কৃষি

বাংলাদেশ বিশ্বে চতুর্থ চাল উৎপাদনকারী দেশ

Image result for চাল
ঢাকা, ২ মে : বাংলাদেশ এখন বিশ্বের চতুর্থ চাল উৎপাদনকারী দেশ। বিশ্বে চাল উৎপাদনে চীন, ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার পরেই এখন বাংলাদেশের অবস্থান।

খাদ্য মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক সম্প্রতি থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত রাইস কনভেনশনে দেয়া বক্তব্যে এই তথ্য প্রকাশ করেন। ‘আশিয়ান এ্যাজ এ গ্লোবাল রাইস হাব’ শীর্ষক এ কনভেনশনে বিশ্বের ৪০টি দেশের প্রতিনিধি ও বিশেষজ্ঞগণ যোগ দেন।

থাইল্যান্ডের চিয়াংমাইয়ে অনুষ্ঠিত তিন দিনের এই কনভেনশনে প্রায় পাঁচ শ’ প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি হয়ে। গত ২৬ থেকে ২৮ মে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। খাদ্যমন্ত্রী ড. রাজ্জাক বাংলাদেশের পক্ষে একটি প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন।

বিশ্বের চাল উৎপাদন পরিস্থিতি এখানে পর্যলোচনা ও আগামিতে কীভাবে উৎপাদন বাড়ানো যায় তার উপায় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কনভেনশনে প্রকাশিত তথ্যে জানানো হয় , বিশ্বে সবেচেয়ে বেশি চাল উৎপাদিত হয় চীনে। বিশ্বের জনবহুল দেশ চীনে বার্ষিক মোট চাল উৎপাদনের পরিমাণ ১৪ কোটি ৩০ লাখ টন।

এর পরেই চাল উৎপাদনে ভারতের অবস্থান। ভারতে বার্ষিক চাল উৎপাদনের পরিমাণ নয় কোটি ৯০ লাখ টন। চাল উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে এশিয়ার অপর জনবহুল দেশ ইন্দোনেশিয়া। এ দেশের চাল উৎপাদনের পরিমাণ ৩ কোটি ৬৯ লাখ টন। আর এর পরেই এশিয়ার আরেক জনবহুল দেশ বাংলাদেশের অবস্থান।

বর্তমানে বাংলাদেশে বার্ষিক চাল উৎপাদনের পরিমাণ ৩ কোটি ৩৮ লাখ টন। চাল উৎপাদনকারী শীর্ষ দশ দেশের তালিকায় আরও রয়েছে যথাক্রমে ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, ফিলিপিন্স, মিয়ানমার, ব্রাজিল ও জাপান।এসব দেশও জনবহুল দেশ হিসেবে পরিচিত। এসব দেশ অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করে চাল রপ্তানি করে।

চাল উৎপাদন বৃদ্ধি সত্ত্বেও খাদ্য নিরাপত্তায় বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে খাদ্যমন্ত্রী কনভেনশনে বলেন, বাংলাদেশে কৃষি জমি কমে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তন খাদ্য উৎপাদনের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলছে।

এছাড়া জনসংখ্যা বৃদ্ধি, বৈশ্বিক খাদ্য সরবরাহে অনিশ্চয়তা ও অস্থির মূল্য পরিস্থিতি, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি এবং প্রবাসী আয়ের নিম্নমুখী প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের সামনে খাদ্য নিরাপত্তায় বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এজন্য খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে সবাই তৎপর। বাংলাদেশও খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে চেষ্টা করছে।

খাদ্যমন্ত্রী আরও বলেন, চালের উৎপাদন বৃদ্ধির কারণে বাংলাদেশের চালের আমদানি নির্ভরতা ব্যাপক হ্রাস পেয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশে চাল উৎপাদনের অস্থিতিশীলতাও বেশ কমে গেছে। অর্থাৎ একটি ধারাবাহিকতা বজায় রেখে দেশে চাল উৎপাদিত হচ্ছে। ফলে গত তিন বছর ধরে বাংলাদেশ কোন চাল আমদানি করছে না।

চাল উৎপাদন বৃদ্ধি প্রসঙ্গে খাদ্য মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের এক কোটি ৩০ লাখ কৃষক পরিবার চাল উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত। প্রতিবছর এক কোটি ১৭ লাখ হেক্টর জমিতে চাল উৎপন্ন হয়।

এক জমিতে একাধিকবার ফসল উৎপাদন করা হয়। কৃষি খাতের জিডিপির ২৬ শতাংশই আসে চাল থেকে। তিনি বলেন, গত এক দশক ধরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের চেয়ে বেশি পরিমাণে দেশে চাল উৎপাদিত হচ্ছে।

চালের এ প্রবৃদ্ধির ওপর ভিত্তি করে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সাড়ে পাঁচ শতাংশ থেকে ছয় দশমিক সাত শতাংশে উঠে গেছে। বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়সম্পুর্ণ বলে খাদ্যমন্ত্রী সম্মেলনে দাবি করেন ও তথ্য প্রমাণাদি উপস্থাপন করেন

Back to top button