জাতীয়

মুক্তিযোদ্ধাদের যারা হত্যা করেছেন তাদেরও বিচার হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের মনের দাবি ছিল বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করা। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সেই দাবিটি বাস্তবায়ন করে দেখিয়ে দিয়েছেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করিয়েও দেখিয়ে দিয়েছেন। আমি আশা করি, মুক্তিযোদ্ধাদের কারণে-অকারণে যারা হত্যা করেছেন তাদের বিচারও বাংলার মাটিতে হবে। সেই বিচারটিও আমরা দেখতে পাব।

সোমবার (৭ নভেম্বর) ‘৭ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস প্রতিবাদ সভা’য় তিনি এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে এ সভার আয়োজন করে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর হত্যাকাণ্ডের শিকার শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারবর্গ।

প্রতিবাদ সভায় আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ২০ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। তাদের ধারণা ছিল, বঙ্গবন্ধুর রক্ত যার ধমনীতে প্রবাহিত হবে, তিনি ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন, বাংলাদেশকেও ঘুরে দাঁড়াতে কাজ করবেন। তাদের ধারণা যথার্থ ছিল। বঙ্গবন্ধু কন্যা আবার দাঁড় করিয়েছেন বাংলাদেশকে। তাকে ১৯ বার, আমার হিসাবে ২০ বার হত্যার প্রচেষ্টা হয়েছে। মহান রাব্বুল আলামিন তাকে রক্ষা করেছেন নিজের হাতে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে যে চার নেতা মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশ পরিচালনা করেছিলেন তাদেরও হত্যা করেছে তারা। ৭ নভেম্বর একটা বিপ্লবের নাম করে এই যে কতগুলো সন্তানের বাবাদের হত্যা করা হলো। তাদের ডেড বডি কোথায় ছিল, সেটিও তাদের পরিবার জানে না। আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছি। তাদের মৃত্যুর পর ডেড বডি তাদের আত্মীয়-স্বজনের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। এটাও ওই বিপ্লবের সময় হত্যার স্বীকার হওয়া সন্তানদের ভাগ্যে জোটেনি। তারা আজ এই হত্যার বিচার চাইছে। তারা হাইকোর্টে একটি আবেদন করেছে, সেটির রুল জারি হচ্ছে। আমরা আশা করি, তাদের বিচার তারা জীবিত থাকতেই দেখে যাবে।

তিনি বলেন, কথায় কথায় মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করা, তাদের একটা বিরূপ অবস্থানে দাঁড় করানো, এই ষড়যন্ত্র, এই রক্তের হোলি খেলা যারা করেছেন তাদের অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। এজন্য একটা তদন্ত কমিটি হচ্ছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী যখন সবকিছু নিয়তান্ত্রিকভাবে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে চলছেন, দেশকে যখন তিনি উন্নয়নের মহাসড়কে নিয়ে গিয়েছেন, যখন তিনি ন্যায়বিচার সুবিচার প্রতিষ্ঠা করছেন, তখনই তার বিরুদ্ধে আবারও ষড়যন্ত্র চলছে। বিচারপতিদের গাড়িতে তখনই অ্যাটাক দেখছি। যারা অন্যায়ভাবে আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের শহীদ করেছে তাদেরও বিচার হবে ইনশাআল্লাহ।

১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারবর্গের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হকের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর, মেজর জেনারেল (অব.) গোলাম হেলাল মোর্শেদ খান বীরবিক্রম, শহীদ কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা বীরবিক্রমের কন্যা ও সংসদ সদস্য নাহিদ ইজাহার খান, শহীদ মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বীরউত্তমের কন্যা মাহজাবিন খালেদ, আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. আমিনুল ইসলাম, সশস্ত্র বাহিনীতে হত্যাকাণ্ড নিয়ে গবেষক আনোয়ার কবির প্রমুখ।

Back to top button