প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষর জাল করে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী ভর্তির সুপারিশ, মহিলা রিমান্ডে!

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বাক্ষর জাল করে রাজধানীর শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক শ্রেণীতে শিক্ষার্থী ভর্তির সুপারিশের অভিযোগে এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ। রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৩টায় মোছা. হাসিনা বেগম (৩৮) নামের ওই নারীকে গ্রেফতার করা হয়।
শেরে বাংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জি জি বিশ্বাস বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রবিবার দুপুরের দিকে প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশ নিয়ে ওই নারী কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছাত্রীকে ভর্তি করাতে আসেন। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের জানালে আমরা তাকে গ্রেফতার করি।’
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী কখনও এমন সুপারিশ করবেন না সন্দেহ হওয়ায় মোছা. হাসিনা বেগমকে জেরা করে পুলিশকে খবর দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরপর উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুল মালেক ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে জেরা করেন। তিনি সঠিক কোনও উত্তর দিতে পারেননি।
শেরে বাংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরও বলেন, ‘আটককৃত নারী নিজের নাম মোছা. হাসিনা বেগম বলে জানিয়েছেন। তাকে এখন জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আমরা তদন্ত শুরু করেছি।’
বাংলা ট্রিবিউনের শেকৃবি প্রতিনিধিকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ জানান, মোছা. হাছিনা বেগম গত বছরের ৭ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রটোকল অফিসার মনজিলা ফারুকের সুপারিশপত্র নিয়ে আসেন। বিষয়টি খুবই রহস্যজনক মনে হওয়ায় বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নেওয়া হয়। রবিবার হাছিনা বেগম নিয়ে আসেন প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশ। এটাকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভুয়া সুপারিশপত্র অনুমান করে। প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষর দেখে তারা নিশ্চিত হন এটি পুরোপুরি ভুয়া। কারণ সুপারিশপত্রে বেশকিছু ভুল রয়েছে।
সুপারিশপত্র উল্লেখ করা হয়, ‘ফাহিমা জাহান দৃষ্টি ভর্তি পরীক্ষার রোল নং ৩৯০৪৭, পিতা আব্দুল্লাহ আল মামুন ও মাতা রেবেকা সুলতানা আমার (মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রটোকল অফিসার মনজিলা ফারুক) সুপরিচিত এবং নিকটআত্নীয়। তিনি যথেষ্ট মেধাবী ও পরিশ্রমী। তিনি যাহাতে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষ কোটায় ভর্তি হতে পারে এবং দেশ ও জাতির কল্যাণে মঙ্গল বয়ে আনতে পারে, তাহার জন্য আদেশ প্রদান করা হইল।’
মোছা. হাছিনা বেগম বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, শেখর নামে তার পরিচিত একজন মনজিলা ফারুক স্বাক্ষরিত সুপারিশপত্র এনে দিয়েছিল। তার কাছ থেকে মোবাইল নম্বর নিয়ে শেখরের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও বন্ধ পাওয়া যায়।