খ্রিস্টান মিলিশিয়ারা সাধারণ মানুষের সম্পত্তি দখল করছে এবং গবাদিপশু নিয়ে যাচ্ছে বলেও জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
দেশটির সেনাবাহিনী তাদের মিত্র মিলিশিয়া বাহিনীর সঙ্গে ‘যা ইচ্ছা করো এবং যা ইচ্ছা নিয়ে নাও’ চুক্তির কারণে গেল বছর দেশটির একটি রাজ্যেই অন্ততপক্ষে ১৩শ’ মুসলিম নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মিলিশিয়ার পাশাপাশি সেনাবাহিনীও বেসামরিক মুসলিম নাগরিক হত্যা ও ধর্ষণের মত অপরাধে লিপ্ত।
দক্ষিণ সুদানের খ্রিস্টান প্রেসিডেন্ট সালভা কির। ছবি: রয়টার্স
দক্ষিণ সুদানের সরকার জাতিসংঘের এই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে। অবশ্য ‘অভিযোগের মাত্রা ব্যাপক’ হওয়ায় সরকার ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে বলে প্রেসিডেন্ট সালভা কিরের মুখপাত্র আতেং ওয়েক আতেং জানিয়েছে।সে বলে, সরকারের হয়ে লড়ছে এমন কোনো মিলিশিয়া বাহিনী নেই।
ওই প্রতিবেদনে সরকারবিরোধী উপাদান রয়েছে অভিযোগ করে আতেং বলে, “দক্ষিণ সুদানি সেনারা কেবল উর্দি পরা বিদ্রোহীদের (মুসলমানদের) বিরুদ্ধেই লড়ছে, বেসামরিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে না।”
অন্য এক প্রতিবেদনে দক্ষিণ সুদানের সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে ৬০ জনকে ‘শ্বাসরোধে’ হত্যার অভিযোগ এনেছে মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
গেল বছর অক্টোবরে একটি জাহাজের কন্টেইনারের ভেতরে ওই ৬০ জনকে মেরে ফেলে তাদের লাশ একটি মাঠের মধ্যে গুম করে ফেলা হয় বলে সংগঠনটির অভিযোগ।
২০১৩ সালে প্রেসিডেন্ট কির তার ডেপুটি রিক মাচারকে ‘অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা’র অভিযোগে বরখাস্ত করার পর দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এতে অন্তত ১০ হাজার নিহত এবং ২০ লাখ উদ্বাস্তু হয়েছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এদের শতকরা ৯৫ ভাগই ছিল সুন্নি মুসলমান।
গৃহযুদ্ধের কারণে ‘দেশটিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে’ এমন হুমকি দিয়ে গেল বছর দু’পক্ষের মধ্যে একটি শান্তিচুক্তি করে জাতিসংঘ। তবে চুক্তির পরও গৃহযুদ্ধ থামে নি, দেখা মিলছে না অন্তবর্তী কিংবা জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠনে কোনো তৎপরতাও।
দক্ষিণ সুদানের অর্থনীতি বর্তমানে অনেকাংশে তেলের ওপর নির্ভরশীল। অবিভক্ত সুদানের ৭৫ শতাংশ তেলের মজুদই দক্ষিণ সুদানে রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। এ ছাড়া দেশটি আন্তর্জাতিক বাজারে কাঠ রপ্তানি করে থাকে।
সেখানে নিরবে চলছে মুসলিম জেনোসাইড, ধর্ষণ আর মুসলমানদের সম্পত্তির লুটপাট। নির্বিকার বিশ্ব বিবেক, নির্বিকার মানবতা।