আন্তর্জাতিক

পশ্চিমাদের ‘সিদ্ধান্তহীনতায়’ মরছে আমাদের জনগণ: ইউক্রেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাশিয়ার আগ্রাসন মোকাবিলায় পশ্চিমা মিত্র দেশগুলোর কাছ থেকে সামরিক সহায়তা পাচ্ছে ইউক্রেন। তবে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটি মিত্রদের কাছ থেকে শক্তিশালী ট্যাংকসহ আরও অত্যাধুনিক অস্ত্র চায়।

তবে নানা কারণে ইউক্রেনকে সেসব অস্ত্র দিতে দ্বিধায় রয়েছে পশ্চিমারা। আর এরপরই পশ্চিমাদের সিদ্ধান্তহীনতা ইউক্রেনীয় জনগণকে হত্যা করছে বলে অভিযোগ করেছে কিয়েভ। রোববার (২২ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘বিশ্বব্যাপী সিদ্ধান্তহীনতা’ ‘আমাদের আরও বেশি লোককে হত্যা করছে’ বলে অভিযোগ করেছে ইউক্রেন। রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কিয়েভের সামরিক সক্ষমতা জোরদার করতে ইউক্রেনকে লিওপার্ড ট্যাংক সরবরাহ করার বিষয়ে জার্মানি সিদ্ধান্তহীন থাকার মধ্যেই এই অভিযোগ তুলল দেশটি।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উপদেষ্টা মাইখাইলো পোডোলিয়াক শনিবার টুইটারে লিখেছেন, ‘(পশ্চিমাদের) আজকের সিদ্ধান্তহীনতা আমাদের আরও বেশি লোককে হত্যা করছে।’

তিনি বলেন, ‘প্রতিটি দিন বিলম্ব মানে আরও ইউক্রেনীয়দের মৃত্যু। তাই দ্রুত চিন্তা করুন।’

আল জাজিরা বলছে, প্রায় ৫০টি দেশ গত শুক্রবার ইউক্রেনকে বিলিয়ন বিলিয়ান ডলার মূল্যের সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করতে সম্মত হয়েছে। এর মধ্যে রাশিয়ান বাহিনীর আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করতে সাঁজোয়া যানসহ অন্যান্য যুদ্ধাস্ত্রও কিয়েভকে দেওয়ার কথা রয়েছে।

এছাড়া কিয়েভকে অত্যাধুনিক ট্যাংক সরবরাহ করার জন্য যথেষ্ট চাপের মধ্যে রয়েছে জার্মানি। তবে বৈঠকের পরে জার্মান প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস বলেছেন, ‘লিওপার্ড ট্যাংকের বিষয়ে আমরা এখনও বলতে পারি না কখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে এবং সিদ্ধান্ত কী হবে।’

সংবাদমাধ্যম বলছে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জার্মানির তৈরি লিওপার্ড ২ ট্যাংক চায় ইউক্রেন। বেশ কয়েকটি মিত্র ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির কথার সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলেছে, জার্মান এই ট্যাংক রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের লড়াইয়ের জন্য অপরিহার্য।

মূলত গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন মঞ্চে ট্যাংক দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে ইউক্রেন। নির্দিষ্ট করে বেশ কিছু জার্মান ট্যাংক চেয়েছে দেশটি। ইউক্রেনের দাবি শোনার পর পোল্যান্ড জানিয়েছিল, তাদের কাছে ওই জার্মান ট্যাংক আছে। জার্মানি সবুজ সংকেত দিলেই তারা ওই ট্যাংক ইউক্রেনের হাতে তুলে দেবে।

কিন্তু জার্মান চ্যান্সেলর জানিয়েছিলেন, সব দিক বিবেচনা করে, সকলের সঙ্গে আলোচনা করে তবেই সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছেও অ্যাব্রাম ট্যাংক চেয়েছিল ইউক্রেন। যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য, এই ধরনের অত্যাধুনিক ট্যাংক এখন ইউক্রেনের পক্ষে ব্যবহার করা কঠিন। এই ধরনের ট্যাংক চালানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। ইউক্রেনের সেনাকে এখন সেই প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্ভব নয়। সে কারণেই তাদের ট্যাংক দেওয়া হচ্ছে না।

অন্যদিকে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস জানিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে অ্যাব্রাম ট্যাংক দিলে তবেই জার্মানি তাদের লিওপার্ড ২ ট্যাংক ইউক্রেনের হাতে তুলে দেবে। লিওপার্ড ২ ট্যাংকও অত্যাধুনিক। যা চালানোর জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণের প্রয়োজন।

বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষণাতেই স্পষ্ট, ইউক্রেনকে এখন ট্যাংক দেওয়া হবে না। ফলে জার্মানিও সেই একই পথে হাঁটছে বলে মনে করা হচ্ছে।

Back to top button