জাতীয়

সড়কে বিদ্যুতের খুঁটি, অপসারণে গড়িমসি

টাঙ্গাইল সংবাদাদাতা: টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর-তারাকান্দি আঞ্চলিক মহাসড়কের ওপর বিদ্যুতের খুঁটি রেখেই কার্পেটিং করে সড়কের কাজ শেষ করা হয়েছে। খুঁটিগুলো এখন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিনিয়ত কুয়াশায় খুঁটিগুলোর সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুর্ঘটনা ঘটছে।

তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) কর্তৃপক্ষ বলছে, বিদ্যুতের খুঁটি সড়ক থেকে সরাতে সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকে বিল পরিশোধ করা হয়েছে।

এ ছাড়া ভূঞাপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে পৌরসভা পর্যন্ত সড়কের ওপরও খুঁটি রয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে খুঁটিগুলোতে লাল কাপড় বেঁধে রেখেছে স্থানীয়রা। এ ছাড়া প্রায় ২৯ কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের খুঁটি রয়েছে, যা সড়ক থেকে অপসারণ করা হয়নি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ভূঞাপুর তারাকান্দি সড়ক বর্ধিতকরণের কাজ শুরু করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। সড়কটির বর্ধিতকরণ কাজে সরানো হয়নি বিদ্যুতের খুঁটিগুলো। এতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কের মাঝখানে খুঁটি রেখেই কার্পেটিংয়ের কাজ শেষ করেছে। এতে ভূঞাপুর উপজেলার ধুবলিয়া মোড় থেকে বেতুয়া পলশিয়া পর্যন্ত সড়কের কয়েক স্থানে বিদ্যুতের খুঁটি রয়েছে সড়কের ওপর।

জানা গেছে, ভূঞাপুর-তারাকান্দি সড়ক বর্ধিতকরণের কাজ শুরু করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। প্রায় ২৯ কিলোমিটার সড়কের কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রানা বিল্ডার্স। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রানা বিল্ডার্সের কাছ থেকে সড়ক সম্প্রসারণের কাজ কিনে নিয়ে সাব-ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছে টাঙ্গাইলের দুজন এবং জামালপুরের একজন ঠিকাদার।

এ কাজের প্রথম থেকেই সড়ক সম্প্রসারণকাজ নিম্নমানের বলে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। সড়কের পাশ দিয়ে থাকা পল্লী বিদ্যুৎ ও পিডিবির খুঁটিগুলো না সরিয়ে সড়ক সম্প্রসারণের কাজ করছে সওজ বিভাগ। এতে ঝুঁকি নিয়ে সড়কে যানবাহন চলাচল করছে। ফলে প্রতিনিয়ত ঘন কুয়াশার কারণে বিদ্যুতের খুঁটিতে ধাক্কা লেগে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছে মানুষ। উপজেলার বেতুয়া থেকে তারাকান্দি পর্যন্ত সড়কের শতাধিক এমন বিদ্যুতের খুঁটি রয়েছে সড়কের ওপর। সড়কের কাজ শেষ হলেও সরানো হয়নি এসব খুঁটি।

ভূঞাপুর তারাকান্দি সড়কে কাজ করা সাব-ঠিকাদার সুমন ও জনি জানান, বিদ্যুতের খুঁটিগুলো সরাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিল পরিশোধ করেছে সওজ। তাদের বারবার খুঁটি সরাতে তাগাদা দেওয়া হচ্ছে, তারপরও বিদ্যুৎ অফিস কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। ফলে বাধ্য হয়েই সড়কের ওপর খুঁটি রেখে কাজ শেষ করতে হয়েছে।

ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ ভূঞাপুর অভিযোগ কেন্দ্রের ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম বলেন, সড়কের ওপর খুঁটিগুলো খুব দ্রুতই সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। এটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তবে ভূঞাপুর বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ (পিডিবি) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, খুঁটিগুলো অপসারণ করে কোথায় স্থাপন করা হবে, সেই জায়গা নির্ধারণ করে দিতে হবে সওজ কর্তৃপক্ষকে। কারণ, ব্যক্তিমালিকানাধীন জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটি স্থাপন করা যাবে না। সওজের জায়গাতেই খুঁটি স্থাপন করতে হবে। এ কারণে খুঁটি অপসারণ সম্ভব হচ্ছে না। এ ছাড়া পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি ওই কর্তৃপক্ষই অপসারণ করবে, পিডিবি নয়। দুটি আলাদা প্রতিষ্ঠান।

টাঙ্গাইল সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আলিউল হোসেন বলেন, সড়ক সম্প্রসারণের আগেই পিডিবিকে বিদ্যুতের খুঁটি অপাসরণের জন্য লিখিতভাবে জানানো হয়েছিল। পরবর্তীতে পিডিবি কর্তৃপক্ষ সার্ভে করে খুঁটি অপসারণের জন্য যে টাকা চেয়েছিল, তা পরিশোধ করা হয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে কিছু এলাকায় পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি রয়েছে, যেগুলো অপসারণ করা হচ্ছে না। বিষয়টি পিডিবি কর্তৃপক্ষ জানানো হয়েছে।

Back to top button