচেয়ে কম পানি দিচ্ছে ভারত

27

নয়া দিল্লি: চলতি শুষ্ক মৌসুমে ফারাক্কা ব্যারাজ দিয়ে গত ৪০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশকে সবচেয়ে কম পানি দিচ্ছে ভারত। যৌথ নদী কমিশনের হিসাবমতে, ভারত এ বছর বাংলাদেশকে গড় প্রবাহের চেয়ে ৩৫ হাজার ১৪১ কিউসেক পানি কম দিচ্ছে। সম্প্রতি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো একটি চিঠিতে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।

আজ সোমবার বেসরকারি টেলিভিশন এনটিভি’র অনলাইন সংস্করণে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের বরাবর জরুরি ভিত্তিতে মৌখিক প্রতিবাদ (নোট ভারবাল) পাঠানোর জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এ চিঠির মাধ্যমে অনুরোধ জানিয়েছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়।

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হাওলাদার জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত ‘২০১৬ সালের শুকনো মৌসুমে ফারাক্কায় গঙ্গার পানির লভ্যতা হ্রাস’ শিরোনামে গত ১৮ জানুয়ারি পাঠানো এ চিঠিতে এ কথা বলা হয়েছে। এতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, ‘চলতি ২০১৬ সালের শুকনো মৌসুমের জানুয়ারি মাসের প্রথম ১০ দিনে ফারাক্কায় পরিমাপ করা মোট প্রবাহ ছিল ৭২ হাজার ৩৩৫ কিউসেক, যা ৪০ বছরের গড় প্রবাহের চেয়ে ৩৫ হাজার ১৪১ কিউসেক কম। ফারাক্কায় গঙ্গা নদীর পানি বণ্টন চুক্তির অনুচ্ছেদ-২-এ উল্লেখ রয়েছে, ৪০ বছরের গড় লভ্যতা অনুযায়ী ফারাক্কায় ১০ দিনওয়ারি পানিপ্রবাহ সংরক্ষণ করতে উজানের দেশ (ভারত) সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবে।

গঙ্গা চুক্তির কয়েকটি ধারা উল্লেখ করে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, চলতি শুকনো মৌসুমে প্রথম ১০ দিনে ফারাক্কায় পরিমাপ করা মোট গড় পানিপ্রবাহ চুক্তির সময়ে যেকোনো ১০ দিনের পরিমাপ করা পানির তুলনায় সর্বনিম্ন। এ ছাড়া জানুয়ারি মাসের প্রথম ১০ দিন এবং এ পর্যন্ত ফারাক্কায় প্রাপ্ত মোট গড় পানিপ্রবাহ বিশ্লেষণ করে প্রতীয়মান হয়, চলতি বছরের শুকনো মৌসুমে ফারাক্কায় যেকোনো ১০ দিনে পানির প্রবাহ ৫০ হাজার কিউসেকে নিচে নেমে যেতে পারে।

গঙ্গা চুক্তির অনুচ্ছেদ-২-এর উপ-অনুচ্ছেদ-৩-এ উল্লেখ রয়েছে, যদি কোনো অবস্থায় যেকোনো ১০ দিনে ফারাক্কায় পানির প্রবাহ ৫০ হাজার কিউসেকের নিচে নেমে যায়, তাহলে দুই দেশ অবিলম্বে পারস্পরিক আলোচনায় মিলিত হবে, যার ফলে জরুরিভাবে সমতা, ন্যায়ানুগতা এবং পারস্পরিক ক্ষতি না করার নীতির ভিত্তিতে প্রবাহের বণ্টনে সামঞ্জস্য বিধান করা হবে।

ভারতকে জরুরি ভিত্তিতে নোট ভারবাল পাঠানোর অনুরোধ করে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এ চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, ‘চলতি ২০১৬ সালের শুকনো মৌসুমে ফারাক্কায় মোট পানির প্রবাহ ৫০ হাজার কিউসেকের নিচে নেমে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখপূর্বক চুক্তির অনুচ্ছেদ ২ অনুযায়ী ৪০ বছরের গড় লভ্যতা মতো ১০ দিনওয়ারি ফারাক্কায় পানির প্রবাহ সংরক্ষণ করতে উজানের দেশ ভারতকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণের নিমিত্ত জরুরি ভিত্তিতে ভারতের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে নোট ভারবাল পাঠানোর জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’

১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর দিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী দেব গৌড়া ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ৩০ বছর মেয়াদী গঙ্গা পানি চুক্তি স্বাক্ষর করেন।-আইআরআইবি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button